মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতীয় পার্লামেন্টের নবনির্বাচিত সদস্য ও ফিল্ম অভিনেত্রী নুসরাত জাহানের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছে সে দেশের কয়েকটি ইসলামী সংগঠন। বিয়ের পর পার্লামেন্টে সিঁদুর ও মঙ্গলসূত্র পরে এসে তিনি যেভাবে শপথ নিয়েছেন, তাকে ইসলাম-বিরোধী বলে রায় দিয়ে ধর্মীয় নেতারা তার বিয়েকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছেন।
নুসরাত নিজে অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ার এক পোস্টে দাবি করেছেন, জাত-পাত-ধর্মের ঊর্ধ্বে তিনি ‘সবার জন্য যে ভারত’ তারই প্রতিনিধি এবং ধর্মবিশ্বাসে এখনও মুসলিম। তার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল বিজেপিও এই বিতর্কে নুসরাতের পাশেই দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে।
গত ২৫শে জুন ভারতের সংসদে তৃণমূলের নবীন এমপি ও সদ্যবিবাহিত নুসরাত জাহান রুহি জৈন শপথবাক্য পাঠ করার পর থেকেই তা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। প্রথম কারণ, শপথ পরার সময় তার মাথায় ছিল সিঁদুর ও হাতে চূড়া, যা বিবাহিত হিন্দু রমণীর প্রতীক বলে ধরা হয়। আর দ্বিতীয়ত তিনি শপথ শেষ করেন ‘বন্দে মাতরম’ বলে, যে সেøাগানকে অনেকেই ইসলাম বিরোধী বলে মনে করেন।
এর পরই দেওবন্দ-অনুসারী সাহারানপুরের মাদ্রাসা জামিয়া শৈখুল হিন্দের মুফতি আসাদ কাসমি ঘোষণা করেন, ভিন্ন ধর্মের কোনও ব্যক্তির সঙ্গে তার বিয়ে ইসলাম মেনে নিতে পারে না। তিনি বলেন, একজন মুসলিম কখনওই ভিন্ন ধর্মের কারও সাথে বিয়ে করতে পারেন না, ইসলাম তার অনুমতি দেয় না। তা ছাড়া তিনি যেভাবে বন্দে মাতরম বলেছেন তার বিরুদ্ধেও আমাদের ধর্মীয় নেতারা বারবার সতর্ক করে দিয়েছেন, কারণ এর দ্যোতনা ইসলামী বিশ্বাসের পরিপন্থী।
দিল্লির ফতেহপুরী শাহী মসজিদের ইমাম মুফতি মুকাররম আহমেদও বিবিসিকে বলছিলেন, সবাই জানেন মুসলিম রমণীরা কখনও সিঁদুরও দেন না, মঙ্গলসূত্রও পরেন না। কাজেই তিনি যা করেছেন, তা ইসলামের বিরুদ্ধে গিয়েই করেছেন।
এই বিতর্কের পটভূমিতে নুসরাত নিজে শনিবার বেশি রাতে টুইট করেন, তিনি নিজেকে ‘ইনক্লুসিভ ইন্ডিয়া’ বা সবার জন্য যে ভারতবর্ষ, তার প্রতিনিধি বলেই মনে করেন।
সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করলেও ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাসে তিনি নিজেকে একজন মুসলিম বলেও পরিচয় দেন। তিনি কী পরলেন বা না-পরলেন তা নিয়ে কারও মন্তব্য করা সাজে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন।
দিনকয়েক আগে পার্লামেন্টের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েও তিনি অনেকটা একই সুরে বলেছিলেন, তিনি লুকিয়ে বিয়ে করেননি, সামাজিকভাবেই বিয়ে করেছেন। তবে বিয়ের পরেও তিনি নিজের ধর্ম অপরিবর্তিত রেখেছেন, নুসরাত এই দাবি করলেও স্পষ্টতই কোনও কোনও মওলানা তার স্বীকৃতি দিচ্ছেন না।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন সাধ্বী প্রাচী-সহ ক্ষমতাসীন বিজেপির অনেক নেতা-নেত্রীই।
দলের সিনিয়র নেত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী যেমন বিবিসিকে বলছিলেন, তিনি শপথের সময় নুসরাত জাহান রুহি জৈন নামেই নিজের পরিচয় দিয়েছেন। এখন ব্যক্তিগতভাবে তিনি কোন ধর্মাচরণ করবেন, সেটা তো তার সাংবিধানিক অধিকার। সেই হিসেবে ওনার যেটা ভাল মনে হয়েছে, উনি সেটাই করেছেন।
আর যারা ফতোয়া দিচ্ছেন তারা ভুলে যাচ্ছেন যে এটা ভারতবর্ষ, পাকিস্তান নয়। এখানে ওসব ফতোয়া দিয়ে কোনও লাভ হবে না, বলছেন মিস চৌধুরী।
বিজেপির আর এক এমপি ও অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলিও নুসরাতের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
তিনি মন্তব্য করেছেন, আজকের নিউ ইন্ডিয়া বা নতুন ভারতবর্ষে শুধু দুটোই জাত - একদল প্রগতিশীল, আর অন্যরা শুধু পেছনের দিকে হাঁটছেন। যারা নুসরাতের সমালোচনা করছেন সেই দ্বিতীয় জাতটা দ্রæতই কোণঠাসা হয়ে পড়বে বলেও তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এই বিতর্কে সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘোষণা দিয়েই নুসরাতের পাশে দাঁড়িয়েছেন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও আর এক নবীন এমপি, অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী।
কিন্তু তৃণমূলের আর কোনও সিনিয়র নেতাকেই এই ইস্যুতে এখনও মুখ খুলতে দেখা যায়নি - যে দলের প্রধান মমতা ব্যানার্জি দিনকয়েক আগে প্রকাশ্যেই মন্তব্য করেছিলেন মুসলিম তোষণের অভিযোগ তিনি পরোয়া করেন না। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।