বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, শিক্ষাকে আমরা অনেক ক্ষেত্রে রাজনীতিকরণ করে ফেলেছি, এটা কখনো কাম্য নয়। শিক্ষার ক্ষেত্রে রাজনীতিকরণ করলে পরে শিক্ষার মানের অবনতি ঘটার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে মাদ্রাসা শিক্ষাকে রাজনীতিকরণ থেকে দূরে রাখতে হবে। না হয় সত্যিকারের আলো বিকিরণ বন্ধ হয়ে যাবে।
তিনি শুক্রবার (৩০আগস্ট) সিলেট শহরতলির সোনাতলায় সিরাজুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হযরত মাওলানা মুহা. হাফীজুর রহমানের অবসর গ্রহণ উপলক্ষে আয়োজিত বিদায়ী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে অধ্যক্ষ মাওলানা মুহা. হাফীজুর রহমান বিদায়ী অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জ্ঞানীদের সম্মান করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। ইসলাম ধর্মে সবচেয়ে বেশি জ্ঞানার্জনের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ আদম (আ.) কে বিশ্ব ভূমণ্ডলের সকল জ্ঞান দিয়ে সৃষ্টি করে ফেরেসতাদের সেজদা করার নির্দেশ দেন। এর অর্থ হচ্ছে, জ্ঞানীদেরকে সম্মান করা। জ্ঞানী বা শিক্ষকদের সম্মান করা স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ পাকই আমাদের শিখিয়েছেন। আজ তেমনি এক জ্ঞানীকে সম্মান জানালেন তাঁর ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসী। যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
অধ্যক্ষ হাফীজুর রহমান সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি ছিলেন আলোর ফেরিওয়ালা। ৪০ বছর এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। যিনি একই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন থাকেন, সেই প্রতিষ্ঠান আলো বিকিরণ করে। কারণ তারা শিক্ষার তরে জীবন উৎসর্গ করেন, কমিটেড থাকেন। তারা কেবল শিক্ষা ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেন।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, সিলেট অঞ্চলে শিক্ষার মান খুবই নিম্নে। এর জন্য সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভবন হচ্ছে। একেটি ভবনে ব্যয় হবে ৮৬ কোটি টাকা। সরকারের এই অর্থ যাতে সঠিকভাবে ব্যয় হয় তার জন্য স্থানীয়দের নজদারির উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছেন, আমি সোনার বাংলা গড়ব, তবে আমার সোনার মানুষ চাই। আমি আশা করবো তোমরা সোনার মানুষ হবে। ইচ্ছা থাকলে সব সম্ভব। আল্লাহ তাকেই সাহায্য করেন, যার ইচ্ছা থাকে নিজেকে পরিবর্তন করার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী বলেন, একজন শিক্ষক হিসেবে এলাকাবাসী, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা প্রমাণ করে মাওলানা হাফীজুর রহমান কতটা সফল। তিনি একজন মুখলিস, আল্লাহ ওয়ালা, খোদাভীরু, তাক্বওয়া সম্পন্ন মানুষ। আলোকিত শিক্ষকের শিক্ষার্থীরা আজ সারা পৃথিবীতে আলো ছড়াচ্ছে।
আজকের সংবর্ধনা যাতে আখেরাতের কামিয়াবি হাসিলে ব্যাঘাত না ঘটাতে পারে এ ব্যাপারে তিনি সচেতন। শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা শিক্ষায় একজন সফল শিক্ষক হিসেবে তাঁর সুখ্যাতি প্রমানিত।
মাদরাসা গভর্নিংবডির সভাপতি অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক এর সভাপতিত্বে এবং বিদায়ী অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন পরিষদের যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা মুহাম্মদ আজির উদ্দিন পাশা, সাংবাদিক ওলিউর রহমান ও মোঃ শরীফ উদ্দিন এর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বিদায়ী অনুষ্ঠান ও দু‘আ মাহফিলে বিশেষ অতিথির আরো বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্জ শফিকুর রহমান চৌধুরী।
ক্বারী মোঃ জামাল আহমদ এর কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সূচিত অনুষ্ঠানে বিদায়ী অধ্যক্ষ মাওলানা মুহা. হাফীজুর রহমান বলেন, আমি নিজের জন্য কিছু করিনি। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সমাজের বর্তমান প্রজন্মের জন্য কিছু করে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। ৪০ টি বছর শিক্ষার্থীদের সাথে সদয় ব্যবহার করতে পারিনি। শিক্ষকদের নিয়মিত ক্লাসে যেতে তাগিদ দিয়েছি। তিনি এর জন্য সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ সময় তিনি তাঁর পীর ও মুর্শিদ শামসুল উলামা হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.) এর কথা স্মরণ করে বলেন, আমার জীবনে আদর্শ ও অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বিদায়ী অধ্যক্ষের সম্মানে মানপত্র পাঠ করেন অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যাপক মোঃ কমরুদ্দীন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আসলাম উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহুয়া মমতাজ, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিরাজি, কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, জগদীশ চন্দ্র দাস, সিলেট জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ শাহনূর, বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক উপাধ্যক্ষ মোঃ ইব্রাহিম আলী, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মিল্লাত আহমদ চৌধুরী, সাবেক ছাত্র অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ সিরাজুল আম্বিয়া, মাওলানা মোঃ আলাউদ্দিন, মাওলানা নুরুল হক, মাওলানা মোঃ মুজাহিদ উদ্দিন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সিলেট ব্যুরো প্রধান মকসুদ আহমদ মকসুদ, মাওলানা আতাউর রহমান, মাস্টার মোঃ আব্দুল আউয়াল, মাওলানা সালাম বিন রশীদ, আজিজুর রহমান, মাস্টার আব্দুল মালিক মামুন, সাংবাদিক নূর আহমদ, মাওলানা আব্দুস শাকুর, মাস্টার ফয়ছল আহমদ বাবুল, মাওলানা আবুল বাশার, মাওলানা সুহায়ীল আহমদ তালুকদার, মাওলানা হেলাল আহমদ, আব্দুল করিম, দ্বাইফুর রহমান মাসহুদ, কেএম বিলাল আহমদ, জাম্মান আহমদ রাসেল, আশিকুর রহমান, আব্দুল মান্নান, শাহিন আহমদ, রুকন উদ্দিন প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।