রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বরিশালের বাবুগঞ্জে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। পটুয়াখালীতে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ডেকে এনে ধর্ষণ করা হয়েছে। ভূরুঙ্গামারীতে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া বাগেরহাটে গৃহবধূ ও নারায়ণগঞ্জে ৫ সন্তানের বাবার বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ভেল্লাবাড়িয়া গ্রামে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এতে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত বুধবার বালিয়াকান্দি থানায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিরা হলেন ইসলামপুর ইউনিয়নের ভেল্লাবাড়ীয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে শয়ন, আবু বক্কর মোল্লার ছেলে আশরাফুল হক রনি, আড়াবাড়িয়া গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে সাইদুর রহমান ও বিল্লাল হোসেন। মামলার পর বৃহস্পতিবার সকালে ওই ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষা ও বয়স শনাক্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ওই স্কুলছাত্রী জানায়, প্রায় চার-পাঁচ মাস আগে রাত ৯টার দিকে সে টিউবওয়েলে পানি আনতে বাইরে যায়। এ সময় তার মুখ চেপে ধরে কয়েকজন তাকে তুলে নিয়ে যায়। পড়ে নির্জন একটি স্থানে নিয়ে হাত-পা চেপে ধরে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ওই ছাত্রীর মা জানান, ঘটনার দিন রাতে তার মেয়ে টিউবওয়েল থেকে ঘরে আসতে দেরি করায় তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু আশপাশের কারও বাড়িতে পাননি। পরে প্রায় দুই ঘণ্টা পর অসুস্থ অবস্থায় মেয়ে বাড়ি ফিরে আসে। তখন সে তাদের কিছু বলেনি। জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে মেয়েটি টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যায়। এ সময় তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে জানতে পারেন মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। সে সময় তাকে রাজবাড়ী হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বালিয়াকান্দি থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) ওবায়দুর হক জানান, মামলার আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। এছাড়া মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষা ও বয়স নির্ধারণের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বরিশাল : বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামের স্কুল থেকে ফেরার পথে তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটলেও রাত ৮টায় রক্তাক্ত অবস্থায় ওই শিশুকে বরিশাল শেরে-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

নয় বছর বয়সি শিশুটির মা জানায়, তার মেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে যায়। দুপুর ১টার দিকে স্কুল থেকে বাসায় ফিরে কাউকে কিছু না বলে বারবার বাথরুমে যাওয়ায় তার সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রথম পর্যায়ে কিছু না বললেও দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে সব কিছু খুলে বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। মেয়ের বরাত দিয়ে শিশুটির মা জানায়, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে অপরিচিত এক ব্যক্তি জোরপূর্বক রাস্তার পাশের জঙ্গলে নিয়ে মুখ চেপে ধরে তার মেয়েকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এরপর রক্ত²রণ শুরু হওয়ায় বাসায় ফিরে বারবার বাথরুমে যায় সে। অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে শেবাচিমের গাইনী বিভাগে শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটনের বিমান বন্দর থানার ওসি মাহাবুব উল আলম এ ঘটনায় ওই পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে মামলা দায়ের সহ অভিযুক্তকে সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে বলেও জানিয়েছে ওসি।

পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে গত বুধবার গভীর রাতে বালুর মাঠে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নজিরপুর গ্রামের ওই শিক্ষার্থীর বাবা গত বৃহস্পতিবার রাতে মহিপুর থানায় একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় মহিপুর থানা সদর ইউনিয়নের কমরপুর গ্রামের শাহ আলম চৌকিদারের ছেলে রাকিবুলসহ (২০) তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।গতকাল ভোরে শিক্ষার্থীকে পুলিশ উদ্ধার করে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষকসহ অপর আসামিদের এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ ।
মামলার বিবরণ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কমরপুর গ্রামের শাহ আলম চৌকিদারের ছেলে রাকিবুল ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার দাদির মোবাইল ফোনে কল দিয়ে কথা বলতো। গত বুধবার রাতে ওই শিক্ষার্থীকে তার দাদির ফোনে কল দিয়ে ঘর থেকে বাইরে আসতে বলে রাকিবুল। পরে তাকে বালুরঘাট নামক স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাকিবুল তাকে ধর্ষণ করে। এসময় বাবু (২২) ও ওবায়দুল (২৪) তাকে সহযোগিতা করে। ধর্ষণের পর ওই রাতে ওবায়দুল মেয়েটিকে তার বাড়িতে নিয়ে রাখে। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ওই ছাত্রীকে বাড়ি যাবার উদ্দেশ্যে অটো রিকশায় তুলে দেয়া হয়। এসময় ধর্ষণের ঘটনা কাউকে না বলার হুমকি দেয় ওবায়দুল।

ওই শিক্ষার্থীর বাবা জানান, বুধবার রাত থেকে মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেয়ে বাড়ি ফিরে এসে তার দাদিসহ পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছে রাকিবুল তাকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। ওই দিনই স্থানীয় ইউপি সদস্য বিউটি ও রানীর সহযোগিতায় মহিপুর থানায় মামলা করেছি। মহিপুর থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মাহবুব আলম জানিয়েছেন, ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। ধর্ষকসহ অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইদ্রিস আলী নামের পাঁচ সন্তানের বাবার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় একটি ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন।

থানায় অভিযোগে শিশুটির মা উল্লেখ করেন, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের আলগীরচর গ্রামে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটির মা ঋণের কিস্তি দিতে অন্য একটি বাড়িতে গেলে শিশুটি তার বাড়ির আঙিনায় খেলা করছিল। এ সময় পাশের বাড়ির পাঁচ সন্তানের জনক ইদ্রিস আলী শিশুটিকে খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে তার ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

পরে শিশুটির মা বাড়িতে ফিরে শিশুটিকে আঙিনায় না পেয়ে ডাকতে থাকলে শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে ইদ্রিস আলীর ঘর থেকে বের হয়ে তার মাকে বিষয়টি খুলে বলে। পরে শিশুটির মা তাকে স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় একটি ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত ইদ্রিস আলী উপজেলার বারদী ইউনিয়নের আলগীল চর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের ভ‚রুঙ্গামারীতে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের খামার বেলদহ গ্রামে। এ ঘটনায় ছাত্রীটির বড় ভাই বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ভ‚রুঙ্গামারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের খামার বেলদহ গ্রামের সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ওই ছাত্রীর (১৩) সঙ্গে একই গ্রামের আঃ সালামের পুত্র হোসেন আলি স্বপন (১৯) ফুসলিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে ঐ স্কুল ছাত্রীকে পার্শ্ববর্তী আজাহার ও বালাশি বেগমের বাড়িতে নিয়ে তাদের সহায়তায় বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে ধর্ষণের শিকার ছাত্রীটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।

এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বার ঘটনাটি প্রকাশ হলে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা চালায় কিন্ত ধর্ষকের পরিবার তা প্রত্যাখান করে এবং সেই থেকে স্বপন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাইকেরছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঃ রাজ্জাক জানান, এ ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো। কিন্ত ছেলেপক্ষ মানতে রাজি না হওয়ায় তা ভেস্তে গেছে।

বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোংলায় গৃহবধ‚কে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। গত বুধবার রাতে উপজেলার চাদঁপাই ইউনিয়নের দক্ষিণ চাদঁপাই এলাকার গৃহবধ‚র বসতঘরে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ বলছে, আসামি পলাতক থাকলেও তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে বলে জানান মেডিকেল অফিসার ডা. কমলেশ সাহা। দক্ষিণ চাদঁপাই এলাকার প্রভাবশালী মোস্তফা শেখ’র ছেলে টিটো শেখ মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ির পাশে চিংড়ি ঘেরের ব্যাবসা করেন টিটো। নির্যাতিতা গৃহবধ‚র স্বামী বলেন, আমার অভাবী সংসার তাই জীবিকার তাগিদে দিনের বেলা বিভিন্ন জায়গায় দিন মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমরা গরিব এবং অসহায় হওয়ায় এ সুযোগে আমার এ সর্বনাশ করেছে টিটো শেখ।