মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের আলোচিত ইসলাম ধর্মবিষয়ক বক্তা জাকির নায়েককে আর আশ্রয় দেবে না মালয়েশিয়া। তাকে ‘অনাহূত অতিথি ও কট্টর’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ড মাহাথির মোহাম্মদ।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ৯৪ বছর বয়সী মাহাথির এ মন্তব্য করেন। জাকির নায়েককে আশ্রয় দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্য কোনো দেশ জাকির নায়েককে নিতে চায় না বলেই তাকে আমাদের এখানে রাখতে হচ্ছে। তবে জাকির নায়েকের কট্টর দর্শন মালয়েশিয়ার জন্য হুমকি।
সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণের ও ধর্মের মানুষ আছে। আমরা এমন কাউকে চাই না, যার ধর্ম সম্পর্কে কট্টর চিন্তাভাবনা রয়েছে। তাকে আবার অন্য কোথাও পাঠানোও কঠিন। কারণ অনেক দেশ তাকে চায় না।’ মাহাথির জানান, আন্তর্জাতিক পুলিশি সংস্থা ইন্টারপোল জাকির নায়েকের জন্য রেড নোটিশ জারি করতেও রাজি হয়নি।
এ দিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরই ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে জাকির নায়েক দেশে ফিরছে বলে সংবাদ প্রকাশ করা শুরু করেছে। দেশটির সংবাদ মাধ্যমের দাবি, ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে বিতর্কিত ধর্ম প্রবক্তা জাকির নায়েককে।
তবে চলতি বছরের জুনে জাকির নায়েকের ব্যাপারে ভিন্নমত দিয়েছিলেন মাহাথির। জাকির নায়েককে ভারতে ফেরত না পাঠানোর অধিকার মালয়েশিয়ার রয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। জাকির নায়েককে ফেরত চেয়ে করা অনুরোধের জবাবে মাহাথিরের এই মতামত ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায় মালয়েশিয়া।
ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও উগ্রপন্থাকে উসকে দেয়ার অভিযোগ তুলেছিল। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা-এনআইএ।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম মূল ঘটনার সূত্রপাত বলছে, ঢাকায় হোলি আর্টিজান ক্যাফের ভিতর জঙ্গি হামলার ঘটনায় আলোচিত হন মুম্বাই নিবাসী জাকির নায়েক। হামলাকারী জঙ্গিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাকির নায়েকের ফ্যান ফলোয়ার ছিলেন এবং পিস টিভি নামে একটি ইসলাম ধর্মীয় চ্যানেলে তার ভাষণ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। এছাড়াও ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জাকির নায়েকের জনপ্রিয়তা দ্রুত ছড়াচ্ছিল। এরপর পিস টিভিকে ঘিরে বিতর্কের মাঝে ২০১৬ সালেই জাকির নায়েক ভারত ছেড়ে সৌদি আরব চলে যান। তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়। বন্ধ হয় পিস টিভির সম্প্রচার এবং তার প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন (আইআরএফ)।
এসব অভিযোগের চাপে গত ২০১৬ সালের ১ জুলাই ভারত ছেড়ে মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেন জাকির। ভারতে মামলা হওয়ার পর জাকির নায়েক মালয়েশিয়ায় আশ্রয় চাইলে তাকে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেয় তৎকালীন নাজিব রাজাক সরকার। তবে মালয়েশিয়ায় আশ্রয়ের পর থেকে ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার ক্রমাগত কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করতে থাকে মালয়েশিয়ার উপর।
গত জানুয়ারি মাসে তার প্রত্যার্পণ চেয়ে মালয়েশিয়ার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানায় ভারত সরকার। সম্প্রতি ভারত সফরে এসে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলা সাগারান জানিয়েছিলেন, নায়েককে ফেরত পাঠানোর আবেদন করেন সুষমা স্বরাজ। তবে এই বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তিনি আরও জানান, জাকিরের প্রত্যার্পণের বিষয়টি আদালতে পাঠাতে পারে সরকার। সেক্ষেত্রে আদালতের রায়ই শেষ কথা হবে। তবে ভারতে ফেরত যাওয়ার আদেশ দিলে, সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে জাকির।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জাকির নায়েককে ফেরত পাঠাতে মোটেও রাজি নয় মালয়েশিয়া। ওই দেশের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে যথেষ্ট গভীর সম্পর্ক রয়েছে তার। আগেও সেদেশের প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বলেছিলেন, যতদিন পর্যন্ত জাকির নায়েক মালয়েশিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি না করছেন ততদিন তাকে ভারতে ফেরানোর কথা ভাবছে না সরকার। তবে এসবের মধ্যেও জাকিরকে ভারতে ফেরত নিতে মালয়েশিয়ার উপর ক্রমাগত কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছিল ভারত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।