Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধানে অগ্নিসংযোগ ও রাস্তায় ফেলে অবরোধ-বিক্ষোভ

বাজারে মুল্য না থাকায় ধানের উৎপাদন খরচ উঠছে না, মলিন হয়ে গেছে কৃষকের মুখের হাসি

হালিম আনছারী | প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০১৯, ৭:২২ পিএম

রংপুর অঞ্চলে এবার ধানের বাম্পার ফলন হলেও বাজারে ধানের মুল্য না থাকায় উৎপাদন খরচ উঠছে না চাষীদের। ফলে ধানের বাম্পার ফলন হলেও হতাশ হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। এনজিও’র ঋণসহ ধার দেনা করে ধান চাষ করে এখন তা শোধ করা দূরূহ হয়ে পড়েছে। ফলে মলিন হয়ে গেছে কৃষকের মুখের হাসি।
রংপুরসহ গোটা উত্তরাঞ্চলে পুরোদমে শুরু হয়ছে বোরো ধান কাটা-মাড়াই। তবে তীব্র সঙ্কট চলছে ধানকাটা শ্রমিকের। চাহদিামত শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না ধান কাটা-মাড়াইয়ের জন্য। ফলে জমিতেই পড়ে থাকছে ধান। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দ্বিগুণ মজুরি দিয়ে শ্রমিক নিতে হচ্ছে। এতে করে উৎপাদন খরচ আরো বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাজারে ধানের মুল্য কম থাকায় বিঘা প্রতি লোকসান গুনতে হচ্ছে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা।
রংপুরসহ পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদরে সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উত্তররে বিভিন্ন হাট-বাজারে চিকন ধান মণ প্রতি ৫’শ ৫০ টাকা ও মোটা ধান ৩’শ ৫০ থেকে ৪’শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ধানরে র্বতমান বাজার দর ও কাটা-মাড়াইয়ে অন্য বছররে তুলনায় ২ থেকে ৩ গুণ খরচ বেশি হওয়ায় বোরো চাষীদরে বঘিা প্রতি সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। যাদের ফলন কম হয়েছে তাদের লোকসানের পরিমান আরো বেশি বলে জানয়িছেনে কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, এক বিঘা জমির ভাড়া ৭ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা, সেচ ১ থেকে দেড় হাজার টাকা, হাল চাষ, -রোপনে কৃষাণ খরচ ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা। সার-বীজ, কীটনাশক এবং নিড়ানী ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা, কাটা-মাড়াই ৩ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা লাগছে। যা বিগত বছরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি।
চলতি মৌসুমে রংপুর বিভাগে ১০ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯ হেক্টর জমিতে চারা রোপন করে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ লাখ ৮৮ হাজার ৫৬২ মেট্রিক টন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় রংপুর বিভাগের প্রায় সব জেলাতেই ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু ধানের বাজার মুল্য এ অঞলের কৃষকের মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে। উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম কম হওয়ায় বাজারে ধান বিক্রি করতে গেিয় হতাশ হয়ে পড়ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। মণপ্রতি যে দাম পাওয়ার যাচ্ছে তা দিয়ে লাভতো দুরের কথা বিঘা প্রতি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে।
এদিকে, ধানরে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে রংপুরে বিভিন্ন সামাজকি ও রাজনৈতিক ও কৃষক সংগঠনগুলো সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছে। ইতোমধ্যে বাসদ এবং কৃষক সংগ্রাম পরিষদ স্মারকলিপি প্রদান, মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে। আজ বৃহস্পতিবার নগরীর সাতমাথা এলাকায় কৃষক সংগ্রাম পরিষদ রাস্তায় ধান ফেলে সকাল ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে।
অবরোধ চলাকালে কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক আব্দুস সাত্তার বকুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কৃষক সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা পলাশ কান্তি নাগ, সদস্য সাত্তার প্রামাণিক, নিপীড়ণ বিরোধী নারী মঞ্চের আহবায়ক নন্দিনী দাস, সদস্য সচিব সানজিদা আক্তার, শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সদস্য সদস্য সচিব সুভাষ রায়সহ প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তাগন বলেন, প্রতি বছর উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া কৃষকের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সার,ডিজেল,কীটনাশকসহ প্রতিটি কৃষি উপকরণের মূল্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষক আবাদ করতে গিয়ে ঋণের জালে জর্জরিত হচ্ছে।এ বছর প্রতিমণ ধান উৎপাদনে কৃষকের ব্যয় হয়েছে ৮’শ থেকে ৮’শ ৫০ টাকা। অথচ দাম না থাকায় প্রতিমণ ধান কৃষক ৪’শ ২০ থেকে ৪’শ ৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। সরকার প্রতিমণ ধান ১০৪০ টাকা দরে ক্রয়ের ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত ক্রয় করা শুরু করেনি। এ অবস্থায় সরকারের উচিত মূল্য সহায়তা দিয়ে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা।
কৃষক সাত্তার প্রামাণিক বলেন, একমন ধানের মূল্যের চেয়ে একজন কামলার মজুরী বেশী। একমণ ধান বিক্রি করে এক কেজি গরুর মাংস কিনতে পারি না।
সরকার যদি কৃষক বান্ধব হয় তাহলে কৃষকের দুর্দিনে সরকারের ভুমিকা কি? কৃষকের সমস্যা দেখার কেউ নেই। হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করেও আমরা লাভের মুখ দেখি না। উৎপাদন খরচ যেভাবে বাড়ছে আমাদের আবাদ করাই কষ্টকর হয়ে গেছে। সরকার তো উৎপাদনের সময় আমাদের কোন প্রকার কৃষিঋণ কিংবা ভর্তূকি কিছুই দেয় না।
সমাবেশের সভাপতি আব্দুস সাত্তার বকুল, অবিলম্বে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের দাবি জানান। সমাবেশে উপস্থিত কৃষক-কৃষাণিরা শপথ করেন যে এবছর ধানের ন্যায্য মূল্য না পেলে আগামী বছর থেকে তারা আর ধান আবাদ করবে না।
এর আগে বেলা ১১টায় প্রেসক্লাব চত্বরে ধানে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বাসদ (মার্কসবাদী) রংপর জেলা শাখা। জেলা বাসদ (মার্কসবাদী)’র সমন্বয়ক ও কৃষক ফ্রন্ট জেলা আহবায়ক আনোয়ার হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ চলাকালিন সমাবেশে বক্তাগন হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরকারি উদ্যোগে কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে ধান ক্রয় ও ধানের ন্যায্য মূল্যের দাবি জানান। সমাবেশে বক্তাগন আরো বলেন, সরকার ১ হাজার ৪০ টাকা মণ প্রতি ধানের দাম ঘোষণা করলেও সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের কোন উদ্যোগ নেয়নি। ফলে কৃষকরা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। তারা অবিলম্বে হাটে হাটে ক্রয় কেন্দ্র খুলে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান ক্রয়ের দাবি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রমিক বিক্ষোভ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->