Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সন্ন্যাসী থেকে কোটিপতি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

পরপর বেশ কিছু দুঃখজনক ঘটনার জন্য অ্যান্ডি পাডিকোম্বের জীবন সম্পূর্ণ বদলে যায়। তার বয়স যখন ২২ তখন লন্ডনের একটি পানশালার বাইরে বন্ধুদের নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। সে সময় এক মদ্যপ গাড়িচালক তার বন্ধুদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিলে তার দুই বন্ধু মারা যান। এই ঘটনার কয়েক মাস পরেই তার সৎবোন সাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যায়। তার কিছুদিন পরেই অপারেশনের সময় মারা যায় তার প্রেমিকা। সে সময় অ্যান্ডি পড়াশোনা করছিলেন। কিন্তু টানা কয়েকটি ঘটনার শোক সইতে না পেরে পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি।

জীবন পুরোপুরি পরিবর্তন করার জন্য তিনি হিমালয়ে গিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষু হওয়ার দীক্ষা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরের ১০ বছর ভিক্ষু হিসেবে জীবনযাপন করেন অ্যান্ডি। ভ্রমণ করেন এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে। কখনও কখনও দিনে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্তও ধ্যান করতেন তিনি। ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যে ফিরে এসে ধ্যান বা মেডিটেশনে সহায়তা করার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেন তিনি। কিন্তু যুক্তরাজ্যে সে সময় মেডিটেশনের তেমন একটা চল ছিল না। লন্ডনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে মেডিটেশনের প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করেন অ্যান্ডি, যেখানে অতিরিক্ত কাজের চাপে থাকা পেশাজীবীদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের ক্ষেত্রে সাহায্য করার চেষ্টা করতেন তিনি।

বর্তমানে তিনি এবং তার সহ-প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড পিয়েরসন জনপ্রিয় চিকিৎসা বিষয়ক অ্যাপ হেডস্পেস পরিচালনা করেন। এটা বিশ্বজুড়ে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি বার ডাউনলোড করা হয়েছে এবং যাদের বার্ষিক আয় ১০ কোটি ডলারেরও বেশি বলে ধারণা করা হয়। ধ্যানের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করার পাশাপাশি দলগতভাবে মেডিটেশনের সেশনও পরিচালনা করেন তারা।

ব্যবসার শুরুতেই ভাগ্য সহায় হয় তাদের। যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকা এক শনিবারে তাদের প্রতিটি কপির সাথে হেডস্পেসের একটি করে পুস্তিকা সংযোজন করে। ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারলাইন্সও হেডস্পেসের মেডিটেশনের অ্যাপটি তাদের প্লেনের বিনোদন বিভাগে যুক্ত করে। যার ফলে অ্যাপটি দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় এবং ডাউনলোডের হার বেড়ে যায়। বর্তমানে এই অ্যাপ ব্যবহার করতে মাসে প্রায় ১০ পাউন্ড অর্থ ব্যয় করতে হয়। অ্যাপে নির্দেশনাগুলো দেয়া হয়েছে অ্যান্ডির কণ্ঠ ব্যবহার করে। ২০১৩ সালে রিচার্ড ও অ্যান্ডি ব্যবসার কেন্দ্র সরিয়ে লন্ডন থেকে লস অ্যাঞ্জেলসে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তখন থেকে হেডস্পেসের সদর দপ্তর লস অ্যাঞ্জেলসে রয়েছে। হেডস্পেস বর্তমানে শুধু একটি অ্যাপ নয়। তাদের তিনশোর বেশি ব্যবসায়িক ক্লায়েন্ট। এসব প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও কর্মীদের ধ্যান করতে সাহায্য করেন তারা। হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ডসহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের সাথে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন গবেষণায় সহায়তা করছে তারা। সূত্র : বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সন্ন্যাসী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ