পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, বাংলাদেশ ক্রমেই অকার্যকর রাষ্ট্রের পথে এগিয়ে চলছে। দেশে যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী (পুলিশ) জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে উঠে যায় তখনই এমন হয়। বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ও তার জন্য জবাবদিহি না থাকা হলো একটি রাষ্ট্র অকার্যকর হওয়ার বড় লক্ষণ। লিবিয়া, সিরিয়া জনগণের গড় আয় আমাদের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। কিন্তু তাদের পরিণতি সবার জানা। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জেনেভায় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের নির্যাতন বিরোধী সনদের বাস্তবায়নের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। এ উপলক্ষ্যে ‘বাংলাদেশের সরকারের প্রাথমিক প্রতিবেদন: নির্যাতন বিরোধী কমিটির বক্তব্য ও আমাদের প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি। ড. শাহদীন মালিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে একটি লিখিত বক্তব্য বক্তব্য তুলে ধরেন মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার সারা হোসেন। নারী অধিকার কর্মী শিরিন হকের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া, সাজ্জাদ হোসেন, নূর খান মিল্টন।
জাতিসংঘের নির্যাতন বিরোধী কমিটিতে বাংলাদেশের দেয়া প্রতিবেদন এবং আইনমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যকে অবান্তব এবং লজ্জাজনক হিসেবে অবিহিত করেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, আমাদের আইনমন্ত্রী একজন আইনজীবী। জেনেভায় দেয়া আইনমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে আইনজীবী হিসেবে আমি লজ্জা পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, দেশে ন্যূনতম সুরক্ষা নেই। বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ও তার জন্য জবাবদিহি না থাকা হলো একটি রাষ্ট্র অকার্যকর হওয়ার বড় লক্ষণ। বর্তমানে যা অবস্থা নিসন্দেহে ভয়াবহ। মানবাধিকারসহ গুম নির্যাতন বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে দেশের ভেতরে জনগণ ঐকবদ্ধ না হলে দেশ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
জেনেভায় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের নির্যাতন বিরোধী সনদের বাস্তবায়নের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক প্রতিবেদনকে অবাস্তব মন্তব্য করে ড. শাহদীন মালিক বলেন, ২০ বছর পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের নির্যাতন বিরোধী কমিটিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন জমা দেয়া ইতিবাচক। তবে জেনেভায় দেয়া আইনমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে আইনজীবী হিসেবে লজ্জা পেয়েছি। আমাদের দেশে বর্তমানে যে অবস্থা রয়েছে তাতে আমরা বিন্দুমাত্র আইনের সুরক্ষা পাচ্ছি না। দেশে নাগরিকের ন্যূনতম সুরক্ষা নেই। আশার কথা দেশে এসব বিষয়ে কথা বললেও কোন সুরাহা হচ্ছে। তবে বিদেশে বাংলাদেশের শাসননের নামে অনাচার নিয়ে কথা বলা শুরু হয়েছে। আইনে একজনের সুরক্ষার কথা তো সোয়াশ বছর আগেও বলা হয়েছিল। কিন্তু কই এর বাস্তবায়ন তো হচ্ছে না। আইনে সংবিধানে সব কিছু হচ্ছে। কিন্তু দেশে এব্যাপারে প্রতিকার পাচ্ছি না। কিন্তু দেশের বাইরে এই প্রথম একজন আইনমন্ত্রীকে ঠিকই জবাবদিহিতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে- এটাই এখন একটু ভরসা। দেশের কিছু হচ্ছে না। এখন বিদেশে যদি কিছু হয়। বর্তমানে বিশ্বের কয়েকটি দেশের গৃহযুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে ধরে শাহদীন মালিক বলেন, এসব দেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছিল। জনগণের গড় আয় আমোদের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। কিন্তু মানবাধিকার ছিল না বলেই আজ ওইসব দেশ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এদেশগুলো অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হবার আগে নির্যাতন দিয়েই শুরু করেছিল। বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের জবাবদিহিতা না থাকার কারণে এমন পরিণতি হয়েছে। এটা হচ্ছে আসলে অকার্যকর রাষ্ট্রে যাওয়ার প্রথম পদক্ষেপ।
ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের উন্নয়ন ফিরিস্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন একদম বাজে কথা। লিবিয়া, সিরিয়া-এদের গড় আয় আমাদের চেয়ে ত্রিশগুন বেশি ছিল। এখন তো একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জবাবদিহিতার ঊর্ধে্ব উঠে যায় তখনই এমন হয়। বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ও তার জন্য জবাবদিহি না থাকা হলো একটি রাষ্ট্র অকার্যকর হওয়ার বড় লক্ষণ।
লিখিত বক্তব্যে ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, জাতিসংঘের নির্যাতন বিরোধী সনদের বাস্তবায়নের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের দেয়া প্রতিবেদনে অনেক বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সরকারি প্রতিনিধি দল (আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে) কমিটির বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সংবিধান ও বিদ্যমান আইনের আলোকে নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক এবং অমর্যাদাকর আচরণ প্রতিরোধে বিষয়ে উল্লেখ করেছে। তবে নির্যাতন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও অন্যান্য সংগঠিত অপরাধের ব্যাপারে কোনো বাস্তব পদক্ষেপ না নেয়ার এবং দু’একটা ঘটনা ছাড়া অপরাধীদের বিচারে সোপর্দ না করার বাস্তবতাকে আড়াল করতে সচেষ্ট ছিলেন। সুরক্ষা কমিটি মনে করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরাট অংশ, ক্ষমতাসীনদের বহুলাংশ এবং স্বার্থান্বেষী বিভিন্ন মহল আইন ও বিচারের ঊর্ধ্বে। অনেক প্রশ্নের যথাযথ উত্তর না পাওয়ার বিষয়টি জাতিসংঘের নির্যাতন বিরোধী কমিটির সমাপনী পর্যবেক্ষণেও উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, নির্যাতন বন্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেই, প্রতিকারেরও কোনো উপায় নেই। তাই পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না। আইনে না থাকলেও বাস্তবে গুম হচ্ছে। আবার নির্যাতন বন্ধে আইন আছে অনেক কিন্তু বাস্তবায়ন শূন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।