Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতীয় সীমান্তে সন্ধ্যার পর ১৪৪ ধারা জারি

চোরাইপথে ভারতীয় গরু আসা বন্ধ

কুড়িগ্রাম থেকে শফিকুল ইসলাম বেবু | প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০১৯, ২:৪১ পিএম

ঈদ ঘনিয়ে আসলেও কুড়িগ্রামে জমে ওঠেনি কোরবাণির পশুর হাট। ভারতীয় গরু না আসায় প্রভাব পরেছে হাটগুলোতে। দেশী গরু উঠলেও চড়া মূল্যের কারণে ক্রেতা ও পাইকাররা কিনতে পারছে না গরু। ফলে বেচাকেনা জমছে না পশুরহাটে। তবে প্রাণি সম্পদ বিভাগ বলছেন কোরবাণীর জন্য দেড় লক্ষ দেশীয় গরু মজুদ আছে। ভারত থেকে গরু আমদানী না হলেও কোন সংকট হবে না। 

জেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছর জেলায় ২৮টি পশুর হাটে গরু বেচাকেনা হচ্ছে। খামারীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার। এছাড়াও ৪২ হাজার পশু পালনকারী বাজারে গরু নিয়ে আসছে। দেশীয় গরুর কোন ঘাটতি নেই। বাজারও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
বুধবার সরজমিন জেলার সীমান্তবর্তী ভূরুঙ্গামারী হাটে গিয়ে দেখা যায় হাট জুড়ে দেশীয় গরু। ভারতীয় গরুর আধিক্য কম। ঈদ ঘনিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত কোরবাণীর জন্য পছন্দের গরু কিনতে আসছে না ক্রেতারা। দেশী এবং বাইরের পাইকারদের কারণে বেড়ে গেছে কোরবাণীর পশুর দাম। বেশিরভাগ খামারীদের কাছ থেকে গরু কিনে নিয়েছে পাইকাররা। এছাড়াও হাটগুলোতে এক পাইকার থেকে আরেক পাইকারের কাছে হাতবদল হচ্ছে গরু। ফলে মূল্য হয়েছে চড়া। মানুষ চড়া দাম শুনে কিনতে সাহস পাচ্ছে না। ফলে এখন পর্যন্ত কুড়িগ্রামের পশুর হাটগুলে জমে ওঠেনি।
খামারী ছামাদ ও তাইজুল জানান, প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার টাকা খরচ করে হাটে গরু নিয়ে আসছি। গরুর পিছনে অনেক খরচ হয়েছে। ফলে দামও একটু বেশি হচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় দাম হাঁকছে না। আমাদের বাড়তি খরচ হচ্ছে। তবে ভারতীয় গরু না আসায় সন্তুষ্ট দেশীয় খামারিরা।
গরু কিনতে আসা ভূরুঙ্গামারীর পাটেশ^রী এলাকার আসাদ, মইনুল ও কাদের জানান, বাজারে প্রচুর দেশীয় গরু উঠেছে। ভারতীয় গরু না আসায় প্রভাব পরেছে দেশীয় গরুতে। চড়া দামের কারণে কিনতে পারছে না ক্রেতারা। এছাড়াও হাট ঘুরে দেখা গেল ক্রেতার চেয়ে পাইকারের সংখ্যা বেশি। পাশর্^বর্তী লালমনিরহাট, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ থেকে পাইকাররা এসেছেন গরু কিনতে। বাজারে ভারতীয় গরু না আসায় হতাশ তারা। খামারী ও দেশীয় গরুর দাম অনেক চড়া হওয়ায় তারা বাজারে অলস সময় কাটাচ্ছেন। গরু কিনতে পারছে না।
লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ী এলাকার পাইকার মামুন জানান, অনেক আশা নিয়ে চারজন পাইকারসহ এখানে গরু কিনতে এসেছি। কিন্তু হাটে ভারতীয় গরু কম। দেড়শ’র মত গরু উঠেছে। বাকী সব দেশীয় গরু। দামও চড়া। ঘুরে ফিরে দেখছি।
ভূরুঙ্গামারী পশু হাটের ম্যানেজার রাশেদুন্নবী লালু জানান, ভারতীয় গরুর আমদানী কমে যাওয়ায় হাটে প্রভাব পরেছে। সবাই বলছে দাম একটু চড়া। আশা করা যায় আগামি হাটগুলোতে ভারতীয় গরু আসলে দাম কমে যাবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: আব্দুল হাই সরকার জানান, এবার ভারত থেকে কোন গরু আসছে না। কোরবাণীর জন্য দেড়লক্ষ দেশীয় গরু মজুদ আছে। আশা করি খামারীরা ভাল দাম পাবেন। গরুগুলোতে স্ট্রয়েট বা ক্ষতিকর কিছু ব্যবহার করা হয়নি। যে মাংস উৎপাদিত হবে তা স্বাস্থ্যকর হবে।
কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবি’র পরিচালক লে.কর্ণেল মোঃ জামাল হোসেন জানান-কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী সীমান্তের সালঝোর ও দিয়াডাঙ্গায় বটিকাটালের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে গরু আসে। কিন্তু ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফ সন্ধ্যার পর সীমান্তে ১৪৪ ধারা জারী করার কারণে চোরাকারবারিরা অবৈধ পথে গরু নিয়ে আসতে পারেনা। তাছাড়া বিজিবির কড়া নজরদারির কারনে অবৈধপথে গরু বা অন্যান্য মালামাল আসার সুযোগ নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোরবানী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ