চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
পোশাক-পরিচ্ছদ মানুষের লজ্জাই নিবারন করেন। পোশাকে মানুষের রুচী, ব্যক্তিত্ব, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সৌর্ন্দয্য, আদব ও তাকওয়ার প্রকাশ পায়। সুন্নতী পোশাক পরিধানের মাধ্যমে পরিবার ও বংশ মর্যাদা ফুটে উঠে। পোশাক মানুষের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করে। এছাড়া পোশাক পরিচ্ছদ আল্লাহতায়ালার দান। আল্লাহর ভয় থেকেই মূলত; পোশাক পরিদান করতে হয়। পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান করার ক্ষেত্রে বেশভ‚ষার পাশাপাশি তাকওয়ার বিষয়টি মাথায় থাকতে হবে। কারণ যে কাজে আল্লাহর ভয় থাকবে না। সেখানে শয়তানের ধোঁকায় পতিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই তাকওয়া অর্জনের উদ্দেশ্যে পোশাক পরিধান করতে হবে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে বনি আদম! তোমাদের লজ্জা ঢাকার ও বেশভ‚ষার জন্য আমি তোমাদেরকে পোশাক দিয়েছি এবং তাকওয়ার পোশাকই সর্বোকৃষ্ট।’ (সূরা আরাফ:২৬)।
ঘরে বাহিরে সুন্নতী পোশাক পরিধানের মাধ্যমে নারী-পুরূষ উভয় নিরাপদ। সমাজের বখাটেরা সুন্নতী পোশাক পরিধানকারী নারীকে উত্যক্ত করতে পারে না। সুন্নতী পোশাকে নারীর পর্দা ও সতিত্ব উভয় বজায় থাকে। এছাড়া যে বা যারা শালিনতার সাথে পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান করবে, সমাজে তারা অন্যদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি নিরাপদ থাকবে। কাটছাট, ছিড়েফাট, টাইটফিট, কুরুচীপূর্ণ পোশাক ইসলাম সমর্থন করে না। কারণ এসব কুরুচীপূর্ণ পোশাক পরিধান করার ফলে সমাজে বেহায়াপনা ও বেল্লেপনা ছড়িয়ে পড়ে। সমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটে। যিনা, ব্যাভিচার, অশ্লীলতা, ধর্ষন ও পরকীয়ার ঘটনা আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণ, কন্যাগণ ও মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে, ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না।’ (সূরা আহযাব:৫৯)।
নারী পুরুষ উভয়কে সুন্নতী পোশাক পরিধান করতে হবে। কারণ বেহায়াপনার পোশাক পরিধানের জন্য নারী পুরুষ উভয়কে গোনাহগার হতে হবে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘ হে নবী! আপনি মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানসমূহকে হেফাযত করে; ইহাই তাদের জন্য উত্তম পন্থা।’ (সূরা আহযাব:৩০)। একইভাবে ‘ আপনি মুমিন নারীদেরও বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান সমূহের হেফাযত করে, তারা যেন তাদের সৌর্ন্দয্য প্রদর্শন করে না বেড়ায়।’ (সূরা আহযাব:৩১)।
সুন্দর, মার্জিত ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করার জন্য ইসলাম অনুমতি দিয়েছে। আবার গোনাহের কাজ হয়, অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটে, এ জাতীয় পোশাক পরিধান করা থেকে বিরত থাকতে বলেছে। যেমনটি নামাজের সময় সুন্দর পোশাক পরিধান করার জন্য কোরআনে তাগিদ দেয়া হয়েছে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে বনী আদম! তোমরা প্রত্যেকে সালাতের সময় সুন্দর পোশাক পরিধান করবেন।’ (সূরা আরাফ:৩১)। সুতরাং আমরা সুন্দর পোশাক অবশ্যই পরিধান করব। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, এক্ষেত্রে পোশাকের আদব ও তাকওয়া যেন নষ্ট না হয়। আল্লাহ আমাদের পোশাকের আদব ও সৌর্ন্দয্য বজায় রাখার তৌফিক দান করুক। আমীন। ( লেখক: ইসলামিক চিন্তাবিদ ও গবেষক)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।