মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, দশকের পর দশক ধরে পশ্চিমা গণতন্ত্রের মূল আদর্শ ছিল যে 'উদারপন্থা' - তা 'অচল' হয়ে পড়েছে।
জাপানে জি-টুয়েন্টি শীর্ষ বৈঠকে রওয়ানা হওয়ার আগে ব্রিটিশ দৈনিক ফিনানসিয়াল টাইমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, উদারপন্থী আদর্শ এখন গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে।
সস্তা জনপ্রিয়তার যে রাজনীতি ইউরোপ এবং আমেরিকাতে এখন বিস্তার লাভ করছে, ইংরেজিতে যাকে বলা হচ্ছে 'পপুলিজম' - তার প্রশংসা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ।
তিনি বলেন, 'মাল্টিকালচারালিজম' অর্থাৎ নানা সংস্কৃতির এবং জাতি-গোষ্ঠীর মানুষের সহাবস্থানের ভিত্তিতে সমাজ গঠনের যে নীতি পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশ্বে নেওয়া হয়েছে - সেটি আর টিকবে না।
"উদারপন্থীরা আর তাদের মতবাদ বা ইচ্ছা-অনিচ্ছা অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতে পারবে না।"
পুতিন বলেন, কোনো একটি দেশের সিংহভাগ জনগোষ্ঠীর স্বার্থের সাথে উদারপন্থী আদর্শের বিরোধ দিন দিন বাড়ছে।
আঙ্গেলা মার্কেল যেভাবে হঠাৎ করে জার্মানিতে ১০ লাখ শরণার্থীকে জায়গা দিয়েছেন - সে প্রসঙ্গ তুলে পুতিন বলেন, এ ধরণের উদারপন্থী নীতির মূল কথা হচ্ছে অভিবাসীরা হত্যা করতে পারে, লুঠপাট করতে পারে, ধর্ষণ করতে পারে - কিন্তু তারপরও অভিবাসী হিসাবে তাদের অধিকারকে সম্মান করতে হবে।
পুতিন বলেন, সমকামীদের নিয়ে রাশিয়ার তেমন কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু সমকামিতার কিছু দিক আমাদের কাছে বাড়াবাড়ি মনে হয়।
সবাই ভালো থাকুক, সুখী থাকুক, তাতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং কোটি কোটি মানুষের পারিবারিক মূল্যবোধকে খাটো করা যাবে না।
কট্টর জাতীয়তাবাদী হিসাবে সমালোচিত হলেও, বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক চিন্তা চেতনার প্রশংসা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। পুতিন বলেন, ট্রাম্প একজন "প্রতিভাবান" - যিনি জানেন কীভাবে ভোটারদের সাথে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করতে হয়।
তবে বর্তমানের আমেরিকার 'একলা চলো' নীতির সমালোচনা করে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, এর ফলেই ইরানের সাথে বিরোধ বাড়ছে এবং চীনের সাথে বাণিজ্য-যুদ্ধ শুরু হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিক্রিয়া
এদিকে,পশ্চিমা উদারপন্থা অকেজো হয়ে পড়েছে বলে মি. পুতিন যে মন্তব্য করেছেন - তার কড়া সমালোচনা করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক।
টুস্ক বলেন, যারা দাবি করে উদারপন্থী গণতন্ত্র এখন অকার্যকর, তারাই কাল বলবে যে স্বাধীনতা অকেজো, আইনের শাসন অকেজো, মানবাধিকার অকেজো।
আসলে যেটি অকার্যকর তা হলো একনায়কত্ব, ব্যক্তি প‚জা এবং রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় ধনী হওয়া কিছু লোকের আধিপত্য।
বিবিসির বিশ্লেষণ
বিবিসির প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিশ্লেষক জনাথন মার্কাস বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেঙ্গে যাওয়াকে পুতিন একটি 'ট্রাজেডি' হিসাবে বিবেচনা করেন। রাশিয়া যেন পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশ্বের সাথে সমানে সমানে টক্কর দিতে পারে - সেটাই তার প্রধান লক্ষ্য। সে কারণেই, পশ্চিমা গণতন্ত্রকে পুতিন ছোটো করবেন - সেটাই স্বাভাবিক।"
মার্কাস বলেন, রাশিয়ার অর্থনীতির যে বেহাল অবস্থা তাতে পুতিনের কথা খুব যে হালে পানি পাবে সে সম্ভাবনা কম।
কিন্তু একইসাথে জনাথন মার্কাস মনে করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট যা বলেছেন, তা একবারেই ফেলে দেওয়ার নয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পশ্চিমা বিশ্বে যে উদারপন্থী রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা এখন নজিরবিহীন চাপে পড়েছে। সেদিক দিয়ে মি. পুতিনের কথার কিছুটা ওজন তো রয়েছেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।