নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
টরোন্টোর হোটেল। এগারো তলার বারান্দায় বসে কিংবদন্তী বোলার ওয়াসিম আকরাম। নিচেই তার চোখে পড়ল একটি মাঠ। ফিরে গেলেন স্মৃতিতে। একসময়ে আকরাম ছিলেন বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানের জন্য আতঙ্ক, জমদূত। শচীন টেন্ডুলকার, ব্রায়ান লারা, স্টিভ ওয়াহদের মতো সাবেকেরাও ভুগেছেন আকরামের নির্ভুল গোলায়। বর্তমান টি-টোয়েন্টির যুগে বোলারদের অসহায় আত্মসমর্পন দেখেছেন এই গ্রেট। কেমন হতো যদি ক্রিস গেইল, ডেভিড ওয়ার্নার, বিরাট কোহলি, জস বাটলার, মহেন্দ্র ধোনি ও আন্দ্রে রাসেলের মতো বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানরা মোকাবেলা করতে পারতেন এই বাহাতি পেসারকে?
বাস্তবতাভরা কল্পনায় তারই পরিকল্পনা শোনা গেল ১৯৯২ সালের বিশ^কাপজয়ী লিজেন্ডের মুখে। উদ্বোধনী জুটিতে যেহেতু খেলবেন গেইল ও ওয়ার্নার, তাই তাদের দিয়েই আকরামের পরিকল্পনার শুরু। আধুনিক যুগের এই দুই বিধ্বংসী বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধেই আউটস্যুইং অস্ত্র প্রথমে ব্যবহার করবেন তিনি, ‘দুজনই বাঁহাতি হওয়ায় কিছুটা সুবিধা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আউটস্যুইং বল করাটাই আমি বেশি পছন্দ করবো।’ গেইলকে বিগ হিটার এবং ওয়ার্নারকে অন্যতম প্রিয় খেলোয়াড় দাবি করেন ৫৩ বছর বয়সী গতি তারকা। তবে কোন বাড়তি বৈচিত্র্য তিনি প্রথম ছয় ওভারে ব্যবহার করতে চান না। কারণটাও জানালেন স্যুইংয়ের রাজা, ‘প্রথম ছয় ওভারে মিডল স্ট্যাম্পে বল রেখে আউটস্যুইংয়ে বের করে আনাই গুরুত্বপূর্ণ। কোন বৈচিত্র্যের দরকার নেই। শুধু দরকার একই লাইন ও লেন্থ।’ খেলেছেন ইমরান খানের মতো বিশ্বজয়ী অধিনায়কের অধীনে। নিজে অধিনায়কত্ব করেছেন পাকিস্তানের মতো দলে। নিজের বলে ফিল্ডার সাজানোর পদ্ধতিটাও নিজেই জানালেন আকরাম, ‘যেহেতু মাত্র দু’জন ফিল্ডার ত্রিশ গজের বাইরে রাখা যাবে, আমি ফাইন লেগ উঠিয়ে আনব। স্টয়ার লেগের ফিল্ডার থাকবে লেগ আম্পায়ারের সামনে।’
দৃশ্যকল্পে কেটে গেল প্রথম দশ ওভার। রান ২ উইকেটে ৮২। ক্রিজে আছেন কোহলি এবং বাটলার। বল হাতে আকরাম। উইকেট পাওয়ার লক্ষ্যে করতে হবে এক ওভার। হাসলেন আকরাম। তারপর জানালেন নিজের কর্মপদ্ধতির কথা, বিরাটের জন্য অ্যারাউন্ড দ্য উইকেটে এসে বল করবেন। মাঝ থেকে অ্যাওয়ে স্যুইংয়ে বলগুলো করবেন। আর বাটলারের জন্য থার্ড ম্যান উঠিয়ে এনে বলের গতি কমিয়ে উইকেটের সন্ধান করবেন এই লিজেন্ড। এই দুই ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে তার পরিকল্পনা জানালেও তাদের ভূয়সী প্রসংশা করলেন তিনি, ‘নিঃসন্দেহে এই দুজনই ম্যাচ উইনার। ক্রিজে থাকলে যেকোন সময়েই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।’
লিজেন্ডারি এই বোলারের শেষ অ্যাসাইনমেন্ট ম্যাচের ১৮ থেকে ২০ ওভার। তার সামনে ক্যারিবীয় দানব রাসেল ও ভারতীয় ফিনিশার ধোনি। তিনি জানিয়েছেন, ‘উভয়েই ম্যাচ উইনার। বিগ হিটার। ফিনিশার। আমি আমার স্কয়ার লেগের ফিল্ডার অথবা পয়েন্টের ফিল্ডারকে একটি সংকেত দেব-ব্যাটসম্যান ক্রিজের ভেতরে আছে নাকি বাইরে? এটা অনেক কিছু বদলে দিতে পারে।’
‘যদি তারা ভেতরে থাকে, তাহলে আমার আত্মবিশ^াস বাড়বে। সুইং বজায় থাকলে সমস্যায় পড়বেন ব্যাটসম্যানেরা। রাসেলের জন্য ফাইন লেগ ফিওে যাবে পেছনে। স্কয়ার লেগ সামনে আসবে। আমি ইনস্যুইং বল তার প্যাড বরাবর করে যাব। এই সময়ে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট পন্থা-প্রতি বলে একটি সিঙ্গেল বিবেচনায় রাখা। ধোনির জন্য আউটস্যুইং ইয়কার ডেলিভারি করব আমি। ইনসুইং ইয়কার বলে ধোনির হেলিকপ্টার শটের কথা সবারই জানা। তাই বিকল্প একটি চান্স নিতে চাই। হয়তো বলটি টপ এজ হয়ে উঠে যেতে পারে।’
প্রায় দশ মিনিটের এই কল্পনার বোলিং সমাপ্ত হল। ম্যাচটিও শেষ, কিন্তু ফল হল না। বর্তমানে কানাডায় টি-টোয়েন্টি আসরের ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে সেখানে আছেন তিনি। সেই ফাঁকেই তার কল্পনার আঙিকে সাজানো ম্যাচটি বাধা গ্রস্ত হলো নিরাপত্তারক্ষীর ডাকে। নক নক...!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।