বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে খুলনা অঞ্চলে থেমে থেমে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। একই সাথে দমকা হাওয়া বইছে। প্রচ- গতির বাতাস হওয়ায় বেশ কিছু অঞ্চলে গাছপালা ভেঙে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। জোয়ারে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে।
এলাকাবাসী বলছেন, ত্রাণ চাই না, বাঁধ চাই। শুক্রবার গভীর রাতে ফণীর প্রভাবে কয়রার ঘাটাখালীর বাঁধের অনেক স্থান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দুপুরের জোয়ারে কি হবে জানিনা।
তারা অভিযোগ করছেন, উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারী মানুষের একটা অংশ চায় বাঁধ হোক (বৃহৎ অংশ), আরেকটা অংশ যারা চায় মাঝে মাঝে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যাক। বিপদ এলে সরকার এই এলাকার মানুষকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে। লাখ লাখ টাকা খরচ করে আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করে, বানভাসী মানুষের জন্য ত্রাণ পাঠায়। অথচ বাঁধগুলো যদি ঠিক করে এসব কিছুরই প্রয়োজন হয় না। কিন্তু তা করে না। বাঁধগুলোর যে অবস্থা একটু ধাক্কা এলেইতো সব শেষ। এতো এতো টাকা খরচ না করে টেকসই বাঁধ রক্ষার ব্যবস্থা করলেই মানুষ নিরাপদে থাকতে পারে।
শনিবার ভোর থেকে দমকা বাতাসের সাথে শুরু হয় বৃষ্টি। ঝড় শুরু হওয়ায় উপকূলীয় এলাকা দাকোপ ও কয়রায় ফণীর আতঙ্কে মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ঠাঁই নিয়েছে বলে জানা যায়। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) প্রায় সাড়ে ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক।
জানা গেছে, ফণীর প্রভাবে খুলনার উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় সব নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চার ফুট উচ্চতার জোয়ার উঠেছে। এতে চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। দাকোপের বাণীশান্তা বাজারের উত্তর পাশে বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। লোকালয়ে পানি ঢোকায় বাণিশান্তা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় আছে। এছাড়া দক্ষিণের উপকূল কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নে রাতভর নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। সকাল ৯টায় হঠাৎ বাঁধরে দু'টি অংশে ভাঙন দেখা দেয়। এতে স্থানীয় গোলখালী, মাটিয়াভাঙ্গা ও মোল্যাপাড়া গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। এছাড়া দাকোপের কালাবগী ঝুলন্ত পাড়া এলাকায় বাঁধ ভেঙে গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে।
দাকোপ সদরের ইউএনও আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, 'নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দাকোপের বাণীশান্তা বাজারের উত্তর পাশে বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়েছেন গ্রামের মানুষ।'
কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারুপ বিশ্বাস বলেন, 'নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জোয়ারের সময় দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে ঢুকেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাঁধ ভাঙেনি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'
কালাবগী ঝুলন্ত পাড়ার বাসিন্দা মোখতার শেখ বলেন, 'এখানের বাঁধ এমনিতেই সব সময় ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। জোয়ারের পানি বাড়ায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ঝুলন্ত পাড়ার ঘরগুলো ভেঙে যেতে পারে।'
খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের বাসিন্দা আবু সাঈদ বলেন, রাতে জোয়ারের পানি ওয়াপদা পেরিয়ে গ্রামে ঢুকেছে। ইউনিয়নের বাঁধের ১০টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। সেই ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকেই দু'জায়গায় ফাটল ধরেছে। নতুন করে গোলখালী, মাটিয়াভাঙ্গা ও মোল্যাপাড়া প্লাবিত হচ্ছে।
খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, কয়রার বেড়িবাঁধের বেশকিছু এলাকা রাতের জোয়ারে ভেঙে গেছে। দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ১৪/১ পোল্ডারে গোলখালী গ্রামে কপোতাক্ষ নদের মোহনায় ওয়াপদা বেড়িবাঁধ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। রাতে কয়েক জায়গায় ভেঙে গেছে। এছাড়া কয়রার ঘাটাখালি বেড়িবাঁধও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। পানির যে চাপ তাতে যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে গ্রাম তলিয়ে সিডর-আইলার মতো ক্ষতি হতে পারে।
তিনি জানান, শনিবার সকালে মাটিয়াভাঙা ও গোলখালী বেড়িবাঁধের যেসব স্থান ভেঙে গেছে সেখানে এলাকাবাসীকে নিয়ে সংস্কার করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।