মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গাছ লাগাতে হবে অন্তত এক লাখ কোটি। খুব দ্রুত। তবেই আমার, আপনার শ্বাসের বাতাসের বিষ কমবে। আমাদের বায়ুমণ্ডল হয়ে উঠবে ১০০ বছর আগেকার মতো।
মাথায় রাখতে হবে, গাছ লাগালেই বাঁচবেন। না হলে যে হারে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে, তাতে ফুলে-ফেঁপে ওঠা সমুদ্রের জলেই তলিয়ে যেতে হবে আমাদের। কারণ, উষ্ণায়নের জেরে বরফ গলছে অস্বাভাবিক দ্রুত হারে। আর বিশ্বজোড়া শিল্পায়নের দৌলতে বাতাস ভয়ঙ্কর ভাবে বিষিয়ে উঠছে কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড-সহ নানা ধরনের গ্রিন হাউস গ্যাসে। যা তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে পৃথিবীর। সুইৎজারল্যান্ডের জুরিখে সুইস ফেডারাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (ইটিএইচ জুরিখ) সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই কথা জানিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সায়েন্স’-এ।
এক লাখ কোটি গাছ বসানোর কথা ভাবলে প্রশ্ন আসে, অত জায়গা কি আছে পৃথিবীতে? তবে গাছ বসাতে জমির অভাব হবে না, জানাল গবেষণা। ওই গবেষণা হিসাব করে দেখিয়েছে, যদি সদিচ্ছা আর আন্তরিকতা থাকে দ্রুত এক লাখ কোটি গাছ বসিয়ে ফেলার, তা হলে, অন্তত জায়গার অভাবে সেই সব গাছের বেড়ে উঠতে ও বেঁচে থাকতে কোনওই অসুবিধা হবে না।
পৃথিবীর স্থলভাগের যতটা নিয়েছে শহর আর গ্রামগুলি, চাষাবাদের জন্য সেই জমিতে যতটা ভাগ বসানো হয়েছে, তাকে হিসাবের বাইরে রেখেও গবেষকরা দেখিয়েছেন, গাছ বসানোর জন্য ৩৫ লাখ বর্গ মাইল বা ৯০ লাখ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পড়ে রয়েছে পৃথিবীতে। জায়গাটা মোটেই কম নয় কিন্তু। গবেষণা এও জানিয়েছে, প্রচুর পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ফলে বায়ুমণ্ডলে যে পরিমাণে কার্বন জমা হয়েছে, এক লাখ কোটি গাছ খুব তড়িঘড়ি বসিয়ে ফেলা সম্ভব হলে তার ২৫ শতাংশই বায়ুমণ্ডল থেকে সরে যাবে। বায়ুমণ্ডল হয়ে যাবে ১০০ বছর আগেকার মতো।
গবেষণা জানিয়েছে, শিল্পবিপ্লবের পর থেকে এখনও পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলে জমা হয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টন বা ৩০ হাজার কোটি মেট্রিক টন কার্বন। আর এক লাখ কোটি গাছ প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠলে, তা বায়ুমণ্ডল থেকে টেনে নেবে ২০, ৫০০ কোটি মেট্রিক টন বা ২২ হাজার ৫০০ কোটি টন কার্বন। ফলে, শিল্পবিপ্লবের পর থেকে এখনও পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলে যতটা পরিমাণে কার্বন জমা হয়েছে, এক লাখ কোটি গাছ প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠার পর তার এক-তৃতীয়াংশ কার্বনই টেনে নেবে নিজেদের শরীরে। তাই বাতাসে বিষ কমবে নিশ্চিত ভাবেই।
এক লাখ কোটি গাছ বসানো হবে কোথায় কোথায় গবেষণা তাও জানিয়েছে। একেবারে মানচিত্র দিয়ে বলে দিয়েছে, কোথায় কোথায় বসানো যাবে সেই এক লাখ কোটি গাছ। গবেষকরা দেখিয়েছেন, সেই এক লাখ কোটি গাছের একটি বড় অংশ বসানোর জন্য পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি জায়গা পড়ে রয়েছে রাশিয়ায়। ৫ লাখ ৮৩ হাজার বর্গ মাইল বা ১৫ লাখ বর্গ কিলোমিটার। গাছ বসানোর জমির নিরিখে তার পরেই রয়েছে আমেরিকা। রয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৭০০ বর্গ মাইল বা ১০ লাখ বর্গ কিলোমিটার। তার পর রয়েছে কানাডা (৩ লাখ ২ হাজার ৭০০ বর্গ মাইল বা ৭ লাখ ৮৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার), অস্ট্রেলিয়া (২ লাখ ২৩ হাজার ৯০০ বর্গ মাইল বা ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৯০০ বর্গ কিলোমিটার), ব্রাজিল (১ লাখ ৯১ হাজার ৯০০ বর্গ মাইল বা ৪ লাখ ৯৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার) ও চিন (১ লাখ ৫৫ হাজার ২০০ বর্গ মাইল বা ৪ লাখ ২ হাজার বর্গ কিলোমিটার)। ওই পরিমাণ জায়গা আদতে গোটা আমেরিকার চেহারা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই এক লাখ কোটি গাছ বসানোর ফলে, পৃথিবীর বনাঞ্চল বেড়ে যাবে তিন গুণ। তবে তা শহরের এলাকায় ভাগ বসাবে না। কেড়ে নেবে না চাষাবাদের জমিও। ইন্টার-গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি)-এর রিপোর্টও জানাচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা যাতে আরও ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ২.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটেরও বেশি না বেড়ে যায়, তার জন্য আরও ৩৮ লাখ বর্গ মাইল বা ১ কোটি বর্গ কিলোমিটার জমিতে বনাঞ্চল গড়ে তুলতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।