Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আসামের লাখো মানুষ উদ্বিগ্ন এনআরসি নিয়ে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৯, ৫:২৯ পিএম

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) প্রকাশ হবে শনিবার (৩১ অগস্ট)। ইতোমধ্যে এ তালিকার খসড়া থেকে বাদ পড়েছে রাজ্যের প্রায় দুই লাখ মানুষ। তবে আরও অনেকের নাম বাদ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে এনআরসি নিয়ে উদ্বিগ্ন আসামের লাখো মানুষ।

আসামের লঙ্কা থানা এলাকার ২ নম্বর শামবেড়িয়ার মহাদেব দাস ফরেনার্স ডিটেকশন ট্রাইবুনালের নির্দেশে ডিটেনশন ক্যাম্পে ছিলেন তিন বছর। বিদেশি বলে অভযুক্ত হওয়ায় ২০১৫ থেকে ক্যাম্পে কাটাতে হয় তাকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেখান থেকে মুক্তি পেলেও তার কপালে দুশ্চিন্তার গভীর ভাঁজ।


অপদিকে ভোটার তালিকায় হোজাইয়ের কৃষ্ণনগরের রেখা রাণীদের নামের আগে যুক্ত হয়েছে ‘ডি’। অর্থাৎ ডাউটফুল ভোটার। হোজাইয়েরই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তথা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত প্রমোদরঞ্জন দাসের নাম জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসির প্রাথমিক তালিকায় ছিল না। দ্বিতীয় তালিকায় নাম উঠলেও উদ্বেগে রয়েছেন তিনি। সবারই দুশ্চিন্তা কাল বাদে পরশু কী হবে?

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে আসামে যে এনআরসি তৈরি হচ্ছে, তার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হওয়ার কথা শনিবার, ৩১ অগস্ট। চূড়ান্ত তালিকায় কাদের নাম থাকবে, নাম না-থাকলে তাদের কোথায় ঠাঁই হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে।

এদিকে, এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর যে কোনো রকম সহিংসতা মোকাবিলায় তৎপর হচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। রাজ্যের সব গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নজর। যাতে রাজ্যের কোনো প্রান্তে কোনো রকম সহিংসতা ছড়াতে না পারে। এ জন্য সব জেলার পুলিশ সুপার ও কমিশনারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নজর রাখা হচ্ছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও।


রাজ্য পুলিশ ছাড়াও আসামের বিভিন্ন প্রান্তে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

এনআরসিতে নাম তোলার জন্য প্রায় তিন কোটি ২৯ লাখ মানুষ আবেদন করেছিলেন। তিন দফায় এনআরসির খসড়া তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরেও ৪০ লাখের বেশি মানুষের নাম বাদ পড়েছে। তারা যাতে নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারেন, সেই জন্য সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল প্রশাসন। সেই সব নথি খতিয়ে দেখেই শনিবার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে। তবে চূড়ান্ত তালিকা থেকেও বেশ কয়েক লাখ মানুষের নাম বাদ যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

প্রমোদরঞ্জন দাস যেমন বলছিলেন, যারা ‘ডি’ ভোটার বলে ঘোষিত, যাদের ইতিমধ্যেই ‘বিদেশি’ বলে ফরেনার্স ট্রাইবুনাল জানিয়েছে ও ট্রাইবুনালে যাদের মামলা চলছে, তাদের নাম তালিকায় আসবে না। তা ছাড়া, আরও বেশ কয়েক লাখ মানুষের নাম বাদ যেতে পারে বলে আশঙ্কা।’

যাদের নাম বাদ যাবে, তাদের ট্রাইবুনালে আবেদন করতে হবে। সেখানে যাবতীয় নথি দিয়ে তিনি যে ১৯৭১-এর ২৪ মার্চের আগে থেকে অসমের বাসিন্দা, তার প্রমাণ দিতে হবে। আর ট্রাইবুনাল যদি কাউকে ‘বিদেশি’ বলে জানিয়ে দেয়, তাকে প্রশাসন ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠাতে পারে বা তিনি যে দেশ থেকে এসেছেন, সেখানে তাকে ফেরত পাঠানো হতে পারে। ট্রাইবুনালের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করা যেতে পারে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে। তবে শীর্ষ আদালত পর্যন্ত আইনি লড়াই কতজন চালিয়ে যেতে পারবেন, কতজনের সেই সামর্থ্য আছে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এনআরসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ