Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০১৯, ১২:৩২ এএম

প্রতি অর্থবছরের মতো এবারও ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (১৫ দশমিক ২ শতাংশ)। নতুন অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৭৯ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। যা গতবছরের তুলনায় ১৩ হাজার ২১৩ কোটি টাকা (সংশোধিত)। যদিও বিগত বছরে প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছিল ৬৭ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। বিগত যে কোন সময়ের তুলনায় এই অর্থবছরের সামগ্রিক শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে এটাই সর্বোচ্চ বরাদ্দ। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গতকাল (বৃহস্পতিবার) জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন উপলক্ষে বাজেট বক্তৃতায় শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার কথা জানান। যা বাজেটের মোট বরাদ্দের ১৫ দশমিক ২ শতাংশ।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল নতুন অর্থবছরের ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেটে শিক্ষাখাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রস্তাব করলেও তা জিডিপির অনুপাতে সামান্যই। আন্তর্জাতিক মানদÐ অনুযায়ী, একটি দেশের শিক্ষা খাত জিডিপির ৬ শতাংশ বা বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ পেলে তা আদর্শ ধরা হয়। জাতীয় সংসদে আসন্ন নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ২৪ হাজার ৪১ কোটি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে ২৯ হাজার ৬২৪ কোটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে ১৬ হাজার ৪৩৮ কোটি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে এক হাজার ৯৩০ কোটি এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে ৭ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রীর অসুস্থতার কারণে বাজেটের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ে বক্তৃতা পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অংশে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা এমপিওভুক্ত কার্যক্রমে বরাদ্দ দেয়ার কথা জানান তিনি। এছাড়া বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের ঘাটতি নেই। ঘাটতি দেখা দিয়েছে উপযুক্ত এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষকের। প্রাথমিক স্তর থেকে শিক্ষার সর্বস্তরে আমাদের উপযুক্ত এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষকের কাছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে হস্তান্তর করতে চাই। বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, বিশ্ব এখন তৃতীয় শিল্প বিপ্লব থেকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে উত্তরণের পথে। বিশ্বের সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদেরকেও তৈরি হতে হবে। না হলে সামনে অগ্রসর হওয়া আমাদের জন্য দুরুহ হবে। তাই ক্লাসরুমগুলো উপযোগি করে তুলতে হবে। যেখানে শিক্ষা দেয়া হবে ন্যানো টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, রোবোটিক্স, অর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স, ম্যাটেরিয়াল সাইন্স, ইন্টারনেট অব থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, বøকচেইন টেকনোলজি ইত্যাদি। এসকল বিষয়ে শিক্ষা এখন সময়ের দাবি। এছাড়া সামনে শিক্ষার প্রধান চ্যালেঞ্জ ভিত্তিমূল। প্রাথমিক পর্যায়ে মান উন্নয়ণ ও প্রায়োগিক শিক্ষার প্রসার ঘটানো। মানসম্মত ও সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ।

প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষার মানন্নোয়নে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন প্রণয়ন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে উপবৃত্তি প্রদান, নতুন জাতীয়করণকৃত ও বিদ্যমান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন করা, বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ও মাল্টিমিডিয়া সরবরাহ এবং শিক্ষা সহায়ক বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন।

মাধ্যমিক শিক্ষা কাঠামোর বিষয়ে বলা হয়, নতুন অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা বিগত বছরের তুলনায় ৫৪ শতাংশ বেশি। এই বিভাগের আওতায় এক হাজার ৫০০টি বেসরকারি কলেজ ও তিন হাজার বেসরকারি স্কুলের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলতি জুনেই সমাপ্ত হবে। সারাদেশে ২৬ হাজার ২০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪৮ হাজার ৯৪৭টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ, ২০০টি ল্যাঙ্গুয়েজ কাম আইসিটি ল্যাব, এক হাজার সায়েন্স ল্যাব, দুই হাজার ১২০টি স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ, ৪৬টি হোস্টেল নির্মাণ এবং আসবাবপত্র, অফিস সরঞ্জামাদি ও আইসিটি উপকরণ সরবরাহ করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা ও শিক্ষা কার্যক্রমে সরকারের গৃহিত অন্যান্য উদ্যোগ গুলোও তুলে ধরা হয়।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বরাদ্দ

২৬ জানুয়ারি, ২০২১
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ