Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাজ এবং জাজের তৈরী শিল্পীরা এখন কে কোথায়?

সবুজ পারভেজ | প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০১৯, ৫:২৬ পিএম | আপডেট : ১০:০৬ পিএম, ২৯ জুলাই, ২০১৯

জাজ মাল্টিমিডিয়া দেশের অন্যতম একটি প্রভাবশালী চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থার নাম। বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের ক্রান্তিকালে এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানই সিনেমা শিল্পটির হাল ধরেছিল শক্ত করেই। বাংলা চলচ্চিত্রে যখন বর্হিবিশ্বের ডিজিটালের ছোঁয়া লেগেছিল ঠিক তখনই লোকসান হবে যেনেও একের পর এক নতুন নতুন সিনেমা নির্মাণে এগিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। জাজ মাল্টিমিডিয়ার আগমনে সংশ্লিষ্ট অনেকের মুখেই তখন ফুটেছিল এক স্বস্থির হাসি। তাদের এই হাসি ফোটানোর নেপথ্যে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আব্দুল আজিজ।

জাজ মাল্টিমিডিয়া যখন চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করে। ওই সময়টা এদেশের চলচ্চিত্র শিল্প এবং কুলাকশলীরা কাজের অভাবে এক প্রকার বেকার সময় পার করতেন। জাজ সে সব শিল্পী এবং টেকনিশিয়ানদের কাজ দিয়েছেন। কাজের বিনিময়ে দিয়েছেন টাকা। শুধু তাই নয়, ইন্ডাস্ট্রিতে পয়দা করেছেন নতুন নতুন শিল্পীও। সে সব শিল্পীদের মধ্যে ইতোমধ্যেই কয়েকজন বাংলাদেশের হয়ে স্বাক্ষর রাখছেন আন্তর্জাতিক সিনেমায়। করছেন ঢালিউডের প্রতিনিধিত্ব। বাইরের নামিদামি ও প্রখ্যাত শিল্পীদের সঙ্গে তুমুল প্রতিযোগিতা করেই কাজ করছেন তারা। জানান দিচ্ছে তিনি মেড ইন বাংলাদেশ।

এই তালিকার উপরেই নাম রয়েছে দুই বাংলার সম্ভাবনাময় নায়িকা নুসরাত ফারিয়ার। জাজের হাত ধরেই চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির পথে যাত্রা তার। এরপর একের পর এক নতুন নতুন সিনেমাতে অভিনয় করছেন ফারিয়া। ইতোমধ্যেই ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক এবং প্রভাবশালী অভিনেতা-প্রযোজক শাকিব খানের বিপরীতে একটি সিনেমাতে অভিনয়ও করেছেন তিনি। শাকিব ছাড়া আরিফিন শুভদের মতো ক্রেজধারী নায়কের বিপরীতেও অভিনয় করেছেন এক সময়ের এই উপস্থাপিকা। দেশের গন্ডি পেরিয়ে এই অভিনেত্রী টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিতে গিয়েও সমান তালেই অভিনয় করে চলেছেন। শুরুতে যৌথ প্রযোজনার মাধ্যমে কলকাতার নায়কদের সঙ্গে স্ক্রিণ শেয়ার করলেও ফারিয়া এখন কলকাতার ইন হাউজ প্রডাকশনেও স্থান করে নিয়েছেন জিতদের বিপরীতে। আর সে কারণেই এই অভিনেত্রীকে এখন আমদানি করে দেখতে হয় এদেশের দর্শকদের। মাঝে শোনা গিয়েছিল ফারিয়া ঢালিউড ও টালিউডই নয়, অভিনয় করবেন বলিউড চলচ্চিত্রেও। বলিউডের চুমুর বাদশা ইমরান হাশমির বিপরীতে অভিনয় করার খবর প্রকাশ পেয়েছিল এই অভিনেত্রীকে নিয়ে। তবে সেই খবরটি অবশ্য খবরেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। বাস্তবে এখনও রূপ পায়নি ফারিয়ার বলিউড যাত্রা। খবরটি প্রকাশের সময়ই অবশ্য অনেকেই এটিকে ফারিয়া এবং জাজ মাল্টিমিডিয়ার একটি স্টান্ট বাজি হিসেবেই ধরে নিয়েছিলেন।

nusrat

আগামী ১৬ জুলাই কলকাতার বিরসা দাশগুপ্তের পরিচালনায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে ফারিয়ার ‘বিবাহ অভিযান’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এর আগে কলকাতার দর্শক সিনেমাটি উপভোগ করেছেন গত ২১ জুন। কলকাতার একক প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। আর সে কারণেই এটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের জন্য আমদানি করা হয়েছে। শুধু টিকেট কেটেই নয়, ফারিয়ার সিনেমা উপভোগ করতে তাকে আমদানিও করতে হবে। এটা সত্যিই ফারিয়া এবং জাজের জন্য ভীষণ একটি গর্বের বিষয়ও বটে। এই অভিনেত্রী বর্তমানে ব্যস্ত আছেন দীপঙ্কর দীপনের ঢাকা ২০৪০’ সিনেমার কাজে। এছাড়া ফারিয়া অভিনীত ‘শাহেনশাহ’ রয়েছে মুক্তির মিছিলে। সিনেমাটি গত রমজানের ঈদে মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও সেটা মুক্তি পায়নি। কারণ শাকিব খানের দুই সিনেমার যুদ্ধের মাঝে ‘শাহেনশাহ’র প্রযোজক সিনেমাটির ব্যবসায়ের দিকে তাকিয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন। ঈদের পর অবশ্য শোনা গিয়েছিল সিনেমাটি আগামী কোরবানীর ঈদে মুক্তি দেওয়া হবে। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে ভিন্ন খবর। এই ঈদেও শাকিব খানের অন্য সিনেমার কারণেই নাকি ‘শাহেনশাহ’ মুক্তি দিতে ভয় পাচ্ছেন শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার সেলিম খান।

এবার জানা যাক জাজের তৈরী অন্য সব শিল্পীদের বিষয়ে। একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বেশ ঘটা করেই ফারিয়াকে লঞ্চ করেছিলেন জাজ মাল্টিমিডিয়া। এর আগেও ঠিক একই ভাবে এই প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন দু’জন ছেলে-মেয়েকে লঞ্চ করা হয়েছিল। তারা হলেন চিত্রনায়ক বাপ্পি চৌধুরী এবং নায়িকা মাহিয়া মাহি। ২০১২ সালে জাজের প্রযোজনায় শাহিন সুমনের হাত ধরে রূপালী জগতে পথ চলতে শুরু করেন তারা। এরমধ্যে মাহিয়া মাহি ফারিয়ার মতোই দেশের কাঁটা তারের সীমানা পেরিয়ে হাজির হয়েছিলেন দাদাদের কাছে। অবশ্য মাহির সে দৌড়ের নেপথ্যে ছিলেন জাজের কর্ণধার আব্দুল আজিজই। মাহিকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পরিচিত করতে উঠে পড়ে লেগেছিলেন আব্দুল আজিজ। লোকসান কাঁধে নিয়েও একের পর এক যৌথ প্রযোজনায় মাহিকে নিয়ে নির্মাণ করেছেন একাধিক সিনেমা। এর কারণও রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতে প্রযোজক তখন নায়িকার প্রেমে বিভোর ছিলেন। যেটা পরে প্রকাশ পেয়েছে তাদের কর্মকান্ডেই। প্রযোজক-নায়িকার গোপন ওই সম্পর্কটি আজিজ স্বীকার না করলেও মাহি কিন্তু এক প্রকার স্বীকার করেই নিয়েছিলেন। মাহির স্বীকার করার পেছনের গল্প সবারই জানা। এরপর আজিজকে ছেড়ে মাহি তখন তার প্রেমের নৌকা ভিড়িয়েছিলেন সিলেটের সুরমা নদীর তীরে। দ্বিতীয়বারের মতো বিয়ে করে সংসার পাতেন সিলেটি মাহমুদ পারভেজ অপুর সঙ্গে। এরপরই ভাঙ্গণ সৃষ্টি হয় এই অভিনেত্রীর ক্যারিয়ারে। এর অনেক আগেই আজিজও তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন।

mahia

পরের ঘটনাও কারো অজানা নয়। বলা যায় একটি বিশাল সমুদ্রের মাঝে ছোট একটি তরী বেয়ে গন্তব্যহীন ভাবে ভেসে বেড়াচ্ছেন মাহি। আজ এই ঘাটে তো কাল অন্য ঘাটে। এভাবেই চলছে তার ক্যারিয়ার। এ অবস্থায় মাহির ভক্ত-দর্শকরা তার ক্যারিয়ারের শেষ দেখছেন পাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট অনেকেই আবার প্রশ্ন রেখে বলছেন, মাহির ক্যারিয়ার শেষ হতে আর বাকি কি? তারপরও মাঝে মধ্যে বৈশাখী হাওয়ার মাঝে কুঁপির আলোর মতোই জ¦লছে মাহির ক্যারিয়ার। মাহি বর্তমানে কাজ করছেন মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘আনন্দ অশ্রু’ সিনেমাতে। ইতোমধ্যেই সিনেমাটির কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। নির্মাতা সূত্রে জানা যায়, সব কিছু ঠিক থাকলে এ বছরই সিনেমাটি মুক্তি পাবে। অন্যদিকে গত ১৯ জুলাই এই মাহির ‘অবতার’ মুক্তির কথা থাকলেও সেটা শেষ পর্যন্ত প্রেক্ষাগৃহের পর্দায় দর্শক উপভোগ করবে পারেননি। এ অবস্থায় নতুন আর কোনো সিনেমাও হাতে নেই সিলেটি এই পুত্রবধূর।

bappy

জাজের আরেক সন্তান বাপ্পি চৌধুরীর অবস্থা একই। মাহি এবং ফারিয়ার মতো এতো নাম, ডাক ও আওয়াজ তৈরী করতে পারনেনি তিনি। দেশের সিনেমাতেই ভালো ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারছেন না। সেখানে তাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক সিনেমার কথাতো প্রযোজকরা ঘুনাক্ষরেও চিন্তা করতে পারেন না। ক্যারিয়ারে যে কয়টি সিনেমাতে বাপ্পি অভিনয় করেছেন তার মধ্যে বেশির ভাগ সিনেমায় গু ফ্লপের তকমা পেয়েছে। অবশ্য এই নায়কের প্রথম সিনেমা মুক্তির পর পরই তাকে নিয়ে সিনেমা বানানো বন্ধ করেছেন তার জন্মদাতা প্রতিষ্ঠান জাজ। এরপর জাজের বাইরে অনেক প্রযোজকই তাকে নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন। কিন্তু তাদের সবাইকেই তিনি নিরাস করেছেন। ব্যবসা দিতেতো ব্যর্থ হয়েছেনই। তার উপর আবার নানা ধরণের বায়না! ইন্ডাস্ট্রির অসংখ্য প্রযোজকের অভিযোগ রয়েছে বাপ্পি চৌধুরীর বিরুদ্ধে। সিনেমায় লগ্নিকৃত কোটি টাকা লোকসান হাসি মুখেই মানতে পারেন প্রযোজকরা। কিন্তু বাপ্পি যে পারিশ্রমিক দাবি করেন সেটা কোনো ভাবেই মানতে পারেন না কেউ। তারপরও শাকিব খানের নানা ধরণের অত্যাচারের মুখে অনেক প্রযোজকই বাপ্পিকে নিয়ে ধরেন বাজি। এই বাজি বছরে এখনও দু’এক বার ধরছেন হাতে গোনা কয়েকজন প্রযোজক। তবে আর কতো দিন? বাপ্পি চৌধুরী বর্তমানে অভিনয় করছেন দীপঙ্কর দীপনের ‘ঢাকা ২০৪০’ সিনেমাতে। সিনেমাটি নিয়ে তিনি বেশ আশাবাদী। যেটা এর আগেও তিনি তার গু ফ্লপ প্রতিটি সিনেমার ক্ষেত্রেই ছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। বাপ্পিকে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন খুব শিগগিরই আর কোনো প্রযোজক তাকে নিয়ে লোকসান গুনতে চাইবেন না। তার মানে বাপ্পি চৌধুরীর ব্যাগ গোছাতে হবে ইন্ডাস্ট্রি থেকে। কাঁথা-কম্বল গুছিয়ে গঞ্জের পোলা গঞ্জেই ফিরতে হবে।

siam-cherry

এবার দেখা যাক জাজের তৈরী অন্য শিল্পীরা কি করছেন। বিপাশা কবির, জলি, সিয়াম, পূজা চেরী, রোশান এবং ফারিনকে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে হাত ধরে হাটতে শিখিয়েছেন এই প্রতিষ্ঠানই। এরমধ্যে সিয়াম, পূজা চেরী এবং বিপাশা কবির কিছুটা প্রদীপ জালিয়ে রেখেছেন তাদের ক্যারিয়ারের। আর বাকিরা সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যেতে বসেছেন। অনেকেই ধারণা করছেন সিয়াম হয়তো একদিন সাইন করতে পারবেন। কারণ সেই কোয়ালিটি তার ভেতরে আছে। যেটার প্রমাণ ইতোমধ্যেই লক্ষ করা যাচ্ছে। কিন্তু বাকিরা হারিয়ে যেতে এখন সময়ের ব্যপার। সিয়াম বর্তমানে অভিনয় করছেন স্বনামধন্য নাট্যনির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীর প্রথম চলচ্চিত্র ‘বিশ্ব সুন্দরী’তে। পুরো দমেই চলছে সিনেমাটির কাজ। চয়নিকা চৌধুরী আশা প্রকাশ করেছেন এ বছর নভেম্বর অথবা ডিসেম্বরের দিকে সিনেমাটি মুক্তি দিতে পারবেন।

এতো গেল জাজের তৈরী শিল্পীদের অবস্থা। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে এতোগুলো শিল্পীদের জন্মদাতা প্রতিষ্ঠানটির এখন কি অবস্থা? দীর্ঘ দিন হতে যাচ্ছে জাজ মাল্টিমিডিয়া থেকে নতুন কোনো সিনেমা বানানো হয় না। কোনো পাত্তাই নেই প্রতিষ্ঠানটির। নিউজ সংগ্রহের জন্য বছর খানের আগেও যেখানে প্রতি দিনই প্রতিষ্ঠানটির দিকে নজর থাকতো বিনোদন সাংবাদিকদের। প্রতি নিয়তই যেখানে সংবাদপত্রের বিনোদন পাতায় স্থান পেত জাজ মাল্টিমিডিয়া সংশ্লিষ্ট নতুন নতুন খবর। সেখানে মাসের পর মাস চলে যাচ্ছে কিন্তু জাজের কোনো খবরই ছাপতে পারছেন না সাংবাদিকরা! এর কারণও অবশ্য অজানা নেই কারো। জাজের এমন র্দুদশার কারণ সয়ং প্রতিষ্ঠানটির কর্নধার আব্দুল আজিজ নিজেই! হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় তিনি এখন দেশ ছাড়া! জাজ তো দুরে থাক! দেশেই ঢুকতে পারছেন না তিনি! এ অবস্থায় জাজ মাল্টিমিডিয়ার হাল ধরেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আলিমুল্লাহ খোকন।

ইতোমধ্যেই জাজের অফিসও পরিবর্তন করা হয়েছে। আগের বিল্ডিংটি ভেঙে ফেলার কারণে খোকনের তত্ত্বাবধানে জাজের স্থায়ী ঠিকানা হয়েছে অন্য কোথাও। সংশ্লিষ্ট অনেকেই প্রভাবশালী এই প্রযোজনা সংস্থার নতুন অফিসটিও পর্যন্ত চেনেন না এখন। যেখানে শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, এই অঙ্গনের ভারতেরও অসংখ্য মানুষই চিনতেন জাজের অফিস। আজিজের এই মামলাটি যেন সব কিছুকে এক নিমেষেই লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিকের নামে মামলা হওয়ার কারণে লোক চক্ষুর আড়ালে থাকার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে জড়িতরা। বর্তমানে আলিমুল্লাহ খোকনের পরিচালনাতেই নতুন অফিসে চলছে জাজের প্রজেকশন মেশিন সহ অন্যান্য ব্যবসা। তবে সিনেমা আর নির্মাণ হচ্ছে না। কিন্তু সম্প্রতি একটি ঘোষণা পাওয়া গিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি থেকে। অবশ্য অনেক আগেই এই ঘোষণা এসেছিল জাজের থেকে। প্রতিষ্ঠানটি থেকে খুব শীঘ্রই নাকি ‘মাসুদ রানা’ চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে শুরু হতে যাচ্ছে। প্রায় ৮৫ কোটি টাকা বাজেটের এই সিনেমাটি পরিচালনা করবেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হলিউড নির্মাতা আসিফ আকবর।
জাজ মাল্টিমিডিয়ার বর্তমান অবস্থা এবং প্রতিষ্ঠানটির কর্নধার আব্দুল আজিজের সম্পর্কে জানতে আজ বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরে ইনকিলাবের সঙ্গে কথা হয় মোহাম্মদ আলিমুল্লাহ খোকনের। তিনি বলেন, ‘জাজ মাল্টিমিডিয়া আপন মনেই তার সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির কর্নধার আব্দুল আজিজের অন্য কোনো ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের কোনো ধরণের সম্পর্ক ছিল না। এবং এখনও নেই। আমি এটার প্রধান নির্বাহী হিসেবে অক্ষরে অক্ষরে আমার দায়িত্ব পালনের যথেষ্ট চেষ্টা করছি। আর সে কারণেই বলছি জাজ মাল্টিমিডিয়া আগের মতো বা আগের চেয়েও ভালো ভাবেই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে আমার সঙ্গে আছেন অভিনেতা নাদের চৌধুরী। নাদের চৌধুরী সম্পর্কে আব্দুল আজিজের ভাইরা ভাই। তিনি জাজ মাল্টিমিডিয়ার উপদেষ্টা হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির সকল ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।’

খোকন আরও বলেন, ‘জাজ থেকে কয়েক দিনের মধ্যেই ‘মাসুদ রানা’ সিনেমার শুটিং আরম্ভ হতে যাচ্ছে। যদিও সিনেমাটির আসল প্রযোজক হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। মূলত তার অর্থায়নেই সিনেমাটি নির্মিত হচ্ছে। জাজ সিনেমাটির সহ-প্রযোজকের দায়িত্ব পালন করবেন এটা সত্যি। তবে সেটা শুধুই বাংলাদেশ অংশের। মেইন প্রডাকশন হাউজের সঙ্গে জাজের কর্নধার আব্দুল আজিজের কি ডিল হয়েছিল সেটা আমার অজানা। আমি শুধু জানি ‘মাসুদ রানা’র বাংলাদেশের স্বত্ব আমাদের প্রতিষ্ঠানের। সিনেমাটি এদেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে আমরাই ডিস্ট্রিবিউট করবো। আমার জানা মতে ডিস্ট্রিবিউট করার জন্যই মূলত সহযোগী প্রযোজক হিসেবে জাজের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। সিনেমাটির প্রকৃত প্রযোজক চান বাংলাদেশের স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুক। আর সে কারণে তাদের ইচ্ছাতেই সিনেমাটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। খুব শীঘ্রই সিনেমাটির শুটিং শুরু হবে। এখন লোকেশন দেখার কাজ চলছে পুরো দমে। সম্ভবনা রয়েছে মরিশাস, থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশে সিনেমাটির শুটিং করার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি লোকেশনেও করা হবে এর শুটিং।

আব্দুল আজিজ সম্পর্কে খোকন বলেন, ‘আমাদের কর্নধার আজিজ কোথায় কিভাবে আছেন সেটা একদমই বলতে পারবো না। কারণ সত্যি করেই বলছি তার সঠিক ইনফরমেশন আমি জানিও না। তবে আমার বিশ্বাস তিনি যেখানেই থাকুক না কেনো জাজ নিয়ে নিশ্চিন্তেই আছেন। এর বড় কারণ আমি নিজেই। আজিজ জানেন আমি তার প্রতিষ্ঠানটিকে আগলেই রাখছি।’



 

Show all comments
  • Ashik ২৪ জুলাই, ২০১৯, ১১:০৪ পিএম says : 0
    বাট মহা নায়ক মান্নার নূন্যতম পাশাপাশি থাকা কিংবা ধারে কাছএ একটা নায়ক হতে পারএ নি,,
    Total Reply(0) Reply
  • মেহেদী মাজহার ৫ মে, ২০২০, ৮:৫২ এএম says : 0
    এই প্রোডাকশন হাউজটির প্রতি অনেক ভালোবাসা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ