মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
শ্রীলঙ্কায় কারফিউ চলাকালীন সেমাবার রাতে আবার নতুন করে কয়েকটি মসজিদ ও মুসলমানদের দোকান গুঁড়িয়ে দিয়েছে দেশটির কয়েকশ’ উগ্রবাদী নাগরিক। হামলার পর সংঘাতে ৪৫ বছর বয়সী এক মুসলিম নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। সেসঙ্গে সারাদেশে কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন। সোমবার শ্রীলঙ্কার প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের বরাতে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা নিউ ইয়র্ক টাইমস।
ইন্ডিয়া টুডে’র খবরে বলা হয়েছে, গত ২১ এপ্রিল ইস্টার সানডেতে গির্জা ও হোটেলে আত্মঘাতী হামলার পর থেকেই দেশটির মুসলিমরা আতেঙ্কে আছেন। অনেক জায়গায় তাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে।
বার্তাসংস্থা এএফপিকে এক পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সর্বশেষ গত সোমবার পুতালাম জেলার একটি মসজিদে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এরপর মুসলিমদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। আহত মুসলিমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে সেখানে একজনের মৃত্যু হয়। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একদল লোক তাকে নিজের কার্পেটের ওয়ার্কশপে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। ইস্টার সানডের হামলার পর থেকে এই প্রথম সংঘাতে কারও মৃত্যু হলো।
উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের মারাউয়িলির এক বাসিন্দা যিনি ছুরিকাহত ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিতে সাহায্য করেছেন, নিহতের নাম মোহাম্মদ আমীর মোহাম্মদ সালি বলে জানিয়েছেন। এ ঘটনার পর সারা দেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। আর যেসব এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে, সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশটির মুসলিম অধ্যুষিত অংশগুলোর বাসিন্দারা জানিয়েছেন, উচ্ছৃঙ্খল জনতা দ্বিতীয় দিনের মতো মসজিদগুলোতে হামলা চালিয়েছে, তাদের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তছনছ করেছে। মসজিদ, দোকান ও যানবাহনে আগুন দেয়ার পর টিভিতে শ্রীলঙ্কার পুলিশ প্রধান চান্দানা বিক্রমারত্মে দাঙ্গাকারীদের দমনে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ বলছে, একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত অনেক মুসলিমের বাড়ি ও মসজিদ আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা হাতে রড, হকিস্টিক নিয়ে সড়কে মহড়া দিয়ে আতঙ্ক তৈরি করছে। ম‚লত রাজধানী কলম্বোর উত্তরের তিনটি জেলাতে এই সংঘাত হচ্ছে। কিন্তু, বাড়তি সতর্কতা হিসেবে সারা দেশেই কারফিউ জারি করা হয়েছে।
গত ২১ এপ্রিল কলম্বোর তিনটি গির্জা, তিনটি পাঁচতারকা হোটেলসহ আটটি স্থানে আত্মঘাতী হামলায় ২৫৯ জন নিহত ও ৫ শতাধিক মানুষ আহত হন।হামলার চার দিন পর আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় স্বীকার করে। এরপর থেকেই দেশটিতে মুসলিমদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে আসছে। সিংহলী বৌদ্ধ প্রধান শ্রীলঙ্কার ২ কোটি ২০ লাখ লোকের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ মুসলিম রয়েছে।
এদিকে, দেশটিতে ধর্মীয় অনুভ‚তিকে ভুল করে ‘চরমপন্থা’ মনে করা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যেমন, পবিত্র কুরআন বা একই ধরনের ধর্মীয় সামগ্রী বহনকারী অথবা মাদরাসায় কুরআন হেফাজতকারীদের চরমপন্থী হিসেবে সন্দেহ করা। এরই প্রেক্ষাপটে শ্রীলঙ্কায় ক্যাথলিক চার্চের প্রধান আর্চবিশপ ম্যালকম রঞ্জিত সব ধরনের অপরাধ থেকে মুক্তি পেতে শুধু মুসলমান নয়, সারা দেশে কঠোর নিরাপত্তা তল্লাশি চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
তুচ্ছ ও ভিত্তিহীন প্রমাণে আটক সত্যিকারের নিরীহ লোকজনকে কিভাবে সহায়তা করা যায় সেই আলোচনা শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা মুসলিম কংগ্রেসের (এসএলএমসি) মতো রাজনৈতিক দল। বিষয়টি প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনার কাছে উত্থাপনের পরিকল্পনা করেছ এসএলএমসি ও এর আইনজীবীরা। তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে সত্যিকারের সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করার জন্য একটি ব্যাপকভিত্তিক ম্যাকানিজম তৈরির বিষয়ে তারা আলোচনা করবেন।
এ ছাড়া বাত্তিকালোয়া জেলার ‘শরিয়াহ বিশ্ববিদ্যালয়’ বিষয়ে তদন্তকাজ প্রায় শেষ করে এনেছে কমিটি অন পাবলিক এন্টারপ্রাইজ (সিওপিই)। পামাপাশি, জুমার খুতবাসহ ধর্মীয় সমাবেশগুলোর সব ধরনের বক্তব্য রেকর্ড করে সরকারের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে মুসলিমবিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে মন্ত্রণালয় থেকে সব মসজিদের ট্রাস্টিদের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যেন তারা কোনো ধরনের চরমপন্থী বা ঘৃণাপ্রসূত বক্তব্য প্রচারের জন্য এমন কোনো সমাবেশ বা জমায়েতের অনুমতি না দেন এবং নিজেরা এতে জড়িত না হন। এই নির্দেশ অমান্য করলে পুরো ট্রাস্টি বোর্ডকে দায়ী করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।