বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রবীণ শিক্ষক প্রফেসর অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার ঘটনায় দায়সারা ব্যবস্থা নিলো চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় ২১ শিক্ষার্থীর জড়িত থাকার অভিযোগ থাকলেও মাত্র চারজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএসটিসির প্রক্টর কাজী নুর-ই-আলম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গ্রেফতার মাহমুদুল হাসানকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। মো. শেখ রাসেল শাহেন শাহ, মো. মইনুল আলম এবং মোহাম্মদ আলী হোসাইন নামে তিন ছাত্রকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ জুলাই পর্যন্ত সময়ও দিয়েছে ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণি, শেখ রাসেল একই বিভাগের সপ্তম সেমিস্টার এবং মইনুল ও আলী স্নাতকোত্তর শ্রেণির দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চারজনের অপরাধ পেলেও পুলিশের তদন্ত এখনো ঘটনার পর গ্রেফতার একজনের মধ্যেই আটকে আছে। এতে শিক্ষকের গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যাচেষ্টার মতো একটি গুরুতর অপরাধের তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার নয়দিন পরেও পুলিশ জড়িত অন্য কাউকে গ্রেফতার করেনি।
গত ২ জুলাই নগরীর খুলশীতে ইউএসটিসি ক্যাম্পাসে ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদকে অফিস থেকে টেনে বের করে রাস্তায় নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে লাঞ্ছিত করে একদল শিক্ষার্থী। এরপর ওই শিক্ষার্থীরাই আবার নগরীর খুলশীতে ইউএসটিসি ক্যাম্পাসের সামনে এক ঘন্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ ঘটনার পর পুলিশ ইউএসটিসির ক্যাম্পাস থেকে মাহমুদুল হাসানকে গ্রেফতার করে। রাতে ইউএসটিসির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দিলীপ কুমার বড়ুয়া বাদি হয়ে নগরীর খুলশী থানায় ‘কেরোসিন ঢেলে শিক্ষককে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে’ মামলা দায়ের করেন। মামলায় শুধুমাত্র মাহমুদুলকে আসামি করা হয়। তাকে দুই দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
এছাড়া ঘটনা তদন্তে ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি গত ৮ জুলাই ইউএসটিসির ভিসির কাছে ঘটনায় চারজন জড়িত মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করে।
এদিকে প্রফেসর মাসুদ মাহমুদ ইউএসটিসি’র অভ্যন্তরীণ তদন্ত ও চার ছাত্রের বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থা প্রত্যাখান করেছেন। তিনি বলেছেন, এই তদন্ত অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের ‘খুশি করার’ তদন্ত। পুলিশের ভূমিকায়ও ক্ষোভ প্রকাশ তিনি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত কমিটি ঘটনার শিকার হিসেবে আমার বক্তব্য নিয়েছিল। আমি সুনির্দিষ্টভাবে ২১ জনের নাম বলেছিলাম, যারা অতীতে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছিল। যেসব মেয়েরা আমার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মতো অসত্য অভিযোগ এনেছিল, যারা কোনোদিন আমার ক্লাসও করেনি, সেই মেয়েগুলোর বিরুদ্ধে তো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হল না। তারাই তো পরে আমাকে অপমান করেছে। ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হল না। এটা আমাকে অপমান করার সঙ্গে জড়িত ছাত্র-ছাত্রীদের খুশি করার তদন্ত।
তিনি বলেন, ভিকটিম হিসেবে গত ৯ দিনে পুলিশ আমার কাছ থেকে কোনো বক্তব্য নেয়নি। আমি নিজ থেকে তাদের বলেছি- ঘটনার সঙ্গে ২১ জন জড়িত। তাদের নামও বলেছি। কিন্তু পুলিশ একজনকে গ্রেফতারের পর আর কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।