বৃটেনের বিচ্ছেদ বা ব্রেক্সিট ইস্যুতে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের নীতিমালার তীব্র সমালোচনা করেছেন শীর্ষ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, জনসনের ব্রেক্সিট নীতিমালা অগ্রহণযোগ্য। বৃহস্পতিবার বৃটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সে সাংসদদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাখা প্রথম বক্তব্যে তার সরকারের নীতিমালা সম্পর্কে জানান। বলেন, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট চুক্তি হবে তার প্রথম অগ্রাধিকার। তিনি আরো বলেন, আইরিশ ব্যাকস্টপ পরিকল্পনা ব্রেক্সিট চুক্তি থেকে বাতিল করে দেবেন তিনি। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, জনসনের নীতি প্রত্যাখ্যান করেছেন ব্রেক্সিট চুক্তি আলোচনায় ইইউ’র প্রধান আলোচনাকারী মিশেল বার্নিয়ার। তিনি বলেন, ব্যাকস্টপ পরিকল্পনা বাদ দেয়া অগ্রহণযোগ্য।
উল্লেখ্য, ব্রেক্সিটের পর আয়ারল্যান্ড ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের মধ্যে সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়েই মূলত ব্যাকস্টপ পরিকল্পনা। আয়ারল্যান্ড ইইউ’র অংশ আর নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্যের অংশ।
ইইউ’র সদস্য হওয়ায় এতদিন দুই ভূখণ্ডে তাদের জনগণ ও পণ্যের মধ্যে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ ছিল। কিন্তু ব্রেক্সিটের পর সে সুযোগ থাকবে না। ব্যাকস্টপ পরিকল্পনা অনুসারে, এ বিষয়ে কোনো চুক্তি না হলে ব্রেক্সিটের নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ইইউ’র একক বাজার ও কাস্টমস ইউনিয়নের সুবিধা পাবে। ফলে, যুক্তরাজ্যের বাকি অংশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড। কিন্তু এই পরিকল্পনার বৃটিশ বিরোধীদের ভাষ্য, ব্যাকস্টপের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড চলে যেতে পারে ইইউ’র আইনের অধীনে। জনসন এই পরিকল্পনা বাতিল করে দিতে চাইছেন।
বৃহস্পতিবার হাউজ অব কমন্সে জনসন বলেন, স্বাধীনতা ও নিজেদের আত্ম-সম্মানের মূল্য দিতে জানা কোনো দেশই ব্যাকস্টপের মতো এমন কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে না, যে চুক্তিতে আমাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন খর্ব হয়। চুক্তিটিকে ‘বিভেদমূলক’ ও ‘গণতন্ত্র-বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী জানান, এই চুক্তি বাতিল করে দিতে তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। জনসনের বক্তব্য শেষে তার ব্রেক্সিট নীতির সমালচনা করে ইইউ নেতাদের কাছে বার্তা পাঠান বার্নিয়ার। তবে বার্নিয়ারের সমালোচনা নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
এদিকে, ইইউ কমিশনার জন ক্লড জাংকার এক ফোনালাপে বরিসকে জানান, ইইউ মনে করে যে, বর্তমান ব্রেক্সিট চুক্তিটিই সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো চুক্তি। তবে, আসন্ন সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাজ্য চাইলে তারা আলোচনায় বসতে পারে।