বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয় শিবিরের ২৫ হাজার পরিবারের প্রায় দেড়লাখ রোহিঙ্গা দিন কাটাচ্ছেন পাহাড়ধস ও বন্যার আতংকে। গত পাঁচদিনে মৃত্যু হয়েছে শিশুসহ তিনজনের। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩ হাজারের বেশি বসতঘর।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম এর হিসাব মতে, পাঁচদিনের ভারী বর্ষণ এবং ঝড়ো হাওয়ায় উখিয়া-টেকনাফে ভূমিধসে এক হাজার ১৮৬টি, বন্যায় ২১৬টি এবং ঝড়ো হাওয়ায় এক হাজার ৮৪০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ১৫ হাজার ৫৩৪ জন রোহিঙ্গা। এছাড়াও ক্যাম্পগুলোতে ৩৯১টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে এবং ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে ৫১ বার। ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক পরিমাণ এরইমধ্যে ২০১৮ সালের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়িয়েছে।
গত ৩ থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত সময়ে ৫১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে কুতুপালং মেঘা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। আরেকটি বড় ক্যাম্প, ‘ক্যাম্প ১৬’তে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫৩০ মিলিমিটার। পাঁচদিনের এই প্রবল বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়ার কারণে প্রায় তিনহাজার রোহিঙ্গা তাদের আশ্রয়স্থল হারিয়েছেন।
উখিয়া থানা পুলিশ জানায়, ভূমিধসে নিহতরা হলেন কুতুপালং ২ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক ডি এর মৃত আবু বক্করের স্ত্রী মোস্তফা খাতুন (৫০), উখিয়া হাকিমপাড়া ক্যাম্পের মোহাম্মদ হামিম (৮) ও মধুরছড়া ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহীম (৭)। তিনজনের মৃত্যু ছাড়াও বিভিন্নভাবে আহত হয়েছেন আরো অন্তত ২০ জন।
এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের সেক্রেটারি ছৈয়দ উল্লাহ বলেন, প্রায় সবগুলো রোহিঙ্গা ক্যাম্পই পাহাড়ি এলাকায়। আর বেশিরভাগ বাড়ি-ঘর করা হয়েছে পাহাড় কেটে। যে কারণে বৃষ্টি শুরু হলেই রোহিঙ্গারা আতংকিত হয়ে পড়েন।
শরণার্থী শিবিরে ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, গত বর্ষায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসরতদের মধ্যে থেকে আমরা এরইমধ্যে ১৫ হাজার পরিবারের ৫০ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছি। আরো প্রায় সাড়ে চার হাজার পরিবার আছে রাস্তাঘাটে চলাচল সমস্যা এবং পাহাড়ধসের অতিমাত্রায় ঝুঁকিতে রয়েছে। এদের তালিকা তৈরি এবং অন্যত্র সরানোর পরিকল্পনা চলছে।
তিনি বলেন, যেহেতু রোহিঙ্গা বসতিগুলো পাহাড়ি এলাকায়, তাই ভারী বর্ষণ হলেই সেখানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। যে কারণে কিছুটা ঝুঁকি থাকেই। এ ধরনের সমস্যা থেকে শতভাগ উত্তরণ আসলেই সম্ভব নয়। তবে এই বর্ষায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, সর্বশেষ গত এক সপ্তাহে তিনজনের মৃত্যুসহ রোহিঙ্গারা এখানে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে পাহাড়ধস, মাটিচাপা, গাছ পড়ে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, ক্যাম্পে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগে যাতে প্রাণহানি না ঘটে সেজন্য কাজ করছে পুলিশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।