পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্ভূত সঙ্কটের সমাধান হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশনায় কাউন্সিলের কাজ অনেকটা এগিয়েছে। কোরবানির ঈদ শেষ। এখন যেকোনো দিন অনুষ্ঠিত হবে ছাত্রদলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল। সুতরাং কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে ‘নির্বাচিত’ নেতৃত্বের অপেক্ষায় সংগঠটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
প্রথম দফায় ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গত ১৫ জুলাই কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিক্ষুব্ধ একটি অংশের আন্দোলনের কারণে তা সম্ভব হয়নি। এখন তফসিল পিছিয়ে চলতি আগস্টের শেষ সপ্তাহের যে কোনো একদিন ছাত্রদলের কাউন্সিলের ভোটগ্রহণ হবে। পাশাপাশি বিএনপির হাইকমান্ড ছাত্রদলের নতুন নেতা হওয়ার যেসব শর্ত দিয়েছে তা বহাল থাকবে। তবে বিবাহিতরা কোনোভাবেই প্রার্থী হতে পারবে না বলে জানিয়েছেন সার্চ কমিটির সিনিয়র সদস্য শামসুজ্জামান দুদু।
কাউন্সিলকে ঘিরে ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এখন উচ্ছ¡সিত। তারা কাউন্সিলরদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের চেষ্টা রাখছেন। এ ছাড়া চলতি সপ্তাহে ছাত্রদলের ১২ জন নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হবে। বিক্ষুব্ধ নেতাদের যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্য অঙ্গসংগঠনে যথাযথ মূল্যায়নের পাশাপাশি ছাত্রদলের কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা, বাছাই ও আপিল কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও সার্চ কমিটির সদস্য এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন নিয়ে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছিল তা নিরসন হয়েছে। কোরবানির ঈদের পরপরই কাউন্সিলের মাধ্যমে ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে। এ জন্য ঈদের সপ্তাহখানেকের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ ২৭ বছর পর অনুষ্ঠেয় বিএনপির প্রবেশদ্বার বলে খ্যাত ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল ঘিরে পদপ্রত্যাশীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ কেউ ঢাকায়ই ঈদ করবেন বলে জানিয়েছেন। ছাত্রদলের কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রায় ডজনখানেকের বেশি নেতা প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে আগ্রহী। ইতোমধ্যে নিজেদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। বিশেষ করে ওয়ান-ইলেভেনের সময় দলের পক্ষে কার কী ভূমিকা ছিল এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণসহ নানা বিষয় অগ্রাধিকার পাচ্ছে তাদের প্রচারণায়। তৃণম‚ল ও সাধারণ কর্মীদের প্রত্যাশা- সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যেন ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচিত না হয়। জাতীয়তাবাদী পরিবারের আস্থাভাজন ও সরকারবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রাখা যোগ্য প্রার্থীরাই যেন ছাত্রদলের কান্ডারি নির্বাচিত হন।
শীর্ষপদে লড়তে আগ্রহী যারা
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষপদ পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা। বিএনপির দেয়া শর্ত মোতাবেক এসএসসি ২০০০ ও তৎপরবর্তী ব্যাচ থেকে ছাত্রদলের শীর্ষপদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে আগ্রহী অন্তত ডজনখানেকের বেশি নেতা। সভাপতি পদের জন্য আগ্রহী নেতাদের অন্যতম হলেন- ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি) হাফিজুর রহমান হাফিজ, বিলুপ্ত কমিটির মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা সম্পাদক সর্দার আমিরুল ইসলাম সাগর, তথ্য ও গবেষণা সহ-সম্পাদক মামুন খান, অর্থ সহ-সম্পাদক আশরাফুল আলম ফকির লিঙ্কন, ঢাবি ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সাজিদ হাসান বাবু, মোহাম্মদ এরশাদ খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মো. জাকির হোসেন। সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আছেন- বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির যোগাযোগ বিষয়ক সহ-সম্পাদক মাহমুদুল আলম শাহীন, ঢাবি ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আমিনুর রহমান আমিন, যুগ্ম সম্পাদক শাহনেওয়াজ, তানজিল হাসান, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আবু তাহের, সহ-সাধারণ সম্পাদক মুতাসিম বিল্লাহ, ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক নেতা খায়রুল আলম সুজন প্রমুখ। এর বাইরেও কেউ কেউ প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
সভাপতি পদপ্রার্থী মামুন খান জানান, তিনি বিতর্কের বাইরে সবাইকে নিয়ে ছাত্ররাজনীতি করতে চান। নেতা নির্বাচিত হলে আধুনিক ও যুগোপযোগী ছাত্রদল উপহার দিতে চান তিনি। আরেক সভাপতি প্রার্থী হাফিজুর রহমান বলেন, তিনি সারাদেশে বিভাগ, মহানগর ও জেলাপর্যায়ে সফর করছেন। কাউন্সিলরদের সাথে যোগাযোগ করছেন তিনি। সভাপতি পদে নির্বাচিত হলে ছাত্রদলকে আরো বেশি শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলতে চান। পাশাপাশি আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করাই তার মূল লক্ষ্য থাকবে। কেননা মুক্ত খালেদা জিয়াকে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র, জনগণের ভোটাধিকারসহ সংবিধান স্বীকৃত সব অধিকার ফিরিয়ে আনতে প্রত্যয়ী তিনি। সর্দার আমিরুল ইসলাম সাগরও একই মন্তব্য করেন।
অপর প্রার্থী সাজিদ হাসান বাবু বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে এবারের কাউন্সিলে ছাত্রদলের শীর্ষপদের প্রার্থী খুব বেশি নেই। আমার বাড়ি জামালপুরে, আশা করি কাউন্সিলররা আমার সাংগঠনিক কর্মকান্ডের মূল্যায়ন করবেন। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আমিনুর রহমান আমিন বলেন, সশরীরে কাউন্সিলরদের সাথে যোগাযোগ করছেন। নেতৃত্বে আসতে পারলে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলকে শক্তিশালী ও আন্দোলনমুখী হিসেবে প্রস্তুত করতে বেশি প্রাধান্য দেবেন তিনি।
তানজিল হাসান বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হলে ছাত্রদলকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। এজন্য খালেদা জিয়ার মুক্তির বিকল্প নেই। তিনি নেতৃত্বে আসতে পারলে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে ছাত্রদলকে সময়োপযোগী ও খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনমুখী হিসেবে প্রস্তুত করবেন। তার অনুসারীরা তাকে নিয়ে আশাবাদী বলে জানান তানজিল। সুজন বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে পদবঞ্চিত। আসন্ন কাউন্সিলে তিনি নিজেকে নিয়ে আশাবাদী।
উল্লেখ্য, গত ৩ জুন রোজার ঈদের একদিন আগে ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ (রাজীব-আকরাম) কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনটি যোগ্যতা নির্ধারণী শর্তও জুড়ে দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়- প্রার্থীকে ছাত্রদলের প্রাথমিক সদস্য হতে হবে, তাকে অবশ্যই বাংলাদেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হতে হবে এবং ২০০০ সালের পরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। সে মোতাবেক কাউন্সিলের তফসিলও ঘোষণা হয়।
কিন্তু এ নিয়ে বিলুপ্ত কমিটির একটি অংশ আন্দোলন করতে থাকে। এরই মধ্যে গত ২২ জুন ১২ জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর নানাভাবে বিক্ষুব্ধদের আন্দোলন দমানোর কৌশল ও উদ্যোগ নেয় বিএনপি। ছাত্রদলের সমস্যা সমাধানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে। তারা দফায় দফায় ক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সঙ্কট সমাধানের নেপথ্যে কাজ করেন।
সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ বৈঠক হয়। লন্ডন থেকে স্কাইপির মাধ্যমে বৈঠকে যুক্ত ছিলেন তিনি। এই বৈঠকের মধ্য দিয়েই ম‚লত ছাত্রদলের সঙ্কট নিরসন হলো। বৈঠকে তারেক রহমানের যেকোনো সিদ্ধান্ত মানার অঙ্গীকার করেছেন বিলুপ্ত কমিটির ছাত্রনেতারা।
গুলশানের ওই বৈঠকে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও যুবদলের সেক্রেটারি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুসহ ক্ষুব্ধ নেতাদের মধ্যে ইখতিয়ার রহমান কবির, মামুন বিল্লাহ, জহিরউদ্দিন তুহিন, জয়দেব জয়, বায়েজিদ আরেফিন, দবিরউদ্দিন তুষারসহ ৪০ জনের মতো ছাত্রনেতা উপস্থিত ছিলেন। ২০ জনের মতো ছাত্রদলের সাবেক নেতা বিভিন্ন দাবিতে যৌক্তিকতা তুলে ধরে বক্তব্য দেন। তারা দলের সিদ্ধান্ত মেনে ছাত্রদলের কাউন্সিল পর্যন্ত একটি স্বল্পমেয়াদি কমিটি চান।
এ সময় তারেক রহমান ক্ষুব্ধ নেতাদের সবার কথা শোনেন এবং বিক্ষুব্ধ ছাত্রনেতাদের উদ্দেশে বলেন, তিনি ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের জন্য কাউন্সিল করতে চান। এজন্য সবার সহযোগিতা চান। ছাত্রনেতারা জবাবে কাউন্সিল করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। তবে তিনি যে সিদ্ধান্তই দেবেন তা মেনে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান জানান। এ সময় সব ছাত্রনেতা তার যে কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার অঙ্গীকার করেন বলে বৈঠক সূত্র জানায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।