Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আপনার সময়ও শেষ, বিরোধী নেতাকে টেরিজা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০১৯, ৩:২৯ পিএম

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেষ বার পার্লামেন্টে হাজির হয়ে বিদায়ী বক্তৃতা দিলেন টেরিজা মে। তার পরে বাকিংহাম প্রাসাদে গেলেন রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে। এ দিনই রানির সঙ্গে সাক্ষাতের পরে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিলেন বরিস জনসন। বাকিংহাম প্রাসাদে যাওয়ার আগে দ্য মল-এ জনসনের গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন জলবায়ু নিয়ে আন্দোলনকারীরা, মানববন্ধন তৈরি করে পথ আটকান তারা।

বরিস দায়িত্ব নিয়ে বৃহষ্পতিবার ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমি আপনাদের বলতে চাই, সেই সব সমালোচক ভুল। সন্দেহবাতিক, কু-গাওয়া লোকগুলো বুঝবে, তারা কতটা ভুল ছিল।’ ব্রেক্সিট নিয়ে আর সময় নষ্ট নয়— আশ্বাস দিয়ে বরিস বলেন, ‘৯৯ দিনও অপেক্ষা করব না আমরা। অনেক হয়েছে। এ বার কঠিন হাতে নেতৃত্ব দেওয়া শুরু।’ তার প্রমাণ মিলেছে বরিসের দায়িত্বে আসার পরপরই ১২ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করায়। শাসক দল কনজ়ারভেটিভ পার্টির ভেতরে গুঞ্জন, বরিসই তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন। শীঘ্রই নয়া ক্যাবিনেট সাজাবেন তিনি। এর আগে বরিস প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শুনেই পদত্যাগ করেছেন আরও ৪ মন্ত্রী।

দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টেরিজা পার্লামেন্টে বলেন, ‘ওদের সাফল্য হবে দেশের সাফল্য।’ শেষ বেলায় এমপি-দের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে দৃশ্যতই আবেগপ্রবণ দেখাচ্ছিল টেরিজাকে। তার মধ্যে বিরোধী নেতা জেরেমি করবিনকে টেরিজা বুঝিয়েছেন, তার সময়ও শেষ। বিদায়ী নেত্রীর ইঙ্গিত, লেবার পার্টির নেতৃত্বেও এ বার কোনও মহিলা মুখের প্রয়োজন।

হাউস অব কমন্সে টেরিজাকে ছ’টি প্রশ্ন করেছিলেন করবিন। উত্তরও দেন নেত্রী। সেই সূত্রেই করবিনকে বার্তা দিয়েছেন, ‘প্রত্যেকেই বুঝতে পারে, কখন আসন ছেড়ে দেওয়ার সময় এসেছে। আমি ওকে বলছি, সম্ভবত এ বার সে কাজটা ওরও করা উচিত।’ টেরিজার এই মন্তব্য শুনে উৎসাহী হয়ে ওঠেন লেবার বেঞ্চের সদস্যেরা। অনেকেই চিৎকার করে সমর্থন জানান। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করবিন যে ক্রমশ দলের বোঝা হয়ে উঠেছেন, তা আর লেবার পার্টির অন্দরের খবর নয়। সব দলের এমপি-ই তা বুঝতে পারছেন। করবিন অবশ্য সব দেখেশুনে গোমড়া মুখে দাড়িতে হাত বুলিয়েছেন।

নব্য লিবারাল ডেমোক্র্যাট নেতা জো সুইনসন ঠাট্টার ছলে টেরিজাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘কিছু পুরুষ আছেন, যারা মনে করেন, তারা কাজটা ভালই পারেন। কিন্তু আদতে কিছুই করতে পারেন না— এদের কী ভাবে সামলাবেন মহিলারা?’ উত্তর আসে, ‘নিজের প্রতি সৎ থাকুন। অধ্যবসায় এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ এর পরেই বিদায়ী নেত্রীর সংযোজন, ‘আমার পার্টিতে দু’জন নেত্রী আছেন, লিবারাল পার্টিতেও এক জন নেত্রী এখন আছেন, এসএনপি-রও (স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি) এক নেত্রী।’ আরও বেশ কিছু পার্টির নাম উল্লেখ করেন, যাদের নেত্রী রয়েছে। শেষে টেরিজা বলেন, ‘হাউসে একমাত্র একটি দলই এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে— লেবার পার্টি।’ ফের সমর্থনের চিৎকার হাউসে, মহিলারাই পুরোভাগে।

১৯৯৭ সালে নির্বাচিত হয়ে প্রথম বার পার্লামেন্টে আসা টেরিজার। ব্রিটেনের রাজনীতির এই পীঠস্থানে তার মতো আরও মুখ দেখতে চান প্রবীণ নেত্রী। ১৪০ ঘণ্টার বেশি সময়ে উত্তর দিয়েছেন সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি প্রশ্নের। এ বার পিছনের সারিতে ফিরে গিয়ে তার প্রশ্ন করার পালা। সে দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাততালির ঝড়ের মধ্যে পার্লামেন্ট থেকে বেরিয়ে যান টেরিজা মে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাজ্য


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ