বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রয়োজনের অনেক কম মঞ্জুরীকৃত চিকিৎসকের পদেরও ৬৪% শূন্য থাকায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলে চিকিৎসা সেবা মুখ থুবড়ে পড়ছে। বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলা ও ৪২টি উপজেলায় ১ হাজার ১৩১টি চিকিৎসকের মঞ্জরুীকৃত পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৪১১জন। দক্ষিণের অবহেলিত এ বিভাগে মঞ্জুরীকৃত পদের মাত্র ৩৬% চিকিৎসক কর্মরত থাকায় জন দূর্ভোগের কোন সীমা নেই। বিগত এক যুগেরও বেশী সময় ধরে এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলেও তা থেকে উত্তরণে সরকারী কোন উদ্যোগ নেই। প্রতিটি বিসিএস-এর পরে বেশ কিছু চিকিৎসককে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরে নিয়োগ দেয়া হলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তার বেশীরভাগই নানা ফন্দি ফিকির করে ঢাকা ও এর আসে পাশের এলাকায় বদলী হয়ে যাচ্ছেন। এমনকি সদ্য নিয়োগ দেয়া অনেক চিকিৎসককে প্রেসনেও ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক তদবিরের প্রভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের একটি বড় অংশই ঢাকা ও এর আসে পাশের এলাকায় চলে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অপরদিকে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠী জেলা সদরের হাসপাতালগুলোতের শয্যা বৃদ্ধির ঘোষনা দিয়ে বাহবা কুড়ান হলেও চিকিৎসক সহ প্রয়োজনীয় জনবল মঞ্জুরী করা হয়নি দীর্ঘদিনেও। এমনকি এ অঞ্চলের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০শয্যা হাসপাতালে উন্নীত করা হলেও তার বিপপরিতে কোন জনবল মঞ্জুর করা হয়নি। পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠী জেলা সদরের হাসপাতালগুলো ১শ শয্যা থেকে আড়াইশ শয্যায় উন্নীত করনের লক্ষ্যে অবকাঠামো নির্মান করে সে লক্ষ সরকারী ঘোষনা দেয়া হলেও চিকিৎসক সহ জনবল মঞ্জুরীর বিষয়টি ঝুলে আছে।
এমনকি জেলা ও উপজেলা সদরের এসব হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলেও পুরনো শয্যার বিপরিতে যে জনবল মঞ্জুরী রয়েছে তারও প্রায় ৬৫% শূণ্য। সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি বরগুনা জেলায়। সাগর পাড়ের এ জেলা সদর সহ ৫টি উপজেলায় মঞ্জুরীকৃত ১৬৫টি চিকিৎসক পদে কর্মরত আছেন মাত্র ৪১জন। জেলাটির ৭৬% চিকিৎসকের পদ শূণ্য। ফলে দক্ষিনের চীর অবহেলিত এ জেলাটিতে সরকারী চিকিৎসা সেবা বলতে এখন আর তেমন কিছু অবশিষ্ট নেই। এমনকি উপজেলা পর্যায়ের ৩১শয্যার হেলথ কমপ্লেক্সগুলো ৫০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করার ঘোষনা দেয়া হলেও জনবল মঞ্জুরী রয়েছে পুরনো হিসেবে। আর মঞ্জুরীকৃত সেসব পদেওরও অর্ধেকের বেশী শূণ্য।
পটুয়াখালী জেলা সদরের হাসপাতালটিকে আড়াইশ শয্যায় উন্নীত করার লক্ষে অবকাঠামো নির্মান করা হচ্ছে। তবে হাসপাতালটিকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের সাথে সংযূক্ত করা হলেও চিকিৎসক সহ জনবল মঞ্জুরী রয়েছে ৫০শয্যা হাসপাতালের। আর সে মঞ্জুরীরও বেশীরভাগ পদ শূণ্য। জেলা সদর সহ ৭টি উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদের সংখ্যা ২২৩ হলেও কর্মরত আছেন মাত্র মাত্র ৮৪জন। জেলাটিতে ৬৩% চিকিৎসকের পদ শূণ্য। জেলা সদরের বাইরে ৬টি উপজেলা হাসপাতালেরও করুন দশা। এজেলাটির সাগর পাড়ের কুয়াকাটা ২০শয্যার হাসপাতালে কর্মরত আছেন মাত্র ২জন চিকিৎসক।
দ্বীপজেলা ভোলা সদরের ১শ শয্যার হাসপালটি ঢাকঢোল পিটিয়ে আড়াইশ শয্যায় উন্নীত করার ঘোষনা সহ অবকাঠামো নির্মান করা হলেও চিকিৎসক আর জনবল মঞ্জুরী রয়েছে ৫০শয্যার। তবে মঞ্জরুরীকৃত সে পদেরও অর্ধেক পদে কোন চিকৎসক নেই। এ জেলাটির ২০৯টি চিকিৎসক পদের বিপরিতে কর্মরত আছেন মাত্র ৭২জন। জেলাটির ৬৬% চিকিৎসকের পদ শূণ্য পড়ে আছে।
পিরোজপুর জেলার ১৭২টি চিকিৎসক পদের মধ্যে কর্মরত আছে মাত্র ৬১জন। জেলাটির ৬৫% চিকিৎসকের পদ শূণ্য। এ জেলা সদরের ১শ শয্যার হাসপতালটি চলছে ৫০ শয্যার জনবল মঞ্জুরী নিয়ে। তবে সে মঞ্জুরীকৃত পদেরও অর্ধেকের বেশী শূণ্য। উপজেলা হাসপাতালগুলোর অবস্থাও প্রায় একই।
ঝালকাঠী জেলা সদর সহ ৪টি উপজেলায় চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদের সংখ্যা ১০৪ হলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৪০জন। এ জেলাটিতেও ৬২% চিকিৎসকের পদশূণ্য।
বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাদে জেলা সদর হাসপাতাল এবং ১০টি উপজেলায় চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদের সংখ্যা ২৫৮ হলেও কর্মরত আছে মাত্র ১১৩জন। বিভাগীয় সদরের এ জেলাটির চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদের ৫৭% পদে কোন চিকিৎসক নেই।
সব মিলিয়ে অবহেলিত দক্ষিণের জনপদে সরকারী চিকিৎসা পরিসেবা ক্রমশ জনগনের অধরা হয়ে উঠছে। দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে চিকিৎসকের অভাব একটি মানবিক সংকট তৈরী করলেও তা থেকে উত্তরনের তেমন কোন উদ্যোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে বরিশালে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে দায়িত্বশীল সূত্র থেকে চিকিৎসক সংকটের এ বিষয়টি উর্ধতন কতৃপক্ষকে নিয়মিতভাবে অবহিত করার কথা জানান হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।