বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
একজন অতিরিক্ত সচিবের গাড়ির অপেক্ষায় ফেরি পার হতে তিন ঘণ্টা দেরি হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ভুক্তভোগী ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষের (১৩) স্বজনরা অভিযোগ করেন, ঘাটের বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তা, পুলিশ সবার কাছে অনুরোধ করার পরও ওই কর্মকর্তা না আসা পর্যন্ত কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ফেরি ছাড়েনি। এমনকি প্রতিকার মেলেনি জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করেও।
তিতাসের সাথে এমন অমানবিক আচরণের ঘটনায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে সর্বমহলে। ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন নেটিজেনরা। তারা এই ঘটনায় দায়ী কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী ১নং ফেরি ঘাটে এমন ঘটনা ঘটে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়া তিতাসকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেয়া হচ্ছিলো।
ফেসবুকে জিএম ফয়সাল লিখেছেন, ‘‘সচিব মহোদয়ের নাম প্রকাশ করা হোক, আর কিছু করতে পারি আর না পারি একটু নামধরে বদদোয়া করি আর অপেক্ষায় থাকলাম আল্লাহর শাস্তি দেখার জন্য। নাম জানলে পরে মিলাতে সহজ হবে।’’
আবু আলী লিখেছেন, ‘‘ভিআইপিদের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হউক এটা সবার কামনা। কিন্তু অর্ধেক ঢাকা শহরের রাস্তা বন্ধ করে সম্মান জানালে কত মানুষ যে নির্যাতিত হয় সেই খবর আল্লাহ ছাড়া আর কেউ কি রাখেন!’’
‘‘দেশটা এখানেই সবচেয়ে ব্যর্থ, যেখানে তার মালিকের চেয়ে গোলামের গুরুত্ব বেশি’’ পরিতাপের সাথে লিখেছেন সাইফুল ইসলাম।
মিনার রশিদ লিখেছেন, ‘‘তিনি সচিব ছিলেন না !! ছিলেন আজরাইল আর ফেরীর কর্মকর্তারা ছিলেন তার সহযোগী। আশা করি ঊচচ আদালতে বিষয়টি যাবে এবং একজন সচিব হলে যে তার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে এটা কোন আইনে আছে বা কার নির্দেশে এটা হলো? সচিব মহদয়ের জন্য যদি অপেক্ষা করতেই হয় তবে সেই একই ফেরী সাধারনকে কেনো ঊঠালো। সাধারন মানুষের জীবনের কত মূল্য তা যদি ঊচচ আদালতে এই সব সচিব মহদয়দের এবং ফেরী চলাচল কর্তৃপক্ষকে এখন না বুঝাতে পারে তবে আফসোসের আর কোন সীমা খাকবে না, তারা তো জনগনের সেবক, তা হলে প্রভুর মত আচারন কেনো?’’
অরাবিন্দা বালা বিন্দু লিখেছেন, ‘‘বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাই। সুষ্ঠ বিচার আশা করি। ইউএনও’র স্ত্রীর মোবাইল জলে পড়ে গেলে ৬ জন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল মোবাইল উদ্ধার করে । অথচ একজন মূমুর্ষ রোগীর জন্য ফেরি ছাড়ল না । অতিরিক্ত সচিবের রিজার্ভ থাকার জন্য ফেরি চলল না আর তাতে মৃত্যু একটা তরতাজা শিশু । চালক এবং সচিব দুটোই পশু । ধিক্কার জানাই এমন রাষ্ট্রিয় ব্যবস্থাকে।’’
‘‘তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনা হোক। কেউ আইনের উর্ধ্বে হতে পারেনা’’ লিখেছেন মো. নাজমুল হক।
ফারুক হোসাইন লিখেছেন, ‘‘দেশের আইন,মন্ত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সবকিছুই সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য অথচ এই স্বাধীন দেশে সাধারণ মানুষেরাই সবচেয়ে বড় অসহায়।’’
ফেসবুক ব্যবহারকারী মোহাম্মাদ ইশতিয়াক হোসাইন লিখেছেন, ‘‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাকর; এ ধরনের কর্মকাণ্ড সভ্য দেশে কখনও গ্রহণযোগ্য নয়। দায়ী ব্যক্তিকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হোক এবং ভবিষ্যতে ভিআইপি বলে এ ধরনের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধাদি অনতিবিলম্বে রহিত করবার দাবি করছি।’’
‘‘এটা কেবল বাংলাদেশেই সম্ভব। এদেশে দুর্নীতি করেও পার পাওয়া যায়, জবাবদিহিতার প্রয়োজন হয়না’’ মন্তব্য সাবিনা ইয়াসমিনের।
আক্ষেপের সাথে আহমাদ জুবায়ের লিখেছেন, ‘‘বৃটিশ গেছে,হিন্দু জমিদাররা গেছে,পাকিস্তানিরা গেছে, কিন্ত এই ছোটলোকের বাচ্চাদের জমিদারী যায় নাই।অফিসার হইলেই এগো ওপর জমিদারী ভাব ভর করে।’’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।