পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এডিস মশা নিধন ও ডেঙ্গু দমনে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার মশার ওষুধ আমদানিতে গড়িমসির বিষয়ে দুই সিটি এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা শুনতে গিয়ে বিচারপতি তারিক উল হাকিম এবং বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর ডিভিশন বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। আদালত আরো বলেন, মশা মারার ওষুধ আমদানির প্রশ্নে আপনারা (স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়) বলছেন সিটি করপোরেশনের কথা, সিটি করপোরেশন বলছে আপনাদের কথা। আপনারা একে অন্যের দোষারোপ করছেন। এসব ওষুধের কথা আমাদের আর শুনাবেন না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হেলালুদ্দীনকে ডেকে নিয়ে তার উদ্দেশে এ কথা বলেন হাইকোর্ট। মশা নিধন এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের গড়িমসি কেন তা জানতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাকে তলব করা হয়েছিল। বেলা ২টার পর হেলালুদ্দীন হাইকোর্টে হাজির হন। ডেঙ্গু দমনে সরকারের বর্তমান কার্যক্রম ব্যখ্যা করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হেলালুদ্দীন বলেন, যে ওষুধ ইতোমধ্যে ছিটানো হয়েছে তাতে মশা মারা যাচ্ছে না। দেশে ক্রাইসিস চলছে। তবে এ বিষয়ে আমরা বসে নেই।
এর আগে গতকাল সকালে ডেঙ্গু মশা নিধনের ওষুধ আনতে সরকারের গড়িমসি সম্পর্কে জানতে চান হাইকোর্ট। এ সময় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কৌঁসুলি সাঈদ আহমেদ রাজা আদালতে বলেন, এডিস মশা নিধনে ওষুধ আনার দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। আমরা শুধু প্রয়োগ করব। গত পরশু সরকারের কাছে আবেদন করেছি। এখনো কোনো কিছুই হয়নি। আবেদন পড়ে রয়েছে। কোনো কিছুই হচ্ছে না। এই প্রসেস কখনোই শেষ হবে না।
হাইকোর্ট বলেন, ‘আমরা ১৬ দিন আগে রুল দিয়েছি। সরকার কি কোনো কাজ করছে না?’ সরকারপক্ষের আইনজীবী বলেন, মিটিং হয়েছে। ব্যবস্থা নিচ্ছে। দুই সিটির আইনজীবীরা জানান, বিশেষ বিমানে করে মশা নিধনের নতুন ওষুধের নমুনা আজকের মধ্যে দেশে আসবে। একই সঙ্গে ওই নমুনা ওষুধের কার্যকারিতার ওপর মহাখালীর একটি ল্যাবরেটরিতে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা চালানো হবে। আদালত বলেন, যখন মশার প্রকোপ শুরু হলো তখন আপনারা কোনো ব্যবস্থা নেননি কেন? দুই সিটি করপোরেশন মশক নিধনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
আদালতে দাঁড়িয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হেলালুদ্দীন বলেন, শুরু থেকেই আমাদের মন্ত্রণালয় দুই সিটিকে মশা নিধনের জন্য বলেছিল। এরপর থেকে মশা নিধন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলমান রেখেছি। এই ওষুধে মশা মারা যাচ্ছে না। তবুও আমরা মিটিং অব্যাহত রেখেছি। মিটিং করে আরেকটি ওষুধ আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সচিবকে আদালত প্রশ্ন করেন, মশা দমনের ওষুধ আনার দায়িত্ব কার? জবাবে তিনি বলেন, ওষুধ আনার বিষয়ে আমাদের মন্ত্রণালয় সুপারভাইজ করবে। সে অনুযায়ী তারা প্রস্তুতি নিয়েছে। এমনকি উত্তর সিটি নমুনাও সংগ্রহ করছে। ওষুধ আনতে লাইসেন্স করতে হবে। আদালত তখন বলেন, কেন লাইসেন্স লাগবে? আপনারা অনুদান হিসেবে বা সরকার নিজের ক্ষমতা বলে ওষুধ আনবে। জবাবে সচিব বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় ওষুধ আনতে গেলে পারে। কিন্তু আমাদের (সিটি করপোরেশন) আনতে গেলে লাইসেন্স দরকার হয়। আমরা গত মাস থেকে সিটিতে মশা নিধনের কাজ শুরু করেছি। আদালত বলেন, ঢাকা সিটির বাইরে হলে সেখানে মশা নির্মূল করবে কে? জবাবে সচিব বলেন, আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দুই সিটির সঙ্গে কথা বলব। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। তারা আমাদের কাছে জনবল চেয়েছিল, আমরা তাও দিয়েছি। পরে আদালত মশার ওষুধ আমদানিতে সরকারের গড়িমসির জবাব দিতে সচিবকে আরো সময় দেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ জুলাই ওষুধের ডোজ বাড়িয়ে দিয়ে এডিস মশা নির্মূল ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এ সময়ের মধ্যে ওষুধ ব্যবহারে মশা নিধন হয়েছে কি না, সে বিষয়েও প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছিলেন আদালত। কিন্তু মশা নিধনে কার্যকর ফল না পাওয়ায় গত ৩০ জুলাই এডিস মশা নিধনে কার্যকর ওষুধ কবে দেশে আসবে, তা সরকার এবং ঢাকার উভয় সিটি করপোরেশনকে গতকাল বেলা ২টার মধ্যে জানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ ধারাবাহিকতায় ওষুধের বিষয়ে দুই সিটি করপোরেশন হাইকোর্টকে বিষয়টি অবহিত করেন। এর আগে গত ১৪ জুলাই একই আদালতের আদেশে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা জানাতে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে নাগরিকদের ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়া বন্ধ করতে এবং এডিস মশা নির্মূলে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত। পরে ওই বিষয়ে দুই সিটির পক্ষ থেকে গত ২২ জুলাই হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। কিন্তু সেই প্রতিবেদনে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান দুই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তলব করেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদ্বয় গত ২৫ জুলাই সশরীরে হাজির হয়ে আদালতে ব্যাখ্যা দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।