বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাকে তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে হেনস্থার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার ভোররাতে উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের আউলিয়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে ৯ হাজার টাকায় রফাদফা করে ছাড়া পান ভিটি দাউদপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা রজব আলী। ভূক্তভোগী ও স্বজনরা জানায়, আড়াই বছর আগে সৌদি আরবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রজব আলীর ছেলে আলী মাসুদ মারা যায়। এরপর থেকেই রজব আলীর সাথে মনোমানিল্য শুরু হয় প্রয়াত ছেলের স্ত্রী রিক্তা আক্তারের। এরপর রিক্তাকে নিজের মেয়ে বানিয়ে বিয়ে দিয়ে বাড়িতে রাখার জন্য রজব আলীকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। কিন্তু রজব আলী সাড়া না দেয়ায় রিক্তা তার স্বামীর ভাগের জায়গা দখলে নেয়া ও ঘরের মালামাল নেয়ার চেষ্টা শুরু করেন। রিক্তা আদালতে মামলাও করেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রিক্তা তার বাবা ও স্বজনদের নিয়ে রজব আলীর বাড়িতে এসে মালামাল নেয়ার চেষ্টা চালায়। এসময় রজব আলী ও তার স্ত্রী রাহিমা আক্তারকে মারধর করেন। এ ঘটনায় রজব আলী নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত অভিযোগ দেন বিজয়নগর থানায়। বিজয়নগর থানার ওসি ফয়জুল আজিম বিষয়টি তদন্ত করার জন্য আউলিয়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে পাঠান। ওইদিন দিবাগত রাত দুইটার দিকে পুলিশ সাথে নিয়ে রিক্তা তার বাবা ও স্বজনসহ আবারও রজব আলীর বাড়িতে আসেন। পুলিশের উপস্থিতিতেই রজব আলী ও তার স্ত্রী রাহিমা আক্তার এবং মেয়ে সালমা আক্তারকে মারধর করে জোরপূর্বক রিক্তা ও তার স্বজনরা ঘরের মালামাল নিয়ে যান বলে অভিযোগ করেছেন রজব আলী। এসময় দু’পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ, হাঙ্গামার খবর শুনে এলাকার লোকজনও জড়ো হয়। এ ঘটনার পর আউলিয়াবাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আবুল হাসানসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উল্টো রজব আলীকেই আটক করে আউলিয়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে যান। রজব আলী অভিযোগ করেন, পুলিশ প্রথমে তাকে হাজতখানায় ঢোকান। পরে একটি আলাদা কক্ষে নিয়ে রাখা হয় তাকে। খবর পেয়ে পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটিদাউদপুর গ্রামের ইউপি সদস্য নাসির মিয়া ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুব হোসেন পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে যান। রজব আলীকে ছাড়ার জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করেন এসআই হাসান। রাত সাড়ে তিনটার ইউপি সদস্য নাসির সাত হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনেন রজব আলীকে। পরে সকালে রজব আলী নিজে হাসানকে আরও দুই হাজার টাকা দেন। বর্তমানে রজব আলী, স্ত্রী রাহিমা আক্তার এবং মেয়ে সালমা আক্তার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পাহাড়পুর ইউপি সদস্য নাসির মিয়া জানান, রজব আলীকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে আমি ও ছাত্রলীগ সভাপতি মাহবুব রাত সাড়ে তিনটার দিকে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে যাই। পুলিশ ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। রাতেই আমার হাতে সাত হাজার টাকা দেই এসআই হাসানকে। পরে সকালে আােরা ২ হাজার টাকা দেন রজব আলী। এ ঘটনায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি বিজয়নগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার তারা মিয়ার সাথে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন পাহাড়পুর ইউপি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফুল মিয়া। আউলিয়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আবুল হাসান বলেন, হাজত খানায় ঢুকিয়ে হেনস্তা করে টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা রজব আলীকে ছাড়ার অভিযোগ সত্য নয়। রজব আলীর পুত্রবধূ রিক্তার অভিযোগে পুলিশ রিক্তা ও তার বাবার সাথে বাড়িতে গেলে রজব আলীর স্ত্রী ও মেয়ে ডাকাত-ডাকাত বলে বাড়ির গেট লাগিয়ে পুলিশকে মারধর করে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে ঘটনা জানার জন্য রজব আলীকে নিয়ে আসি। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন) আলমগীর হোসেন জানান,বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।