পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চলতি মে মাসের শুরুতে সাত শতাংশ সুদে খেলাপি ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি মে মাসের ১৫/১৬ তারিখ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। এছাড়া খেলাপি ঋণ আদায়ে গঠন করা হচ্ছে কোম্পানি।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, সাত শতাংশ সুদে খেলাপি ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেয়া হবে। তবে এ সুবিধা নিতে মূল ঋণের দুই শতাংশ এককালীন পরিশোধ করতে হবে এবং সুদসহ বাকি অর্থ পরিশোধ করা যাবে সর্বোচ্চ ১২ বছরে।
নতুন এ নিয়ম ২ মে থেকে কার্যকর করার কথা বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী। তবে এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, কীভাবে খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তা নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ করছে। কর্মকর্তারা বাজেট নিয়েও এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। খেলাপি ঋণ পরিশোধে সাত শতাংশ সুদহার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ওই কর্মকর্তা জানান, চলতি মাসের ১৫/১৬ তারিখে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।
অন্যদিকে, সবচেয়ে খারাপ খেলাপি ঋণ আদায়ে গঠন করা হচ্ছে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি বা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। প্রস্তাবিত কোম্পানিটিকে আদায়কৃত অর্থের একটি অংশ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, যেসব খেলাপি ঋণ ব্যাংক আদায় করতে ব্যর্থ হবে কেবল সেসব কুঋণই বেসরকারি খাতে গড়ে তোলা এ কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করা হবে। যদি কোম্পানিটি খেলাপি ঋণ আদায় করতে সমর্থ হয় তবে আদায়কৃত অর্থের ২০, ৩০ এমনকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দিয়ে দেয়া হবে। এ জন্য একটি নতুন আইনও করার চিন্তা করা হচ্ছে। কোম্পানিটির নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, ‘সিকিউরিজেশন অব নন পারফরমিং লোন। এই আইন বলে ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক প্রয়োজনে ঋণ খেলাপির প্রতিষ্ঠান দখলে নিতে পারবে। বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংককে অভিহিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বর্তমানে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। অবলোপনকৃত ঋণ ধরলে তা দাঁড়াবে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খেলাপি ঋণ আদায়ে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের দৃষ্টান্ত পর্যালোচনা করে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে ভারত, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়াকে। এসব দেশে কীভাবে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠন করে খেলাপি ঋণ আদায় করা হচ্ছে, তা পর্যালোচনা করে সেই আদলে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির গঠন প্রক্রিয়া চলছে। খেলাপি ঋণ আদায়ে প্রস্তাবিত কোম্পানির কাজ কী হবে, তা জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, খেলাপি ঋণ আদায়ে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে একটি চুক্তি করবে। চুক্তি অনুযায়ী, ব্যাংক যে খেলাপি ঋণগুলো আদায়ে ব্যর্থ হয় সেগুলোর হিসাব কোম্পানির কাছে ট্রান্সফার করে দেবে। আর এ ঋণগুলো আদায়ে ব্যবস্থা নেবে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। সরকারি- বেসরকারি দুই ধরনের কোম্পানিই খেলাপি ঋণ আদায়ে কাজ করতে পারবে। তবে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবন্ধিত হতে হবে।
কোম্পানি গঠনের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। তিন সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব মু. শুকুর আলীকে। অপর দুই সদস্য হলেন- একই বিভাগের উপসচিব সাঈদ কুতুব ও অগ্রণী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিছুর রহমান। কমিটির কার্যপত্রে পাঁচটি বিষয়ের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি গঠনের প্রয়োজনীয়তা, গঠন প্রক্রিয়া, সম্পদ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, আইন সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা (যদি থাকে) এবং এ বিষয়ে অন্যান্য দেশের রীতিনীতি পর্যালোচনা করা।
জানা গেছে, বাংলাদেশে এ ধরনের কোম্পানি গঠন এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০০১ সালেও তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ করে তৎকালীন সরকার। ২০০৩ সালে বিএনপি সরকারের অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের সহযোগিতায় সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পিপলস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস করপোরেশন (পিডিএসসি) লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি দ্বিপক্ষীয় চুক্তির ভিত্তিতে খেলাপি ঋণ আদায় কার্যক্রম শুরু করে। পরে এ জাতীয় আরো কোম্পানি গড়ে ওঠে এবং সোনালী, অগ্রণীসহ কয়েকটি ব্যাংক তাদেরকে খেলাপি ঋণ আদায়ের দায়িত্ব দেয়। শুরুর দিকে এ ক্ষেত্রে কিছু সফলতা আসলেও পরবর্তীকালে এক শ্রেণির কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতির কারণে তা প্রায় ব্যর্থ হয়ে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।