গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ইস্পাত কঠিন সুদৃঢ় ঐক্য তৈরির মাধ্যমে সকল বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করে শিড়দাঁড়া সোজা রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এই মূহুর্তে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধৈর্য সহকারে সকল পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আহবান জানিয়েছেন। যারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়াকে ভালোবাসেন, তারেক রহমানের জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো যাবে না। দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ইস্পাত কঠিন ঐক্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে- যদিও সন্ধ্যা আসে মন্দ মন্থরে তবুও আমরা পাখা বন্ধ করবো না। কালো রাত্রি অতিক্রম করে নব সূর্যোদয়ের আলো ফুটবেই। শনিবার (১ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গণতন্ত্রের জন্য লড়াই অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি বিভেদ-বিভাজনে, হতাশায় বিশ্বাস করে না। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্রের শুভদিন বিএনপি ফিরিয়ে আনবেই। মানুষ ফিরে পাবে তার নাগরিক স্বাধীনতা। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হবে আরও শক্তিশালী। শহীদ জিয়ার চিন্তা ও আদর্শ, বহুদলীয় গণতন্ত্র বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্ব এবং তারেক রহমানের প্রত্যয়দৃঢ় নেতৃত্বে পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবেই। তিনি বলেন, চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার নয়। কোন বাধা-বিপত্তি-প্রতিবন্ধকতা-উস্কানীমুলক কথাবার্তা, কোন ষড়যন্ত্র আমাদের রুখতে পারবে না। বর্তমান শ্বাসরোধী দুঃশাসনের অবসান হবেই। অবশ্যই বিএনপি’র নেতৃত্বে রাষ্ট্রের প্রকৃত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবেই। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের আন্দোলন সফল হবে ইনশাল্লাহ।
নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, দু:শাসনের বিরুদ্ধে ইস্পাতকঠিন ঐক্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের লক্ষ্য একটাই-এদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ‘গণতন্ত্রের মা’ বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা, অগণিত নেতাকর্মী যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদেরকে মুক্ত করা এবং এই দুঃশাসনের অবসান ঘটানো। আমাদের দলের নেতাকর্মীরা জানেন, লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে বাধা-বিপত্তি আসবেই। বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল উজ্জীবিত হয়ে ওঠেছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, দুঃসহ প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও বিএনপি তার সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। নেতাকর্মীরা সকল নির্যাতন-নিপীড়ণ সহ্য করার পরেও দু:শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছে। বিএনপি ধাবিত হচ্ছে তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে সুপরিকল্পিত ও দূরদর্শী সিদ্ধান্তে দল পরিচালনা করছেন। তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই যেকোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কার্যকর করা হচ্ছে। তারেক রহমান বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনসমূহের সর্বস্তরের নেতাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা বলছেন। জেলা নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। তাদের যৌক্তিক পরামর্শ গ্রহণ করে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় কমিটিগুলো গঠনতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পুনর্গঠন ও সাংগঠনিক কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করছেন। সারাদেশে কাউন্সিল হচ্ছে। তারেক রহমানের সুনিপুণ নির্দেশনায় সারাদেশে সাংগঠনিক কর্মকা-ে এসেছে নতুন গতি। প্রাণাবেগে উজ্জীবিত হয়ে উঠছেন নেতা-কর্মীরা। দলে সৃষ্টি হচ্ছে ইস্পাত কঠিন সুদৃঢ় ঐক্য। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে প্রস্তুত হচ্ছেন সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন-এবার ঈদে যাত্রীদের দূর্ভোগ হবে না, সড়ক মহাসড়কের অবস্থা ভাল তবে সড়কে শৃঙ্খলা নেই। বাংলাদেশের ইতিহাসে বর্তমানে সড়কের অবস্থা সবচেয়ে ভাল। তিনি বলেন, কাদেরের বক্তব্য জনগণের সাথে চরম রসিকতা। সড়ক ব্যবস্থা এতটাই ভাল যে, শুধু ঢাকার অদুরে গাজীপুর যেতে সময় লাগে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা। উত্তরাঞ্চলের অবস্থা আরও নাজুক। তাছাড়া ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল হয়ে উত্তরের জেলাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা এতই খারাপ যে, উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদেরকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক, ঢাকা-কুষ্টিয়াসহ দেশের সকল সড়ক মহাসড়কগুলোতে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। সড়কের বেহাল দশার কারণে ঈদে ঘরমুখী মানুষ ঝুঁকছে ট্রেনের দিকে। গতকাল শুরুর দিনে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সকালের ট্রেন বিকেলেও পাওয়া যায়নি। রেলমন্ত্রী এজন্য জাতির নিকট দুঃখ প্রকাশও করেছেন। লঞ্চ টার্মিনালগুলো থেকেও লঞ্চ ছাড়ছে দেরী করে। লঞ্চযাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া, বাস যাত্রীদের কাছ থেকেও আদায় করা হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া। ঈদ যাত্রার শুরুতেই চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। কথায় আছে-কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না, আওয়ামী লীগের নেতাদের অবস্থাও তাই। মানুষের প্রত্যাশা ছিল সুস্থ হয়ে ফিরে জনগণের পাশে দাঁড়াবেন, কিন্তু মানুষের দুর্ভোগ নিয়েও পরিহাস করার চিরচেনা স্বভাব তিনি ছাড়তে পারেননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।