বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মিয়ানমারের সম্মতির পর বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ব্যাপক প্রস্তুতি ও উদ্যোগ থাকা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা গেলো না। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনাগ্রহের কারণে শেষ পর্যন্ত এ দফায়ও শুরু করা গেলো না প্রত্যাবাসন কর্মসূচী। এর আগে গত বছর নভেম্বর মাসে একই রকমের একটি প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ রোহিঙ্গাদের অনাগ্রহের কারণেই ভেস্তে যায়। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে নেটিজেনরা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একেএম আব্দুল মোমেনও এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম আজ থেকে প্রত্যাবসন প্রক্রিয়াটি শুরু করতে। এটি চুক্তি অনুযায়ী দুই বছর চলার কথা। কিন্ত দুর্ভাগ্যজনক তা আজ আমরা শুরু করতে পারলাম না। আমরা প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু একজন রোহিঙ্গাও যেতে রাজি হয়নি। আমরা অপেক্ষায় থাকবো। চেষ্টা চালিয়ে যাব। যখন কেউ রাজি হবে আমরা তাদের ফেরত পাঠাবো। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত না যাওয়ার জন্য যারা প্ররোচনা দিয়েছে, যারা ইংরেজিতে পোস্টার, প্লেকার্ড লিখে সাপ্লাই দিয়েছে এবং যে সমস্ত এনজিও না যাওয়ার জন্য তাদের আহবান জানিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
ফেইসবুকে এইচ এম হাবিবুর রহমান সরকার লিখেছেন, ‘জামাই আদর করা রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় যাবে না। তাদেরকে নিয়ম মেনে যেতে বাধ্য করতে হবে।’
‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিওদের কর্মযজ্ঞ বন্ধ না হলে শুরু করা যাবে না প্রত্যাবাসন....’ - সাংবাদিক আরেফিন সাকিলের মন্তব্য।
এমডি মাহবুবুর রহমান সজল তার ফেইসবুকে লিখেন, ‘মুসলিম জাতি হিসাবে আমরা তাদের বিপদের সময় পাশে দাঁড়িয়েছি। বাসস্থান, খাদ্য এমন কি তাদের মৌলিক অধিকার দিয়েছি। এতে আমাদের দেশ ও জাতির উপর কিছুটা হলেও চাপ পড়েছে। এখন সকলের সহযোগীতায় তাদের নিজ বাসস্থানে যাবার ব্যবস্থা করে দেয়াটা সকলের কর্তব্য আমি মনে করি।’
‘রোহিঙ্গাদের বলছি, আর পারবো না। এবার তোমরা বিদায় নেও। তোমার বিপদে আমরা ছিলাম। এবার তোমাদের সমস্যা তোমরা সমাধান করো। আমাদের সহযোগিতা থাকবে সর্বদা।’ - জিয়াউল হকের অনুরোধ।
এমডি ওয়াসকুরুনী মনে করেন, ‘সমস্যা সমাধান না করে কাউকেই পাঠানো উচিৎ নয়। তারা কোন ভরসায় যাবে? আবারও নির্মম নির্যাতন হবে না, তার কোন বিশ্বাস নেই। সেখানে তাঁদের নাগরিকত্ব দিয়ে অধিকার দিয়ে প্রয়োজনে জাতিসংঘ বাহিনী দিয়ে পাঠানো হোক। অবশ্যই তাঁরা যাবে। এগুলো না করে এসব প্রত্যাবাসনের আয়োজন করার কোন মানেই হয় না।’
‘তবে জাতিসংঘের নিরাপত্তায় তাদেরকে মিয়ানমারে নেয়া হোক। বেশি কিছু তো চায় না তারা, শুধুমাত্র মৌলিক অধিকারই চায়। তারা মুসলিম, কিন্তু সবার আগে তারা মানুষ।’ - লিখেছেন আকসারা অর্থি।
ইসমাঈল হোসেন লিখেন, ‘রোহিঙ্গাদের নাগরিকতার সংকট। তারা বাংলাদেশের ক্যাম্পে আছে, মায়ানমারে গিয়ে ক্যাম্পে থাকতে হবে। কারণ তাদের নাগরিকত্ব নেই, মায়ানমারে তারা নিরাপত্তাহীনতা ভোগবে। কারণ তারা মায়ানমারের সরকার ও জনগণ কাউকে বিশ্বাস করে না। আগে মায়ানমারের সংবিধান সংশোধন করে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে। তবে তারা মায়ানমারে ফিরে গেলে সেটা টেকসই হবে।’
‘এখানে ওরা আরামে রয়েছে। ওখানে তাদের সাথে মায়ানমার কেমন ব্যবহার করবে তা তাদের জানা নেই। আর মায়ানমারের অতীতের ইতিহাস ভালো না। তাই জাতিসংঘের নিরাপত্তা বাহিনী প্রেরণ করে রোহিঙ্গাদের স্থায়ী বসবাসসহ সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। না হলে তারা কেন যাবে ?’ - রবিউল ইসলামের প্রশ্ন।
তামিম শোয়েব লিখেন, ‘অত্যাবশ্যকীয় প্রত্যাবর্তন যেটা শুধুমাত্র রোহিঙ্গাদের নয়, বাঙালিদেরও প্রত্যাশা। তবে প্রত্যাশিত এই প্রত্যাবর্তনের বর্তমান মূল্যায়ন অথবা রোহিঙ্গাদের অনাস্থার কারণ নির্ণায়ন একটি চ্যালেঞ্জ। কেননা, সমসাময়িক রাজনীতি সেটা হোক বাংলাদেশের বা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের তা কখনোই সুদূরপ্রসারি ফলাফল বহন করে না। এহেন পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসতে হবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে, যারা সত্যি সত্যিই প্রত্যাশা করেন বর্তমানের সব থেকে আলোচিত সমস্যা 'রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন'-এর সময়পোযোগী সমাধান।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।