নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এক বছরে দুটি বিপিএল- সম্ভব অসম্ভবের পক্ষে বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গভর্নিং বডি ও ফ্র্যাঞ্চাইজি। আর তাতে অনিশ্চয়তার ঘেরাটোপে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই টি-২০ টুর্নামেন্ট। তবে সেই শঙ্কার মেঘ এক ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। নিশ্চিত করেছেন, বিপিএল এ বছর নির্ধারিত সময়েই হবে। তবে অন্যভাবে। গতকাল দুপুরে পাপন জানিয়েছেন, এ বছর টুর্নামেন্টটি ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক হচ্ছে না। আর টুর্নামেন্টের নাম হবে ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএল’।
বিসিবির সঙ্গে বর্তমান ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর চার বছরের চুক্তি শেষ হয়েছে। নতুন করে চুক্তির আগে গত মাসে ধাপে ধাপে প্রতিটি দলের স্বত্বাধিকারীদের সঙ্গে বসে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিজেদের মতামত জানিয়েছে বিসিবিকে। সবার মতামত জেনে বিসিবি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ বছর অন্তত ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজন সম্ভব নয়। নাজমুল বলছেন, ‘বিপিএলের প্রথম পর্ব শেষ। নতুন চুক্তি করতে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে বসেছিলাম। কয়েকটা ফ্র্যাঞ্চাইজির বেশ কিছু দাবি-দাওয়া আছে। ওই দাবিগুলো আমাদের মূল কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি দাবি করছে, এক বছরে দু’টি বিপিএল তারা চায় না। খেলবে না সেটি অবশ্য বলেনি। বলেছে ওদের ওপর চাপ বেশি পড়ে যাবে। সবকিছু চিন্তা করে ঠিক করেছি এবারের বিপিএল আমরাই (বিসিবি) চালাব। টুর্নামেন্টটা আমরা ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক করছি না।’
সব দলের মালিক যদি বিসিবিই হয় তবে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক, থাকা-খাওয়া, যাতায়াত খরচ কীভাবে দেওয়া হবে, দলের নাম কেমন হবে, কোচিং স্টাফ কীভাবে ঠিক হবে, সবকিছুর বিস্তারিত ধারণা দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি, ‘এবারের বিপিএলটা আমরা বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করব। টুর্নামেন্ট তাঁর নামেই হবে। সব দলই ঠিক থাকবে শুধু ম্যানেজমেন্টের অংশ বিসিবি দেখবে। খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক, থাকা-খাওয়া, যাতায়াত সবই বিসিবি তত্ত¡াবধান করবে। এতে আশা করি সবাই খুশি হবে। অনেকটা বিগ ব্যাশের মতো।’
এবার বিপিএল নিয়ে হইচই শুরুটা হয়েছে রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে ঢাকা ডায়নামাইটস ছেড়ে যাওয়া সাকিব আল হাসানের চুক্তির পরই। যদি বিসিবি সভাপতি দাবি করছেন, শুধু সাকিবের দলবদলের কারণে এত কিছু হচ্ছে, তা নয়, ‘শুধু সাকিব কেন, নতুন চুক্তির পরও তামিম, মুশফিকরাও তো অন্য দলে খেলতে পারছে না!’ তবে খানিক পরে তাঁরা কথায় বোঝা গেল, সাকিবের এভাবে দলবদল তাঁরা মানতে পারেননি, ‘খেলোয়াড় ধরে রাখার নিয়ম আছে। আরেক দল থেকে এভাবে খেলোয়াড় নিয়ে নিতে পারেন না। কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে এই নিয়ম নেই। এটা সবাই জানে। বিশেষ করে যারা বাইরে খেলতে যায়। সাকিবেরই তো বেশি জানার কথা। সাকিবকে বলেন না বলতে যে এ বছর হায়দরাবাদে না চেন্নাইয়ে খেলব। বলা সম্ভব না। শুধু বাংলাদেশেই তারা এমনটা করতে চায়। এগুলো অনেক হয়েছে। আর হতে পারে না। এবার আমরা নিয়ম করব আইপিএলের আদলে।’
বিসিবি সভাপতির দাবি, তাঁর কাছে অন্তত ২০ খেলোয়াড় এসেছেন যাঁরা নিজেদের দল নিজেরাই বাছাই করতে চান। নাজমুল জানালেন, এভাবে দলবদল চলবে না। সব খেলোয়াড়কে নিতে হবে নিলাম থেকে, ‘একজনকে দেখে দেখে বাকিরাও শুরু করছে। সব বন্ধ। সবাই নিলামে আসবে। নিলাম থেকে নেবে। নিলামের পর রিটেনশন থাকবে। রিটেনশন থেকে খেলোয়াড় অদলবদল করতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।’
আইপিএলের আদলে নিয়ম করার কথা বলছেন বিসিবি সভাপতি। কিন্তু আইপিএলে যেভাবে লাভের ভাগ দেওয়া হয় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো, সেভাবে বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে লভ্যাংশ ভাগাভাগি করতে ঘোর আপত্তি নাজমুল হাসানের, ‘লাভের ভাগ দেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের ৮০ কোটি টাকা দেওয়া হোক, ৪০ কোটি টাকা দিয়ে দেব। ৮ কোটি টাকা নেওয়া হতো ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কাছ থেকে। আমরা ১ কোটি দিয়েছি। ৭ কোটি তো ছেড়েই দিয়েছি। আর কী চায় ওরা? আমরা চাই বিপিএলে যারা আসবে দেশের খেলার উন্নয়নে, খেলোয়াড় উন্নয়নে আসবে। ব্যবসা করা জন্য নয়। এখানে মুনাফা হওয়ার সুযোগ নেই।’
বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টেই মুনাফার উদ্দেশ্যেই দল গড়ে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো। যদি ‘ব্যবসা’ না করার সুযোগই থাকে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো কেন বিনিয়োগ করবে বিপিএলে? সামনে যদি বড় বড় বিনিয়োগকারীরা বিপিএলে টাকা ‘লগ্নি’ করতে না আসে, টুর্নামেন্ট গভীর সংকটে পড়ে গেল না? বিসিবি সভাপতি আত্মবিশ্বাসী, বিপিএলের ভবিষ্যৎ মোটেও অন্ধকার নয়, ‘অন্ধকার কেন হবে? আমরা চালাব। এখানে অন্ধকারের কিছু দেখছি না। (ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর) লোকসানই যদি হয় তাহলে ৮০ লাখ টাকার খেলোয়াড়কে ৪ কোটি টাকা দিয়ে নিত না! লোকসান হলে এত দাম নিয়ে কেউ নিত না। আরও লাভ করতে চায় ওরা।’
ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক না হলেও কেউ যদি কোনো দলকে স্পনসর করতে চায়, সে পথ খোলা থাকছে। দলগুলোর নাম আপাতত আগের মতোই থাকছে। আগের মতো নিলাম হবে, টুর্নামেন্ট নির্ধারিত সময়েই শুরু হবে। কোচিং স্টাফ সরবরাহ করবে বিসিবি। তবে কোনো স্পনসর যদি সরাসরি চুক্তি করে বিদেশি খেলোয়াড় আনতে চায় সেটিতে বাধা থাকবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।