Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেনা সদস্য নিহত: পাহাড়ে সেনাক্যাম্প বাড়ানোর দাবি জোরদার

আবদুল মোমিন | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৯, ৯:৫৫ এএম

রাঙামাটির রাজস্থলীতে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের গুলিতে একজন সেনা সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে প্রতিবাদের ঝড়। এ নিয়ে নানা মন্তব্য তুলে ধরেছেন নেটজেনরা, করছেন চুলচেরা বিশ্লেষণ। নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর প্রাণঘাতী ওই হামলায় ফেইসবুকে ক্ষোভ জানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা ক্যাম্প বাড়ানোর জোর দাবি উঠেছে নাগরিকদের পক্ষ থেকে। অনেকেই সেনাবাহিনীকে টার্গেট করাকে স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে দেখতে একেবারেই নারাজ। তারা এক্ষণি শান্তি চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন।

এরআগে রোববার সকালে রাঙামাটি রিজিয়নের রাজস্থলী আর্মি ক্যাম্প হতে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে পোয়াইতুমুখ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সেনা সদস্যের নাম নাসিম (১৯)। ঘটনার পর ওই এলাকায় সেনাবাহিনীর টহল জোরদার এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।

ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘বাঘাইছড়ি থেকে রাজস্থলী- শান্তি চুক্তি লঙ্ঘনের দায়ে নিতে হবে। শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পরও পাহাড়ে অস্ত্র কেন এর জবাব সন্তু লারমাকে দিতে হবে।’’

ফেইসবুকে ক্ষোভ জানিয়ে আবু তাহের তালুকদার লিখেছেন, ‘‘নিহত সৈনিকের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। উপজাতী সন্ত্রাসীদের দমনে সেনাবাহিনীকে কার্যকরি প্রদক্ষেপ গ্রহণের আহবান।’’

মোহাম্মাদ সুমন লিখেছেন, ‘‘একজন ভাইকে হারালাম। শুনে খুবিই বেথা পেলাম। উপজাতি সন্ত্রাসীদের দমনে কঠিন অভিযান চালানো প্রয়োজনীয় মনে করছি। আশা করছি অতিদ্রুতই অপারেশন শুরু হবে।’’

পরিতাপের সাথে আসাদ লিখেছেন, ‘‘যেদেশে সেনাবাহিনীরই নিরাপত্তা নেই,, সেদেশে আমরা সাধারণ মানুষ কিভাবে নিরাপদে থাকবো।’’

আনন্দ রায়ের মন্তব্য, ‘‘ভারতীয় জঙ্গিরা জড়িত তাতে কোন সন্দেহ নাই। কারণ ত্রিপুরার জঙ্গিরা চট্টগ্রামকে ভারতের সাথে যোগ করার জন্য জন্য মানববন্ধন করেছে।’’

‘‘শান্তি চুক্তির পরও অশান্তি কেন? অস্ত্র সমর্পন করলে অস্ত্রের ঝনঝনানি কেন? তাহলে কি এখনি সময় শান্তি চুক্তি নিয়ে নতুন করে ভাবার?’’ প্রশ্ন তুলেছেন জাকির হোসাইন।

ফেইসবুকে আশরাফ হোসাইন লিখেছেন, ‘‘সেনা সদস্য নিহত হওয়া কোনো স্বাভাবিক বিষয় নয়। প্রতিটা জায়গায় উপর থেকে নিচ পর্যন্ত মিথ্যা আর মিথ্যা। দায়হীন ভাবে দেশ টাকে বিকীয়ে দেয়ার প্রবণতা। সর্ব জায়গায় রাষ্ট্রদ্রোহীদের কাছে মাথা নত করা যেন একটা অভ্যাসে পরিষণত হচ্ছে।’’

হাসিব দাবি জানিয়েছেন, ‘‘সেনা ক্যাম্প বাড়িয়ে দেয়া হোক,,, আর প্রতিটি জায়গা তল্লাশীর আওতায় আনা হোক,, অস্ত্র পেলেই ক্রসফায়ারে দেয়া হোক,, আর রুটিনমাফিক সন্ত্রাস নির্মূল অভিযান পরিচালনা করা হোক।’’

ড. শেখ ফরিদ আহাম্মদ লিখেছেন, ‘‘পার্বত্য চট্রগ্রামে সবার মতামত নিয়ে সরকারের কাজ করা দরকার।আমাদের সেনা নিহত হওয়া স্বাভাবিক বিষয় নয়,এখানে দ্রুত, দমন ও নিয়ন্ত্রনমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।’’

‘‘এটা মানা যায় না।সেখানে সেনা অভিযান চালানো হোক’’ এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শরিফুল ইসলাম।

শাখাওয়াত লিখেছেন, ‘‘সবে মাত্র একজন।আরো কত লাশ পড়বে।সরকার এদেরকে এত এত সুবিধা দেয়, দেশীয় শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পড়ালেখা করে এরা আবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কলম ধরে।এর জন্য দায়ী সরকারের নজরদারীর অভাব।এরা ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ খুলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লেখালেখি করে, এর সাথে যোগ দিয়েছে কিছু সংখ্যক উগ্রবাদী হিন্দু।’’

‘‘গতকাল (ত্রিপুরার) চাকমারা পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বাধীনতা চেয়েছে আজই গোলাগুলি শুরু’’ লিখেছেন মো সাইদ।

সাইফুল ইসলাম দাবি জানিয়েছেন, ‘‘সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ার করা হোক। গভীর অরণ্যে অভিযান পরিচালনা করে সন্ত্রাসীদের সকল আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়ে সেনাবাহিনী ক্যাম্প বাড়ানো হোক। অরক্ষিত সীমান্তে বিজিবি নিয়োগ করা হোক।’’

আশরাফুল আলম লিখেছেন, ‘‘এই ব্যাপার গুলো নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কারণ এটা কোন সাধারণ ঘটনা নয়, এতটা সাহস পায় কি করে এই ছোট্ট জাতিগুলো।’’

কাজী ইসলাম লিখেছেন, ‘‘হায়রে দেশ নাই জনসাধারণের নিরাপত্তা নাই পুলিশ প্রশাসনের নিরাপত্তা নাই বিজিবি নিরাপত্তা এখন দেখি সেনাবাহিনী সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হয়। আসলে দেশটা সত্যিতে নিরাপত্তা বলতে কিছু আছে প্রশ্ন জাগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে কি করেন আপনি আপনি কি দেশের সব প্রশাসনিক ব্যবস্থার দিকে নজর দেন প্রশ্ন রইল।’’

হাসান মোহাম্মাদ জানিয়েছেন, ‘‘এখনি যে সমস্ত স্থান থেকে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল সেখানে পুনরায় সেনাবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করা হোক।’’

‘‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক একজন সেনা সদস্য নিহত এটাকে স্বাভাবিক ভাবে দেখার সুযোগ আছে বলে মনে করিনা। এখানে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজমান। তাই সরকারকে এখানে জরুরী ভিত্তিতে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে নির্মূলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত’’ লিখেছেন গোলাম মওলা।

নাজমুল রিফাত লিখেছেন, ‘‘পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা ছিল এই সরকারের সবচেয়ে বড় ভুল, তার খেসারত আরো কিছুদিন পরে বহুৎ বড় আকারে দেওয়া লাগবে। আর চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের ক্রসফায়ার দিয়ে সন্ত্রাস নির্মূল করা হোক। এছাড়া সেখানে সন্ত্রাস কার্যক্রম দ্রুত কমানোর কোন পদ্ধতি আমার জানা নাই।

মো. সুমন রানা লিখেছেন, ‘‘আন্তজার্তিক কুটচালের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।বাংলাদেশকে আগামির প্রতিটি পদক্ষেপ বুজে শুনে ফেলতে হবে।মাথা গরম করে কিছু করা যাবেনা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বলছি ধৈর্যশীলতার পরিচয় বহন করুন।’’

প্রদীপ লিখেছেন, ‘‘এটা যদি এখন কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ পদক্ষেপ না নেয় তাহলে এক সময় পার্বত্য চট্টগ্রামকে কন্ট্রোল করা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অসম্ভব পর্যায়ে চলে যাবে।’’

অস্বাভাবিক কিছু নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি বাহিনী চাঁদাবাজি করে যে পরিমাণ অস্ত্র যোগাড় করেছে, তাঁরা যেকোনো সময় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে’’ লিখেছেন আবদুল করিম।

কামরুল হাসান পাটওয়ারী মনে করেন, ‘‘পাহাড়ি অঞ্চল গুলো নিয়ে ইন্ডিয়ার ষড়যন্ত্র দীর্ঘদিন থেকে কিন্তু বাংলাদেশ সরকার কোন ব্যবস্থা নেয়নি । এখন দেখছি তারা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছেন সেখান থেকে সেনাবাহিনীর ক্যাম গুলো পর্যন্ত তুলে এনেছে এখন বুঝুন ব্যাপারটা।’’

হালিম খান লিখেছেন, ‘‘সমস্ত চুক্তি বাতিল করে সেনা ঘাঁটি আগে যে কয়টা ছিলো তা বসানো হউক। জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করতে হবে।’’

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সোশ্যাল মিডিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ