পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
কারাবন্দি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির স্বামী রিফাত শরীফ একটি সংঘবদ্ধ ঘাতক দলের নেতা নয়ন বন্ড এবং তার সাংগাৎদের চাপাতির কোপে নিহত হয়েছেন। ২ জুন রবিবার যখন রিফাত শরীফকে হত্যা করা হয় তখন একজন দুজন নয়, সেই হত্যাকান্ডে ১৪/১৫ জন অংশ নেয়। এই হত্যাকান্ড ঘটেছিল প্রকাশ্যে দিবালোকে। হত্যাকান্ডের ভিডিওতে দেখা যায় যে স্বামীকে রক্ষা করার জন্য রিফাতের স্ত্রী মিন্নি ঘাতকদের কাছে ছুটে যায় এবং তার স্বামীকে আঘাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সবই ব্যর্থ হয়। ০০৭ নামের একটি ঘাতক গ্যাংয়ের নেতা নয়ন বন্ড এবং তার সাঙ্গ পাঙ্গদের অস্ত্রাঘাতে রিফাত শরীফ নিহত হন। নয়ন বন্ডের দলটি যে একটি ঘাতক গোষ্ঠী হিসাবে গড়ে উঠছিলো সেটির প্রমাণ পাওয়া যায় তাদের নামকরণ থেকে। বাংলাদেশে এই ধরণের ক্রাইমের একটি দুর্ধর্ষ এবং রোমাঞ্চকর ছবি দেখানো হয় বহু বছর আগে ঢাকার নাজ সিনোমায়। ছবিটি ছিলো জেমস বন্ড সিরিজের। সিরিজটির নাম ছিলো ০০৭ জেমস বন্ড। এই সিরিজের প্রথম ছবি ছিলো ‘ড. নো’। জেমস বন্ড সিরিজের আদলেই নয়নদের গ্রুপের কোড নেম হয় ০০৭ এবং জেমস বন্ডের নামের শেষ অংশটি ঘাতক নয়নের নামের শেষ অংশে জুড়ে দিয়ে করা হয় নয়ন বন্ড।
প্রকাশ্য দিবালোকে রিফাত শরীফের এই বিভৎস হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে সারা দেশে তোলপাড় শুরু হয়। যেহেতু অদূরে দন্ডায়মান কিছু সংখ্যক দর্শক হত্যাকান্ডের ভিডিও ধারণ করেছে তাই সেই ভিডিওটিও তৎক্ষনাৎ ভাইরাল হয়ে যায়। নয়ন বন্ডের অপরাধ চাপা দেওয়ার আর কোনো সুযোগ থাকে না। নয়ন বন্ড এবং তার গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অনেক কু কীর্তি এবং অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ আসতে থাকে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং অপহরণেরও অভিযোগ ওঠে। যাই হোক, এমন একটি পটভূমিতে ২ জুলাইয়ের সংবাদপত্রে একটি চাঞ্চল্যকর সংবাদ দেখা যায়। ঐ সংবাদে বলা হয় যে আগের রাত্রে নয়ন বন্ড পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে।
নয়ন বন্ডের এই হত্যাকান্ডে শিক্ষিত এবং সুশীল সমাজ চমকে ওঠেন। তারা বলেন ঘাতক দলের নেতা হিসাবে নয়ন বন্ড অনেক কিছুই জানতো। এই দলের প্রধান কে অর্থাৎ ডন কোন ব্যক্তি, কারা তাদেরকে অস্ত্র জোগাতো, রিফাতকে কেন এবং কিভাবে হত্যা করা হলো- ইত্যাকার সবকিছুই নয়ন বন্ড জানতো। নয়ন বন্ডকে হত্যা করে শুধু এক ব্যক্তিকেই দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো না, বরং নয়নের কাছে ঐ এলাকার যতো কুকীর্তি এবং অপরাধের তথ্য ছিলো সেই সব তথ্যকেও চিরতরে চাপা দেওয়া হয়।
নয়ন বন্ডের হত্যার পর থেকেই রিফাত হত্যাকান্ড অকস্মাৎ ভিন্ন মোড় নিতে থাকে। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, যিনি হলেন রিফাত শরীফ হত্যাকান্ডের প্রধান স্বাক্ষী, তার বিরুদ্ধে অনেক অনৈতিক এবং চারিত্রিক স্খলনের অভিযোগ আনা হয়। এমনও বলা হয় যে এর আগে নাকি নয়ন বন্ডের সাথে মিন্নির বিয়ে হয়েছিলো। কিন্তু এসব অভিযোগের পক্ষে কেউ কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। আর একটি বিষয় সকলের নজরে আসে যে সভা সমিতি করে মিন্নির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে এবং মিন্নির চরিত্র হরণ করা হচ্ছে। আর এগুলোর রিং লিডার হচ্ছে বরগুনার স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথ শম্ভু। সে জেলা আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির একজন সদস্য এবং গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা। অনুসন্ধানে সাংবাদিকরা ঘটনার অনেক ভেতরে যেতে থাকেন এবং যেতে যেতে এই অপরাধী চক্রের শেকড়ে পৌঁছেন। সেখানে তারা এমন এক ব্যক্তিকে দেখতে পান যিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং যাকে পুলিশ টাচ করতে পারে না। নয়ন বন্ডের সমর্থকরা মিন্নির চরিত্র হরণ করে প্রচারণা শুরু করলে এই হত্যাকান্ড ভিন্ন মোড় নেয়।
দুই
আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হলেন রিফাত হত্যা মামলার প্রধান স্বাক্ষী। স্বাক্ষীকে সাধারণত মামলার শুনানি কালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং তাকে জেরা করা হয়। মিন্নির ক্ষেত্রেও সেটি হবে বলে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা আশা করছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন আগে মিন্নির বাসায় পুলিশ আসে, মিন্নির মা এবং মিন্নিকে জেরা করে এবং তারপর পুলিশ ভ্যানে উঠিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ ভ্যানে উঠানোর সময় যখন জনগণ সেখানে জড়ো হয় এবং ভ্যানে উঠানোর কারণ জানতে চায় তখন পুলিশ বলে যে অধিকতর জেরার জন্য তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। থানায় নিয়ে সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পর পুলিশের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয় যে এই হত্যাকান্ডের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মিন্নিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবেই অতি সুকৌশলে মিন্নিকে গ্রেফতার করা হয়। একই দিন রাত ১২টার দিকে ঘোষণা করা হয় যে পুলিশ মিন্নির ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলো। কিন্তু আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। সুতরাং দেখা যায় যে রিফাত হত্যার প্রধান স্বাক্ষী মিন্নি ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হচ্ছে প্রধান আসামীতে অথবা তার সহযোগীতে।
মামলাটি যখন সবে মাত্র তদন্তনাধীন তখন পুলিশের সিনিয়র অফিসার এমনকি বরগুনার এসপিও বলেন যে, এই হত্যাকান্ডের সাথে মিন্নির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সে এই হত্যাকান্ডের পরিকল্পনার সাথেও মিন্নি নাকি জড়িত ছিলেন। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে রিফাত হত্যাকান্ড প্রথমের দিকে সহজ বিষয় ছিলো। সেটি এখন আর সহজ থাকছে না। ক্রমান্বয়ে বিষয়টিকে জটিল রূপ দেওয়া হচ্ছে। ১০ মুখে এবং ১০ কানে এই কথা ছড়িয়ে গেলো যে, রিফাত শরীফের হত্যাকান্ডের পেছনে রয়েছে একজন বড় গডফাদার। তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী। নেপথ্য থেকে তিনি কলকাঠি নাড়ছেন। তাই মামলার মোড় ঘুরে যাচ্ছে।
দুই একদিন পরেই তার রিফ্লেকশন দেখা যায়। মিন্নির জামিনের জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো যে, বরগুনার কোনো আইনজীবীই মিন্নির পক্ষে আইনী লড়াই করার জন্য এগিয়ে আসছেন না। যে তিন জন আইনজীবীর আসার কথা ছিল তারাও সেদিন আদালতের বারান্দা থেকে কেটে পড়েন। মিন্নির আত্মীয় স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবরা অভিযোগ করেন যে ঐ প্রভাবশালী মহলটির হাত এত লম্বা এবং এত সক্রিয় যে সেই হাত আইনজীবীদেরকেও ছুতে পেরেছে। তাই আইনজীবীরা আর মিন্নির পক্ষে এজলাসে দাঁড়াতে সাহস পাচ্ছেন না। এমন একটি অবস্থায় ঢাকা থেকে আইনজীবীরা বরগুনা যান এবং রবিবার বরগুনার জেষ্ঠ্য বিচারিক আদালতে জামিন চান। কিন্তু সেই জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়। একজন মহিলা যে প্রত্যক্ষভাবে কোনো অপরাধের সাথে জড়িত নয় তার ক্ষেত্রে জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যান একটি অকল্পনীয় ব্যাপার।
এসব খবর যখন মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে তখন অন লাইন নিউজ পোর্টালে দুইটি চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। গত ২১ জুলাই রবিবার একটি সরকারপন্থী অন লাইন নিউজ পোর্টালে দুইটি চাঞ্চল্যকর খবর বেরিয়েছে। প্রথম খবরটির শিরোনাম,‘শম্ভুর সঙ্গে মিন্নির আইনজীবীর রুদ্ধদ্বার বৈঠক’। খবরে বলা হয়, বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় শুরু থেকেই আলোচনায় আসেন বরগুনা ১ আসনে সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। এই হত্যা কান্ডের সাথে তার ছেলে সুনাম দেবনাথের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন সরাসরিই বলেছেন, নিজের ছেলে সুনাম দেবনাথকে বাঁচাতেই শম্ভু এই মামলায় প্রভাব খাটাচ্ছেন।
সেই শম্ভুর সঙ্গে গত শনিবার রাতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন মিন্নির সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম। একটি সূত্র জানিয়েছে, গত শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বরগুনা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান নান্টু এবং সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী আসলামকে শম্ভুর চেম্বারের ভেতরে প্রবেশ করতে দেখা যায়। সে সময় ঐ কক্ষে শম্ভুর পুত্র সুনাম দেবনাথ ও বরগুনার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আক্তারুজ্জামান বাহাদুরও উপস্থিত ছিলেন। তারা কক্ষের ভেতরে প্রবেশের পর ভেতর থেকে সুনাম দরজা আটকে দেন। আধা ঘন্টা বৈঠক শেষে রাত ১০টা ১৫ মিনিটে মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম, বারের সভাপতি আব্দুর রহমান নান্টু ও বরগুনার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুর রহমান বাহার সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
অপর সংবাদটির শিরোনাম হলো,‘শম্ভুর দরজায় রিফাতের বাবা, নেপথ্যে কী?’ খবরে বলা হয়, বরগুনা ১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ব্যক্তিগত ল’ চেম্বারে গিয়েছিলেন নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ। গতকাল রাত ১০টা নাগাদ তিনি শম্ভুর চেম্বারের পেছনের একটি কক্ষের দরজায় হাজির হন। ভেতরে তখন রিফাত হত্যা মামলার আসামী মিন্নির আইনজীবীর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছিলেন শম্ভু। তার ছেলে সুনাম দেবনাথও সেখানে ছিলেন। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন শম্ভুর চেম্বারের বাইরে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন দুলাল শরীফ। এক সময় চেম্বারের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন সুনাম দেবনাথ। তিনি দুলাল শরীফের কানে কানে কিছু কথা বলেন। এর পর সেখান থেকে চলে যান দুলাল শরীফ।
তিন
গত শুক্রবার পুলিশের বক্তব্য মতে, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবান বন্দী দিয়েছেন। আদালতকক্ষে যখন আয়েশা সিদ্দিকার জবাবন্দি গ্রহণ চলছিলো, তখন (সন্ধ্যা পৌনে ৬টা) তাঁর বাবা মোজাম্মেল হোসেন আদালত প্রাঙ্গণে ছুটে যান। তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘ সব শম্ভুবাবুর খেলা। শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথ (জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক) মাদকের সম্রাট। তাঁর পোলারে সেভ করার জন্য আজকে আমরা বলি হইয়া যাইতেছি। সব শম্ভু করায়। শম্ভু, শম্ভু, শম্ভু আর শম্ভুর ছেলে। আর এই খুনের সাথে জড়িত যারা, তারা একত্রিত হয়ে এগুলো করতেছে’।
রিফাত শরীফ হত্যাকান্ড নিয়ে পুলিশ যা বলতে বলেছে, আদালতে তা-ই বলেছেন আয়শা সিদ্দিকা। না বললে আরও ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হবে বলে হুমকি দেন পুলিশ কর্মকর্তারা। গত শনিবার আয়শার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বরগুনা জেলা কারাগারের ফটকে মেয়ের সঙ্গে দেখা করে এসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। মোজাম্মেল আরও বলেন, ‘স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে কী বলেছে, তা মেয়ের কাছে জানতে চেয়েছি। জবাবে সে বলেছে, পুলিশ যেভাবে বলতে বলেছে, জবানবন্দিতে সেভাবেই বলেছি।’ কাঁদতে কাঁদতে মোজাম্মেল হোসেন বলতে থাকেন, ‘ আজকে সাক্ষী বিবাদীর কাঠগড়ায়। নির্যাতন করে, হুমকি দিয়ে, ভয়ভীতি দেখাইয়া জবানবন্দি নিতেছে। আমার পরিবার এখন গৃহবন্দী। আমার ছেলে মেয়ের স্কুল কলেজ বন্ধ। হাটবাজার বন্ধ। জীবন নিয়া খেলা চলছে।’ তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত্র ১০টার দিকে পুলিশের উপপরিদর্শক ওবায়দুল তাঁর বাসায় গিয়ে আয়শার চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র নিয়ে আসেন। আর গতকাল জোরজবরদস্তি করে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
মিন্নির পিতা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর মিন্নির উদ্ধৃতি দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, রিমান্ডে নিয়ে মিন্নির ওপর শারিরীক নির্যাতন করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে, পুলিশের শেখানো জবানবন্দি না দিলে আবারও মিন্নিকে রিমান্ডে নেওয়া হবে। বলা হয়েছে যে আওয়ামী লীগের এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর পুত্র সুনাম দেবনাথ বরগুনার মাদক সম্রাট। সে নয়ন বন্ড বাহিনীর আসল শক্তি। তাকে বাঁচাবার জন্যই সরকারি দল প্রশাসনের ওপর চাপ দিচ্ছে।
এর আগে বরগুনার পুলিশ সুপার বলেন যে, জেরা করার সময় মিন্নি এই হত্যাকান্ডে তার সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছে। পরবর্তীকালে সাংবাদিকরা তাকে আরও প্রশ্ন করলে তিনি বলেন যে, কথাটি তিনি ঠিক ঐ ভাবে বলেননি।
এই পটভূমিতে মানুষের কথা, তারা শুধু পুলিশের কথা বিশ্বাস করবে কেন। পুলিশরা সাংবাদিক সন্মেলন করে সাংবাদিকদের কাছে মিন্নি জড়িত থাকার কথা বলছে। পুলিশ যদি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলতে পারে তাহলে মিন্নিকেও সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হোক। কারণ বহুদিন থেকে মানুষ পুলিশের একতরফা কথা শুনে আর বিশ্বাস করতে চায় না। এই সরকার সাম্প্রতিককালে সুশাসনের কথা বলছে। তারা যদি সত্যি সত্যিই সুশাসন চায় তাহলে পুলিশের হাত থেকে তদন্তটি বিচার বিভাগে, না হলে নিদেন পক্ষে, পিআইবির হাতে দেওয়া হোক। তাহলে পূর্ণ সত্য না হলেও অর্ধ সত্য বেরিয়ে আসবে।
মিন্নিকে নিয়ে জবর রাজনৈতিক খেলা শুরু হয়ে গেছে। এই খেলার শেষ কোথায় তা দেখার জন্য মানুষ আগ্রহ ভরে তাকিয়ে আছে।
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।