নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শুরু থেকেই এবারের কোপা আমেরিকার সঙ্গী বিতর্ক। আর্জেন্টিনা অধিনায়ক লিওনেল মেসিসহ স্বয়ং স্বাগতিক ব্রাজিল দলের খেলোয়াড়রাও মাঠের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেটা সবার ক্ষেত্রেই প্রযোগ্য হওয়ায় তা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু একের পর এক রেফারিদের প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত আসরকে করে তুলেছে আরও কলঙ্কময়। বিশেষ করে পরশু চিলি-আর্জেন্টিনা তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে যা ঘটল এর পর রেফারির কা-জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জোরেশোরে।
ম্যাচের ৩৭তম মিনিটে চিলির বিপদসীমায় বল দখলের লড়াই গ্যারি মেডেলকে ধাক্কা মারেন মেসি। ফুটবলে যা খুবই সাধারণ ঘটনা। ধাক্কাটা ফাউল হওয়ার মতও নয়। ঘুরে এসে ক্ষিপ্র ষাড়ের ন্যায় মেসিকে গুতোতে থাকেন মেডেল। প্রতিক্রিয়া জানানোর বিপরীতে মেসি দুই হাত উঁচু করে এক দুই পা করে পেছাচ্ছিলেন। কিন্তু রেফারি এসে সরাসরি লাল কার্ড দেখান দুজনকেই। ভিএআরের সহায়তা নেয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি রেফারি মারিও দিয়াজ দে রিভার।
কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যেছে লাল কার্ড পাওয়ার মতো অপরাধ করেননি মেসি। এমনকি মেডেলও বড়জোর হলুদ কার্ড পেতে পারতেন। যে কারণে ভিএআর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জোরেশোরে। এমন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কী রেফারি ভিএআরের সহায়তা নিতে পারতেন না?
ম্যাচটি ২-১ ব্যবধানে জেতে আর্জেন্টিনা। ম্যাচ শেষে রেফারির প্রতি আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনির প্রশ্ন, ‘মেসি যে লাল কার্ড পেল, তার অপরাধ কী সেটাই বুঝতে পারছি না।’ অফিশিয়ালের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল উল্লেখ করে স্কালোনি বলেন, ‘সেদিনের তুলনায় আজকের ম্যাচটা বেশি অদ্ভুত। কোপায় ভিএআর ব্যবহারের মানদ- আমি এখনো ঠিক বুঝতে পারছি না। হয় এ মানদ- ভুল কিংবা রেফারিরা একমত হতে পারছেন না। আমার মনে হয় না ভিএআর তারা ঠিকঠাক বুঝতে পারছে।’
রেফারি কাণ্ডে অবাক চিলির গোলদাতা আতুরো ভিদালও, ‘কিভাবে তিনি সামান্য ধাক্কার জন্য দুজনকে মাঠ থেকে বের করে দিতে পারেন?’ ‘এটা গুরুতর কিছু ছিল না।’ ‘দুজন বুক দিয়ে ধাক্কাধাক্কি করলে লাল কার্ড দেখানো যায় না।’ স্কালোনির মত ভিদালও ভিএআর নিয়ে প্রশ্ন তুলেন মিক্সড জোনে, ‘ইউরোপে ভিএআর ভিন্নভাবে ব্যবহার হয়, দক্ষিণ আমেরিকায় এটা তাদের শিখতে হবে।’
আসরে ভিএআরের মান প্রশ্নবিদ্ধ হয় গ্রুপ পর্বে জাপান-উরুগুয়ে ম্যাচে। ভিএআরের সহায়তা নিয়ে উরুগুয়েকে বিতর্কিত পেনাল্টি উপহার দেন রেফারি। ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা সেই পেনাল্টি গোলে সমতায় ফেরে। আর সেমিফাইনালে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচে তো রেফারি ব্রাজিলের হয়ে বাঁশি বাজিয়েছেন বলে অভিযোগ। আর্জেন্টিনার দুই দুটি পেনাল্টির দাবি আমলেই নেননি রেফারি। অথচ দুবারই পেনাল্টি পাওয়ার মত অবস্থায় ছিল আর্জেন্টিনা।
ম্যাচ শেষে কোচ ও খেলোয়াড়রা রেফারির উপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। অর্জোন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) আনুষ্ঠানিকভাবে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবলে অভিযোগও করে। আর্জেন্টিনার এই অভিযোগ যুক্তিযুক্ত বলে মত দেন স্বয়ং ব্রাজিলের ব্যালন ডি অর ও বিশ্বকাপজয়ী তারকা রিভালদো। চিলি মিডফিল্ডার ভিদাল বলেন, ‘আমি মনে করি এটা (ভিএআর) আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গেছে যেদিন তারা ব্রাজিলের বিপক্ষে খেলে।’
এদিকে চোখ কপালে তোলার মত তথ্য দিয়েছে ব্রাজিলের ‘গ্লোবো স্পোর্তে’ নামের এক সংবাদমাধ্যম। তাদের দাবি- ‘সেমি ফাইনালের ম্যাচটি স্টেডিয়ামে বসে দেখছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ার বোলসোনারো। এ ম্যাচে ভিডিও অপারেটিং (ভিএআর) কক্ষ আর মাঠ অফিসিয়ালদের মধ্যে যোগাযোগে হস্তক্ষেপ করেচিলেন ব্রাজিল প্রেসিডেন্টের নিরাপাত্তাকর্মীরা।’ যে প্রতিষ্ঠান কোপায় ভিএআর প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে তাদের কাছে এর কারণ জানতে চেয়েছে এএফএ।
এদিকে গত রাতে হওয়া ব্রাজিল-পেরু ফাইনালের রেফারি রবার্তো টোবারকে নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। দেশটির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ২০১২ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে পাতানো ম্যাচ পরিচালনার অভিযোগে আট মাসের জন্য ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন চিলির এই রেফারি। সে সময় পোকার ক্লাবে তাস খেলায় যিনি হারতেন তাকে পাতানো ম্যাচ পরিচালনার দায়ীত্ব দেওয়া হতো। টোবার এই চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
সবকিছু বুঝে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক মেসি বলেছেন, কোপার শিরোপা ব্রাজিলের হাতে তুলে দেওয়ার আয়োজন করেছে লাতিন ফুটবল কতৃপক্ষ কনমেবল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।