Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাসপাতালে কাতরাচ্ছে শিশু

বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের শিকার আরো ৫ আটক ৩

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ধর্ষণের শিকার হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় দশ বছর বয়সী এক শিশু। গতকাল আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল থেকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের পর হাত-পা বেঁধে ড্রেনে ফেলে যাওয়া, শেরপুরে দুই শিশু, এক কিশোরী ও কুমিল্লায় মেম্বারের নেত্বত্বে তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। এদিকে বিভিন্ন ধর্ষণ মামলায় ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় এক শিশুকে (১০) আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। শিশুটিকে গতকাল হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল থেকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই শিশু গত শুক্রবার আটটায় নিজ বাড়ির আঙিনায় দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় প্রতিবেশী ১৯ বছরের এক তরুণ তাকে ডেকে পাশের ঝোপে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে শিশুটি আহত অবস্থায় বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানায়। রাতেই তাকে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, শিশুটির রক্তক্ষরণ কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছিল না। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে আজ ভোরে ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
শিশুটির বাবা এ ঘটনার জন্য তাদের প্রতিবেশী তরুণ জাহাঙ্গীর মিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি জানান, মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত থাকায় তিনি এখনো মামলা করতে পারেননি। তবে শিগগিরই তিনি জাহাঙ্গীরকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করবেন। তার মেয়ে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে বলে তিনি জানান। বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদ মোবারক বলেন, শিশুটি এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটকের জোর তৎপরতা চালাচ্ছে।
ঝিনাইদহ : উপজেলার কোলা গ্রামের বেতনীপাড়ায় এক মাদরাসাছাত্রীকে (১৪) তুলে নিয়ে ধর্ষণের পর হাত-পা বেঁধে ড্রেনে ফেলে গেছে দুই যুবক। গতকাল শনিবার ভোরে কৃষকরা মাঠে কাজ করতে যাওয়ার সময় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করেন।
ওই মাদরাসা ছাত্রীর বাবা জানান, তার মেয়ে স্থানীয় একটি দাখিল মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী। গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে পাশের বাড়িতে মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে যায় তার মেয়ে। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুই যুবক তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। ধর্ষণের পর মেয়েটিকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ডেনের মধ্যে ফেলে দেয় তারা। দুই যুবকের মধ্যে আলামিন নামে একজনকে শনাক্ত করতে পেরেছে তার মেয়ে। ঘটনার পর আলামিন আত্মগোপনে রয়েছে। ওই ছাত্রীর মা বলেন, মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখে ভেবেছিলাম মারা গেছে। পরে দেখি মেয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে মেয়েটি রাতের ঘটনা আমাদের জানায়।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইউনুচ আলী বলেন, তুলে নেয়ার সময় দুই যুবকের মধ্যে আলামিন নামে একজনকে শনাক্ত করতে পেরেছে মেয়েটি। এ বিষয়ে থানায় ধর্ষণ মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
শেরপুর : শেরপুরের নকলায় পৃথক ঘটনায় প্রথম শ্রেণির ছাত্রী দুই শিশু ও ৯ম শ্রেণির এক কিশোরীকে অপহরণপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে ২জনকে আটক করেছে পুলিশ।
পারবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে নকলা উপজেলার ভ‚র্দি নয়াপাড়া এলাকার প্রথম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীকে লিচু দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে একই এলাকার বখাটে শামীম মিয়া। পরে শিশু দুজনের বাবাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ধর্ষককে আটক করেছে পুলিশ। শিশু দুটির পরিবার ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এ ঘটনার জন্য দায়ী শামীমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়।
গতকাল দুপুরে শিশু দুটিকে শেরপুর জেলা হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেখানে ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আর এমও ডা: নাহিদ কামাল জানান, শিশুদের ডাক্তারি পরীক্ষার প্রাথমিক কাজ শেষ। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই রিপোর্ট প্রদান করা হবে।
এদিকে নকলা উপজেলার বারইকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগে বখাটে জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করেছে নকলা থানা পুলিশ। পুলিশ ও মেয়ের পরিবার জানায়, গত শুক্রবার ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে জাহাঙ্গীর। নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাহ নেওয়াজ জানান, এ ব্যপারে অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার রাতেই ঢাকা থেকে জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উভয় ঘটনায় আটক দুই বখাটেকে আদালতে পাঠালে আদালত তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কুমিল্লা : কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় এক তরুণীকে (২০) সিনেমা স্টাইলে পালাক্রমে গণধর্ষণের অভিযোগে এক ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। গ্রেফতার ইউপি সদস্য হলো- উপজেলার ভানী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের নবীরুল ইসলাম নবী (৩০) ও সূর্যপুর গ্রামের মৃত মো. সামসুল হকের ছেলে।
এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে দেবিদ্বার থানায় মামলা করেছেন ধর্ষণের শিকার তরুণী। মামলার পরই অভিযুক্ত ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেবিদ্বার থানা পুলিশের ওসি মো. জহিরুল আনোয়ার জানান, ইউপি সদস্য নবীরুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।



 

Show all comments
  • আকাশ ১২ মে, ২০১৯, ৩:২৭ এএম says : 0
    এটা খুব হতাশাজনক
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ