পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আবারো একটি তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে চলতি মে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) মাসে। এ সময় তাপমাত্রার পারদ অতিক্রম করে যেতে পারে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘর। গেল এপ্রিল মাসের মতোই এমনকি আরও অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে খরার দহন। এছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এক থেকে ২টি মৃদু (৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সে.) থেকে মাঝারি (৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সে.) ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তাছাড়া মে মাসে বঙ্গোপসাগরে ২টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এরমধ্যে ঘনীভূত ও শক্তি সঞ্চয় করে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আগামীতে যখন সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে এর নাম দেয়া হবে ‘বায়ু’।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় দেওয়া দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে একথা জানা গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র ঢাকায় গতকাল (রোববার) অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আহমেদ। এতে বাংলাদেশ, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক আবহাওয়া-জলবায়ু পরিস্থিতি, ‘এল নিনো’ অবস্থা, জলবায়ু মডিউলসহ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করা হয়। এদিকে তীব্র গরমের মধ্যদিয়েই এবার শুরু হতে যাচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজান। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের খরার দহনের সাথে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, লোডশেডিং এবং পানির কষ্ট রোজাদারদের জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ইতোমধ্যে নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর-দীঘি, কুয়া, নলকুপ, পাহাড়ি ঝরণাসহ পানির উৎসগুলো শুকিয়ে গেছে। সর্বত্র বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট প্রকট। অন্যদিকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন ও অস্থায়ীভাবে সিলেটের বর্ষণ ছাড়া দেশের আর কোথাও ছিটেফোঁটা বৃষ্টিপাত হয়নি। বরং তীর্যক সূর্যের কড়া রোদে ঝলসে গেছে শহর-নগর-গ্রাম জনপদ। সর্বশেষ আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, আজ (সোমবার) থেকে সারাদেশে তাপমাত্রার পারদ বেড়ে যেতে পারে। প্রথম রোজার দিনে (মঙ্গলবার) গরমের দাপট আরো বাড়বে। চলতি সপ্তাহজুড়ে অর্থাৎ রমজানের প্রথম দিকে তাপদাহে খরতপ্ত আবহাওয়া বজায় থাকতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়া পূর্বাভাসে আরও জানা গেছে, চলতি মে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাসহ মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত ২ থেকে ৩ দিন মাঝারি থেকে প্রবল আকারে কালবৈশাখী ঝড় তথা বজ্রঝড় আঘাত হানতে পারে। তাছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ৩ থেকে ৪ দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী ঝড় বা বজ্রঝড় সংঘটিত হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, চলতি মে মাসব্যাপী নদ-নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকবে। তবে এ মাসের প্রথমার্ধে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ সংশ্লিষ্ট ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানির সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। এ কারণে কোথাও কোথাও আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটতে পারে।
এ পরিস্থিতিতে তীব্র তাপপ্রবাহ, কালবৈশাখী ঝড়, সামুদ্রিক নিম্নচাপ-ঘূর্ণিঝড়, বজ্রপাত কিংবা বজ্রঝড়, হঠাৎ অকাল বন্যার মধ্য দিয়ে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে চলতি মে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) মাসজুড়ে। গত এপ্রিল মাসেও দেশের অনেক জেলায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করে। যা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, ফল-ফসলের আবাদ ও উৎপাদন ব্যাহত করে।
এদিকে চলতি মে মাসের বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসে বিশেষজ্ঞ কমিটি বলছে, এ মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গত এপ্রিল (চৈত্র-বৈশাখ) মাসের বৃষ্টিপাতের হিসাবে দেখা যায়, গত মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরমধ্যে বিভাগওয়ারি হিসাবে ঢাকা বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৮ শতাংশ কম, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪২.৩ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এর আগে গত মার্চ মাসে দেশে সার্বিক বৃষ্টিপাত ছিল প্রায় স্বাভাবিক। গত ফেব্রæয়ারি মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে ১৬২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়। গত এপ্রিল মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল উত্তরাঞ্চলের বরেন্দ্র জনপদ রাজশাহীতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টানা দুই সপ্তাহেরও বেশিদিনের অসহনীয় তাপদাহে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়। দুর্বল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ গত শনিবার বাংলাদেশের ওপর দিয়ে কেটে যাওয়ার সময় বৃষ্টিপাতের ফলে তাপমাত্রা স্থানভেদে ৩ থেকে ৮ ডিগ্রি হ্রাস পায়। কিন্তু গতকাল ফের বেড়ে চলে তাপমাত্রার পারদ।
খরতাপের মধ্যদিয়ে শুরু হবে এবার মাহে রমজান। ঘূর্ণিঝড় ফণির দুর্বল আঘাতের পর বাংলাদেশের আবহাওয়ায় তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। বরং গতকাল থেকে ফের ভ্যাপসা গরমের মধ্যদিয়ে তাপপ্রবাহের আলামত শুরু হয়েছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মংলায় ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৩.৯ এবং সর্বনি্ম ২৩ ডিগ্রি সে.। চট্টগ্রামে ৩২.৯ এবং ২৫ ডিগ্রি সে.। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বিক্ষিপ্তভাবে সিলেটে ১১, কক্সবাজার ও নেত্রকোনায় ১ মিলিমিটার ছাড়া দেশের কোথাও বৃষ্টিপাত হয়নি।
আজ (সোমবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। রাতের তাপমাত্রা স্থানভেদে ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় তাপমাত্রার পারদ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এর পরের ৫ দিনেও তপ্ত আবহাওয়ায় তেমন পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।