Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ কমিশন চুক্তিতে বড় পরিবর্তন চায় ইইউ

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০১৯, ১:২৯ পিএম

বাংলাদেশকে আর অনুদান নির্ভরশীল দেশ হিসেবে বিবেচনা করছে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ কারণে ইইউ-বাংলাদেশ যৌথ কমিশন চুক্তিতে বড় ধরনের পরিবর্তন চাইছে ইউরোপভিত্তিক রাষ্ট্রজোটটি। চুক্তিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) পরিবর্তে বাংলাদেশ পক্ষের ফোকাল মন্ত্রণালয় হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেখতে চাইছে ইইউ। যদিও যৌথ কমিশনের কর্তৃত্ব নিজ হাতেই রাখতে চাইছে ইআরডি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, যৌথ কমিশনের গোটা বিষয়টিতে পরিবর্তন চেয়ে বাংলাদেশের কাছে এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়েছে ইইউ। সম্প্রতি এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ওই আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বিষয়টি নিয়ে ইইউর বক্তব্যের বিশদ ব্যাখ্যা দেন ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনজি তিরিংক। তিনি জানান, বাংলাদেশকে এখন আর অনুদান নির্ভরশীল দেশ হিসেবে দেখছে না ইইউ। ফলে উন্নয়ন সহযোগিতা ত্বরান্বিত করতে গঠিত যৌথ কমিশনে নিরাপত্তা ও মানবাধিকারসহ অন্যান্য ইস্যু যোগ করতে চাইছে ইউরোপীয় রাষ্ট্রজোটটি। সেক্ষেত্রে ইআরডির পরিবর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মূল ভূমিকায় দেখতে চায় ইইউ।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশকে অনুদানের ওপর নির্ভর করে থাকতে হতো। তবে বর্তমান বাস্তবতায় আমাদের বাজেটে অনুদানের অংশ থাকে খুবই সামান্য পরিমাণে। ফলে অনুদাননির্ভর সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসে বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের দিকে যেতে চাইছে ইইউ।

তিনি বলেন, ইইউ যৌথ কমিশনে নিরাপত্তা, মানবাধিকার, সুশাসন, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা ইস্যুসহ অন্যান্য বিষয় নতুনভাবে যোগ করার প্রস্তাব দিয়েছে। আর এ বিষয়গুলো ইআরডি আওতার বাইরে। ফলে এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ফোকাল হিসেবে চাইছে তারা। এক্ষেত্রে শুধু বিদ্যমান চুক্তিটিতে পরিবর্তন আনতে হবে। বৈঠকে অন্য সব মন্ত্রণালয় ইইউর প্রস্তাবের পক্ষে মত দিলেও আপত্তি জানিয়েছে ইআরডি।

সূত্র জানায়, আগে যৌথ কমিশনের বিষয়টি দেখভাল করত ইইউর উন্নয়ন সহায়তা বিভাগ। কয়েক বছর আগে বিষয়টি ন্যস্ত করা হয় ইইউর পররাষ্ট্র দপ্তরের ওপর। যেহেতু ইইউ নিজে বিষয়টিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পুনর্গঠন করেছে, সেহেতু জোটটি চাইছে বাংলাদেশেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টির দায়িত্ব নিক। এছাড়া বিভিন্ন দেশের ঋণ, অনুদানের মতো বিষয়গুলো পুরোদস্তুর রাজনৈতিক। মূলত দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করেই এগুলো ছাড় করা হয়। অন্যান্য দেশে তাই বিষয়গুলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই দেখভাল করে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-ইইউর যৌথ কমিশনের সর্বশেষ বৈঠক (অষ্টম বৈঠক) অনুষ্ঠিত হয়েছিল বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইইউর সদর দপ্তরে। ২০০১ সালে স্বাক্ষরিত ‘কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট অন পার্টনারশিপ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ চুক্তির আওতায় এ যৌথ কমিশনের নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশ ও ইইউর মধ্যে যৌথ কমিশনের নবম বৈঠক চলতি বছরের মাঝামাঝি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। যদিও এ বৈঠক গত বছরেই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইইউ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ