পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান বলেছেন, গোটা ভারত জুড়ে গেরুয়া তান্ডবে গণপিটুনিতে যেভাবে একের পর এক মুসলিম যুবক প্রাণ হারাচ্ছেন, তা অত্যন্ত উদ্বেগের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চাইলে গেরুয়া এসব তান্ডব ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বন্ধ করা যায়।
তিনি বলেন, এসব ঘটনায় মূলহোতাদের গ্রেফতার ও শাস্তি দেয়ার পরিবর্তে পুলিশ-প্রশাসন, রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার নীরব দর্শকের ভ‚মিকা পালন করছে। তাতে উগ্র হিন্দু মৌলবাদী গেরুয়াধারীদের ঔদ্ধত্য দিনের পর দিন বাড়ছে। আমরা এতে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলায় সানাউল শেখকে যেভাবে মোটরসাইকেল চুরির অপবাদ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে, ঝাড়খন্ডের তাবরেজ আনসারীকেও একইভাবে হত্যা করা হয়েছে।
কামরুজ্জামান বলেন, একই স্টাইলে আরএসএস বিভিন্ন জায়গায় মুসলিম যুবকদের হত্যার পরিকল্পনা নিয়েছে। বিশেষ করে ধর্মপ্রাণ মুসলিম যুবকদের বাসে ও ট্রেনে সর্বত্র হেনস্তা করা হচ্ছে। তার পরও আমরা দেখতে পাচ্ছি- প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা না নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আজ থেকে পনেরো দিন আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিং লোকাল ট্রেনে হাফেজ শাহরুখ হালদারকে আক্রমণ করা হলো, তার সেই হামলার ভিডিও ভাইরাল হলো; কিন্তু তার পরও অপরাধীদের পুলিশ এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করল না।
এ বিষয়ে মুসলিমরা প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না। আত্মীয়স্বজনকে হারানোর পরও পরিবারের মানুষ সুবিচার পাচ্ছেন না। এর পর মুসলিমদের বিচার চাওয়ার আর দ্বিতীয় কোনো জায়গা নেই।
তিনি বলেন, আমরা যদি দেখি যে, পুলিশ প্রশাসন অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং তারা মুসলিম ভাইদের যথাযথ সুবিচার দিতে ব্যর্থ হচ্ছে, তা হলে আমাদের বৃহত্তর প্রতিবাদের পথে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা থাকবে না।
কামরুজ্জামান বলেন, আমি আশা করব, মুসলিম যুবক ও মুসলিম সমাজকে আইন হাতে তুলে নিতে সরকার ও প্রশাসন বাধ্য করবেন না।
সুবিচার বঞ্চিত মুসলিমরা ধৈর্য হারাচ্ছে : বুখারি
এদিকে লিঞ্চিং নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন দিল্লির বিখ্যাত জামা মসজিদের শাহী ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারি। তাঁর অভিযোগ, দেশ জুড়ে ক্রমশ বাড়ছে মব লিঞ্চিং-এর ঘটনা। আর গো রক্ষার নামে বাড়ছে মুসলিম দের হত্যার ঘটনা। ২০১৭ তে রাজস্থানের আলোয়ারের মব লিঞ্চিং-এর ঘটনার কথা উল্লেখ করেন বুখারি। পেহলু খান ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে গরু পাচারের অভিযোগে লিঞ্চিং-এর শিকার হতে হয়। এই প্রসঙ্গ টেনে বুখারি বলেন, সরকার এই ধরনের ঘটনার নীরব দর্শক হয়ে উঠেছে। শাহী ইমামের অফিস থেকে প্রকাশিত একটি প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মানুষ আইন নিয়ে পরিহাস করছে আর সরকার এই ধরনের ঘটনা থামাতে কোনও চেষ্টা করছে না।” তাঁর দাবি, সরকারের বিদ্বেষমূলক আচরণের শিকার হচ্ছেন ভারতীয় মুসলিমরা। তিনি বলেছেন, “প্রতিনিয়ত একজন মুসলিমকে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করতে হয়। তাঁদের ভয় দেখানো হচ্ছে ও দমিয়ে রাখা হচ্ছে।” শাহী ইমাম বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে আজও মুসলিমরা সুবিচার পায়নি, তাই এবার তাদের ধৈর্য হারাচ্ছে। স¤প্রতি ঝাড়খন্ডের লিঞ্চিং-এর ঘটনার ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। এর আগে এই একই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, “সবকা সাথ সবকা বিকাশ” এ ব্যর্থ মোদী সরকার। তিনি লিখেছিলেন, “আপনি ১২৫ কোটি ভারতবাসীকে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমান অধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে টা ঘটেনি। আর সেইজন্য ভারতবাসী চিন্তিত। তিনি রাহুল গান্ধীকেও এরকমই একটি চিঠি লিখেছিলেন। সূত্র : রেডিও তেহরান ও এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।