Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ

ধামরাইয়ে প্রতিবন্ধী কিশোরীসহ শিকার আরো ৪ : আটক ৩

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

বরিশালে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারন করা হয়েছে। পরে ওই ভিডিও চিত্র ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে টানা একবছর ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধামরাইয়ে প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এছাড়া মাদারীপুরে ছাত্রী ও মধুপুরে শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামিসহ বিভিন্ন স্থানে ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

বরিশাল : পরিচয়ের সূত্রধরে কৌশলে গৃহবধূকে আটক করে ধর্ষণ করে গোপনে ভিডিও ধারণ করেছে এক লম্পট ব্যবসায়ী। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে টানা একবছর বিয়ের প্রলোভনে শারিরিক সম্পর্ক করা হয়। অতঃপর বিয়ে করতে অস্বীকার করায় ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে গত শুক্রবার বিকেলে বিয়ের দাবিতে অবস্থান দেয় ওই গৃহবধূ। একপর্যায়ে ঘরে তালা লাগিয়ে কৌশলে সটকে পরে ব্যবসায়ী মাইনুল ইসলামের পরিবার। অবশেষে উপায়ান্তর না পেয়ে ওইদিন রাতেই থানার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন দুই সন্তানের জননী ওই গৃহবধূ। ঘটনাটি জেলার উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর বন্দর এলাকার।

ওই গৃহবধূ জানান, গত এক বছর পূর্বে শিকারপুর বন্দরের ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী উপজেলার পশ্চিম জয়শ্রী গ্রামের মৃত আলমগীর সরদারের পুত্র মাইনুল ইসলামের সাথে তার পরিচয়ের সূত্রধরে কৌশলে বন্দরের রুপসী বাংলা নামক তরিকুল ইসলামের শিওর ক্যাশের দোকানে নিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়। যা গোপনে ভিডিও ধারন করা হয়েছে। ওই গৃহবধূ আরও জানান, ধর্ষণের বিষয়টি তার স্বামীকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে মাইনুল তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখায়। পরে ওই ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে প্রায়ই তার সাথে শারিরিক সম্পর্ক করা হয়। একপর্যায়ে তিনি (গৃহবধূ) অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরলে কৌশলে মাইনুল ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত ঘটায়।

বিষয়টি ওই গৃহবধূর স্বামী জানলে তাদের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই গৃহবধূ বিয়ের জন্য মাইনুলকে চাপ প্রয়োগ করলে সে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পরলে স্থানীয় একটি মহল বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়।

উপায়ান্তর না পেয়ে শুক্রবার বিকেলে ওই গৃহবধূ বিয়ের দাবিতে মাইনুলের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেয়। এসময় কৌশলে ঘরে তালা লাগিয়ে মাইনুলের পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপন করে। উজিরপুর মডেল থানার ওসি শিশির কুমার পাল জানান, এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ধামরাই (ঢাকা) : ঢাকার ধামরাইয়ের চৌহাট ইউনিয়নের ঝিকুটিয়া এলাকায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে জমির খান (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে গতকাল শনিবার ভোররাতে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত জমির খান ধামরাই উপজেলার চৌহাট ইউনিয়নের ধলুট গ্রামের মৃত মোবারক খানের ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চৌহাট ইউনিয়নের ঝিকুটিয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে বাড়ির বাইরে রাস্তায় বের হয় ঐ কিশোরী। তাকে ফুসলিয়ে হাত ধরে পাশের লেবু বাগানের ভেতর টেনে নিয়ে যায় মো. জমির খান। এরপর তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। প্রতিবন্ধী মেয়ে বাড়িতে ফিরে এসে মা ও ভাবির কাছে সবকিছু খুলে বলে। পরের দিন গত শুক্রবার সকালে জমিরের বিরুদ্ধে মেয়েটিন বাবা শাহিন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।

মাদারীপুর : মাদারীপুর সদর উপজেলার হাজরাপুর গ্রামে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক সাকিব বেপারী (১৮) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার দুপুরে ধর্ষককে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ আদালত সাকিবকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। ঐ ছাত্রী মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার উত্তর হাজরাপুর গ্রামে মাদরাসার সপ্তম শ্রেণিতে পড়া এক ছাত্রীকে পাশের পচ্চিম হাজরাপুর গ্রামের রজব বেপারীর ছেলে বখাটে সাকিব বেপারী বুধবার বিকেলে মাদরাসা থেকে বাড়ী ফেরার পথে ঐ ছাত্রীকে জোর করে একটি অটোরিকশায় নিয়ে যায়। রাতে মস্তফাপুর পর্বত বাগানের ভিতরে একটি নির্জন বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঐ ছাত্রী বাড়ীতে এসে বিষয়টি পরিবারের সদস্যকে জানায়। ঐদিন রাতে এ ঘটনায় এলাকার লোকজন একটি শালিস বৈঠকে বসে মীমাংসার চেষ্টা করে। পরে শুক্রবার দুপুরে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে মেয়েকে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় শুক্রবার রাত ৯টার দিকে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে ধর্ষণের শি^কার ঐ ছাত্রীর বাবা। ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক সাকিব বেপারী (১৮) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মাদারীপুর সদর হাসপাতালের ডাক্তার অখিল সরকার বলেন, ধর্ষণের বিষয় নিয়ে একটি মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। মেয়েটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

মধুপুর (টাঙ্গাইল) : টাঙ্গাইলের মধুপুরে এক শিশুকে (১৩) ধর্ষণের চেষ্টায় অভিযুক্ত সবুজ (২২) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এর আগে বিকেল ৫টার দিকে মধুপুর উপজেলার বেরিবাইদ ইউনিয়নের গুবুদিয়া গ্রামে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

সবুজ পাশের গ্রাম রামকৃষ্ণবাড়ীর জনৈক হাসমত আলীর ছেলে। সে গুবুদিয়া গ্রামের নানা মৃত কাজিম উদ্দিনের বাড়িতে বসবাস করে। মধুপুর থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) ছানায়ার হোসন জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি রাকিবুলকে (২০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মহিপুর থানার পুলিশ শুক্রবার রাতে মহিপুর সদর ইউনিয়নের নজিবপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। তবে এ মামলার অপর দুই আসামি বাবু (২২) ও ওবায়দুলকে (২৪) এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।



 

Show all comments
  • মাহদী হাসান ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
    বাঙ্গালি মা বোনেরা ধর্ষিতা হবেই।যতদিন কোনো ধর্ষকের .. কেটে ভিড়িও করে গণমাধ্যমে প্রচার করা হবে না,ততদিন অামাদের মা বোনেরা নিরাপদ নন।
    Total Reply(0) Reply
  • Samarjeet Ray ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
    বাংলাদেশে এই সব কি শুরু হইছে
    Total Reply(0) Reply
  • Auneesha Reza Khan ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৮ এএম says : 0
    সমাজটা পচে গেছে। মানুষের মুখেই শুধু ধর্মের কথা আসলে কেউ ধর্ম মানেনা। নাহলে ধর্ষণের মত জঘন্য অপরাধ করতে পারত না।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Manik ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৯ এএম says : 0
    ধর্ষণ নামক দানব চিরতরে বিদায় হোক... ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর আইন তৈরি করা হোক। শাস্তি হিসেবে সবার সামনে ধর্ষকের অন্ডকোষ ও পুরুষাঙ্গটি সম্পূর্ণ কেটে ফেলা হোক... এরপর আজীবন জেলে বন্দি রাখা হোক। কিংবা প্রকাশ্যে রাজপথে সবার সামনে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হোক... বেশি না, একটা দুটো এরকম শাস্তি দিলেই, এরপর আর কেউ ধর্ষণের চিন্তা মাথাতেই আনবে না। আর ছেলে মেয়ে উভয়েরই সম্মতিতে কিছু করার পর যদি মেয়েটি ধর্ষণের অভিযোগ আনে, তাহলে ছেলে-মেয়ে দুজনরই কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। এক্ষেত্রে দুজনকেই শাস্তি দিলে অন্য ছেলে মেয়েরা যেমন অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার আগে দশবার ভাববে, তেমনি মিউচুয়াল সেক্স নামক ধর্ষণও আর থাকবেনা..
    Total Reply(0) Reply
  • অশ্রু সিক্ত মন ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৯ এএম says : 0
    ধর্ষণ ধর্ষণ শুনতে শুনতে এটা যেনো বিদেশের মতো হয়ে যাচ্ছে! পুলিশ যে কি করে এদের কে ধরে আছা মতো কেরাতে পারে না,
    Total Reply(0) Reply
  • কুয়াশার আকাশ ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫০ এএম says : 0
    এই আকাম রোধ করার জন্য চাই কঠিন আইন। তানা হলে এটা রোধ করা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশে রেপ করার শাস্তি মৃত্যুদন্ড করা হোক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ