Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রমযানের আমল

মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০১৯, ১২:১৮ এএম | আপডেট : ১:১৪ পিএম, ৩১ মে, ২০১৯

জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম অপর যে বদদোয়াটি করেছিলেন তা হলো, যে ব্যক্তি রমযান পেয়েও গোনাহ মাফ করাতে পারল না সে ধ্বংস হোক, আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হোক। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বদদোয়ার পরও বলেছেন, আমীন।

চিন্তা করে দেখি, আমরা রমযানে কেমন আমল করি। আমরা এ বদদোয়ার শিকার হয়ে যাব না তো। রমযান এসেছে সকল প্রকার গোনাহ ও অন্যায়-অপরাধ ছেড়ে তাকওয়ার পথে চলার জন্য। রমযান দেয়া হয়েছে ইবাদত-বন্দেগী করে মুত্তাকী হওয়ার জন্য। যদি রমযানের কর্তব্য আদায় না করি, তাহলে আমরা এ বদদোয়ার শিকার হয়ে যাব। আল্লাহ মাফ করুন।

তওবার নিয়ম : আমাদের উচিত রমযানে নিজেদের শুধরে নেয়া। রমযানের শুরুর দিকের তুলনায় শেষ দশকের বরকত ও ফজিলত অনেক বেশি। এ দিনগুলোতে তওবা করে সঠিক পথে চলার হিম্মত করব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহর দরবারে আন্তরিকভাবে তওবা করতে হবে। শুধু একবার হাত তুলে মাফ চাওয়াকেই তওবা বলে না। তওবা হলো গোনাহ ও অন্যায় থেকে সম্পূর্ণ ফিরে আসা। তওবার কিছু শর্ত রয়েছে :

এক. যে গোনাহ থেকে তওবা করবে তা ত্যাগ করবে। গোনাহও করলাম আবার তওবাও করলাম, এমন তওবা কবুল হয় না। প্রথম কাজ গোনাহ ছেড়ে দিতে হবে।

দুই. নিজের গোনাহ ও অন্যায়ের দরুন আল্লাহর দরবারে লজ্জিত হতে হবে। অনুতপ্ত হৃদয়ে তওবা করতে হবে।
চিন্তা করে দেখি, একটা কুকুর তার মনিবের কী পরিমাণ ভক্ত ও আজ্ঞাবহ হয়ে থাকে। মনিব তাকে মাত্র দু’বেলা খাবার দেয়। এতেই সে সন্তুষ্ট, সারা রাত নির্ঘুম কাটায়। মনিবের বাড়ি পাহারা দেয়। মনিবের পায়ের কাছে ঘুর ঘুর করতে থাকে। আমিও তো এক মনিবের গোলাম। আমার জীবনের সবটুকুই যার দয়া ও অনুগ্রহ, প্রতিটি মুহূর্তে আমি যার নেয়ামতে ডুবে আছি সে মনিবকে কিভাবে ভুলে থাকি? কিভাবে তার নাফরমানি করি? আমার কী এখনো অনুতপ্ত হওয়ার সময় হয়নি?

তিন. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে হবে।

চার. আল্লাহ তাআলার কোনো হক আদায় না করে থাকলে তা আদায় করতে হবে। যেমন- কেউ যদি নামাজ না পড়ে থাকে তাহলে তওবা করার পদ্ধতি হলো, প্রথমে সে এ নামাজগুলোর কাজা আদায় করবে। কাজা আদায় না করে শুধু দোয়া করে মাফ চাইলে তওবা হবে না। তদ্রুপ রমযানের রোজা ছেড়ে থাকলে তারও কাজা করতে হবে।

পাঁচ. অন্যের হক নষ্ট করে থাকলে তা আদায় করবে বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি থেকে ক্ষমা চেয়ে নেবে। অন্যথায় এ গোনাহ আল্লাহ মাফ করবেন না।

এ শর্তগুলো মেনে কেউ তওবা করলে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই মাফ করে দেবেন। আমরা যত বড় গোনাহগারই হই না কেন তাঁর ক্ষমা ও অনুগ্রহের সাগর বিশাল। তাঁর ক্ষমা ও অনুগ্রহের সাগরে গোসল করতে পারলে আমাদের গোনাহ ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফীক দান করুন।



 

Show all comments
  • মাহমুদুল হাসান রাশদী ৩১ মে, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
    মাহে রমযান বছরের বাকি এগার মাস অপেক্ষা অধিক মর্যাদাশীল ও বরকতপূর্ণ মাস। এ মাসের বিশেষত্ব অনেক।
    Total Reply(0) Reply
  • মুহাম্মদ রহমতউল্লাহ ৩১ মে, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
    এ মাসেই মানুষ ও জিন জাতির মুক্তির সনদ কুরআন মজীদ একত্রে লাওহে মাহফূয থেকে প্রথম আসমানে বাইতুল ইযযতে অবতীর্ণ হয় এবং রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট সর্বপ্রথম এ মাসেই ওহী অবতীর্ণ হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • জয় খান ৩১ মে, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
    এ মাসে রহমতের দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। হাদীস শরীফে এসেছে- ‘রমযান মাস শুরু হলেই রহমতের দরজা খুলে দেওয়া হয়।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০৭৯/২
    Total Reply(0) Reply
  • জয়নাল হাজারি ৩১ মে, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
    এ মাস জাহান্নাম থেকে নাজাত লাভের মাস। সুতরাং বেশি বেশি ইবাদত ও ইস্তেগফারের মাধ্যমে মুক্তির পরওয়ানা লাভ করার এটিই সুবর্ণ সুযোগ।
    Total Reply(0) Reply
  • হাসিবুল ইসলাম ৩১ মে, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
    পরিবারের সদস্যবর্গ যেমন স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে নিয়ে বসা এবং তাদেরকে রোযার হুকুম-আহকাম, বিধি-বিধান, মাসয়ালা শিক্ষা দেয়া ও স্মরণ করিয়ে দেয়া। রমযান মাসের মর্যদা,গুরুত্ব, তাৎপর্য, রোযার মর্যাদা, গুরুত্ব ও তাৎপর্য শিক্ষা দেয়া কর্তব্যঅ।
    Total Reply(0) Reply
  • সানী ৩১ মে, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
    রমযান মাস রহমত, বরকত, মাগফিরাত, জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভের মাস। তাই এমন মাস পেয়েও যে ব্যক্তি স্বীয় গুনাহ মাফ করাতে পারল না তার জন্য স্বয়ং জিবরাঈল আ. বদদুআ করেছেন এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাহমাতুল্লিল আলামিন হয়েও আমীন বলে সমর্থন জানিয়েছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • রঙ্গিলা মাঝি ৩১ মে, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
    অল্লাহ আমাদেরকে রমযান মাস ও রোযার গুরুত্ব- তাৎপর্য বুঝার এবং আমল করার তাওফিক দান করুন ।
    Total Reply(0) Reply
  • রমাদান মাসের ফজিলত গ্রহনে সবাইকে সচেষ্ট হওয়া উচিত। আল্লাহ সবাইকে এ মাসের পূর্ন ফজিলত অর্জনের তাওফিক দান করূন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন