বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সন্তান অসুস্থ হওয়ায় তাকে ফেলে চলে গেছে বাবা মা। চার বছর বয়সী শিশু আবিরের শরীরটা দিনদিন শুকিয়ে যাচ্ছে। ছোট্ট শরীরের সব হাড়গুলো বেরিয়ে গেছে। শরীরের সমস্ত শিরাগুলো টান ধরেছে ফলে স্বাভাবিকভাবে হাত-পা নড়াচড়া করতে পারে না আবির। দেখতে অনেকটা বৃদ্ধ মানুষের মতো হাড্ডিসার শরীর নিয়ে বিছানায় মৃত্যুর মুখোমুখি।
অসুস্থ হওয়ার পর আবিরের বাব-মা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কাশিপুর গ্রামে নানা-নানির কাছে ফেলে যায়। এরপর থেকে সন্তানের আর খোঁজ রাখেনি জন্মদাতা বাবা-মা। দরিদ্র দিনমজুর নানা লিয়াকত আলী ও নানি মঞ্জুরা বেগম এখন অসুস্থ আবিরের একমাত্র ভরসা।
আবিরের আপন নামে আরো একটি ছোট ভাই আছে। ছোট ভাই আপন সুস্থ হওয়ায় বাবা-মায়ের কাছে আদরে আছে। কিন্তু আবিরের কপালে জোটেনি বাবা-মায়ের আদর স্নেহ। আবিরের জন্মের আট মাস বয়সে টিকা দেওয়ার পর থেকে খিচুনি শুরু হয় সাথে জ্বর। এরপর ধিরে ধিরে শরীর শুকিয়ে যেতে শুরু করে।
এরপর থেকে শিশু আবিরকে বাচাঁতে চিকিৎসার জন্য জনপ্রতিনিধিসহ অনেকের কাছে গেছে নান-নানি কিন্তু কেউ তাদের পাশে এসে দাড়ায়নি।
আবির স্বাভাবিক কোন খাবার খেতে পারে না। প্রতিদিন তাকে দুধ, কেক, পাউরুটি ও ফল কিনে খাওয়াতে হয়। যা কিনতে যেয়ে দিশেহারা দিনমজুর নানা-নানি। ফলে চিকিৎসার পাশাপাশি তার খাদ্য কেনার খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
নানি মঞ্জুরা বেগম জানায়, পাঁচ বছর আগে যশোর সদর উপজেলার সাতমাইল এলাকার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আলাউদ্দীনের ছেলে দিন মজুর আল-আমিনের সাথে মেয়ে রতনা খাতুনের বিয়ে হয়। এরপর এক বছরের মাথায় আবিররের জন্ম হয়। জন্মের পর সুস্থ্য ছিল আবির। কিন্তু জন্মের আট মাস পর স্থানীয় টিকাদান কেন্দ্রে নিয়ে টিকা দেওয়ার পর থেকে প্রচন্ড খিচুনি শুরু হয়। সাথে অনেক জ¦র। এরপর বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নেওয়া হয়েছে কিন্তু কোন উন্নতি হয়নি। পরে খিচুনি কমলেও শরীর শুকিয়ে যেতে থাকে। শিরাগুলো টান পড়তে থাকে, বাকা হয়ে যাচ্ছে হাত পা। ফলে স্বাভাবিকভাবে হাত-পা নড়াচড়া করতে পারে না আবির। মঞ্জুরা আরো জানায়, অসুস্থ্য হওয়ার পর মেয়ে জামাই নাতি আবিরকে আমাদের কাছে রেখে চলে যায়। এরপর থেকেই আমাদের কাছে রয়েছে। পরে মেয়ের ঘরে আবার একটা সন্তান আসে আপন তার বয়স এখন দেড় বছর। আপনকে নিয়েই মেয়ে জামাই আছে অথচ আমাদের কাছে রেখে যাওয়া অসুস্থ্য বড় ছেলের কোন খোঁজখবর রাখে না তারা। আবিরের বাবা ও দাদা-দাদির ভাষ্য, ছেলেকে আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিয়েছি।
প্রতিবেশীরা বলেন, তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। যা দিনমজুর দাদা লিয়াকত আলীর পক্ষেকোনোভাবেই টাকা যোগার করা সম্ভব না। তাই শিশুটিকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। তারা আরো বলেন, ঈদে তো আমরা হাজার হাজার টাকার মার্কেট করি। সে মার্কেটের টাকা থেকেই না হয় সবাই সামান্ন্য কিছু অর্থ দিলে আবিরের চিকিৎসা করাতে পারবে তার নান-নানি।
দিন মজুর নানা লিয়াকত আলী বলেন, নাতির চেহারা অস্বাভাবিক হওয়ায় কেউ তার কাছে যেতে চাই না। আমরা দুজনই তার দেখভাল করি। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, গোসল ও খাবার খাওয়ানো থেকে সব কিছু। স্থানীয় অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। দিনে দিনে শুকিয়ে যাচ্ছে। এখন তার খাবার ও ওষুধ কেনা এবং ডাক্তার দেখানোর টাকা যোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আরো বলেন, ডাক্তার এর কাছে নিতে হলে নানা সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। অনেকে ছেলে ধরা মনে করে। একবার ডাক্তাররের কাছে যাওয়ার পথে যশোর নওয়াপাড়া স্টেশন থেকে লোকজন ছেলে ধরা মনে করে আমাদের আটকে রাখে। পরে খোঁজ খবর নিয়ে ছেড়ে দেয়।
নানা লিয়াকত আলী সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি জানান, বিত্তবানরা সহযোগিতার হাত বাড়ালেই কেবল বাপ-মা হারা আবির সু¯্য’ হয়ে আবার স্বভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে। যোগাযোগের জন্যে ০১৭৩৪ ৬৪৪৪৯৯।
এব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অপূর্ব কুমার সাহা বলেন, আগে কখনও এমন রোগ দেখিনি, এটা কি ধরণের রোগ বলতে পারবো না। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে হবে কি কারণে এমন হয়েছে। তবে টিকা দেওয়ার জন্য এমনটা হয়নি বলে যোগ করেন এই চিকিৎসক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।