Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হিজাব না খোলায় কানাডায় ২ মুসলিম শিক্ষিকা বরখাস্ত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৬:১৭ পিএম

কানাডার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মন্ট্রিলের এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুই মুসলিম শিক্ষিকাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কর্মস্থলে হিজাব ছাড়া কাজ করতে রাজি না হওয়ার গত সোমবার তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়। সরকারী কর্মচারীদের ধর্মীয় প্রতীক পরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সম্প্রতি দেশটিতে একটি বিতর্কিত আইন চালু হয়েছে। সেই আইন অনুযায়ী চাকরি হারালেন ওই দুই শিক্ষিকা।

ধর্মীয় প্রতীক নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবটি গত জুনে কানাডার কুইবেকে প্রদেশে প্রথম প্রবর্তন করা হয়। সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, নার্স, বাসচালক, আইনজীবী এবং অন্যান্য লোক যারা সাধারণ মানুষের সাথে কাজ করে তাদের জন্য কর্মরত অবস্থায় ধর্মীয় প্রতীক পরা নিষিদ্ধ করা করেছিল। এর মধ্যে শিখ পাগড়ী, খ্রিস্টানদের প্রতিক ও ইহুদি কিপাহও আছে। তবে এই আইন মূলত প্রদেশটিতে বসবাসরত প্রচুর মুসলিম নারী যারা নিয়মিত মাধায় হিজাব পরিধান করে, তাদের উদ্দেশ্যেই প্রণয়ন করা হয়েছিল।

নগরীর পেশাদার শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান ‘ট্রেড ইউনিয়ন অ্যালায়েন্স ডেস প্রফেসর এট প্রফেসার্স ডি মন্ট্রিয়াল’র চেয়ারম্যান ক্যাথরিন বউভাইস-সেন্ট-পিয়ের এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই মুসলিম শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে, তাদেরকে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলেছিল, হিজাব ছাড়া না আসলে তাদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেয়া হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে পড়েছি। আমাদের কিছু শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, তাদের বিশ্বাস সম্পর্কে খুব ব্যক্তিগত প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। নতুন আইন এই ধরণের প্রশ্ন ও আচরণের পথ উন্মুক্ত করেছে।’

সমালোচিত এই ঘটনার বিষয়ে কুইবেক প্রদেশের শিক্ষামন্ত্রী জিন-ফ্রানসোয়া রবার্জ বলেন, ‘এটি স্বাভাবিক বিষয়। নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি এখন একটি আইনে পরিণত হয়েছে এবং তারা এটি কার্যকর করতে যাচ্ছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিটি স্কুল বোর্ডের আইন প্রয়োগের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যারা আইন মেনে চলেন না তারা শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন। যারা দণ্ডের মুখোমুখি হতে চান না তাদের জন্য বিকল্প হচ্ছে হিজাব ছাড়া কাজ করা।’

বিল ২১ হিসাবে পরিচিত বিতর্কিত এই আইনটি প্রচণ্ড বিতর্কের সৃষ্টি করেছে এবং হাজার হাজার বিক্ষোভকারী মন্ট্রিয়ালে সম্প্রতি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গণপদযাত্রায় অংশ নিয়েছে। পদযাত্রায় অনেকেই ‘মহিলারা কি পোশাক পরবে সেই সিদ্ধান্ত অন্য কেউ নিতে পারে না’ ও ‘আমার মাথার উপরে কি আছে তার থেকে মাথার ভেতরে কি আছে সেটি গুরুত্বপূর্ণ’ লেখা প্লাকার্ড বহন করছিলেন।

এর আগেই টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক নেলসন ওয়াইজম্যান বলেছিলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনটি অন্যান্য গোষ্ঠীর চেয়ে মুসলমানদেরকে বেশি প্রভাবিত করবে কারণ তারা সবচেয়ে দ্রুত বর্ধমান ধর্মীয় গোষ্ঠী।’ উল্লেখ্য, কুইবেকের ৮৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে প্রায় ৩ শতাংশ মুসলমান।

এই বিলের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই প্রতিবাদ করে আসা সংগঠন ‘জাতীয় কাউন্সিল অব মুসলিমস অব কানাডা’ (এনসিসিএম) আইনটি বাতিল করার জন্য কুইবেক সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে। সেখানে বিচার প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রয়েছে। সূত্র: ডেইলি সাবাহ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হিজাব

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ