Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কাভার্ডভ্যান চালক গ্রেফতার

সড়ক দুর্ঘটনায় ব্র্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নিহত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

রাজধানীর কলেজগেট এলাকায় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাহমিদা হক লাবণ্য (২১) নিহতের ঘটনায় ঘাতক কাভার্ডভ্যান চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে কাভার্ডভ্যানসহ চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুন্সি। তবে কোথায় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তার নাম পরিচয় বিস্তারিত বলেনি পুলিশ। আজ রোববার সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুন্সি গতকাল শনিবার বিকেলে বলেন, সকালে আমাদের এসি স্যার টিম নিয়ে বেরিয়ে গেছেন। শুনেছি, কাভার্ডভ্যানসহ চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে কোথায় থেকে এবং তার নাম পরিচয় সম্পর্কে জানা যায়নি। কারণ তাকে এখনো থানায় আনা হয়নি। ওসি বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ হেফাজতে নেয়া উবার চালক সুমন পুলিশি পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। কাভার্ডভ্যান চালককে থানায় আনার পর দু’জনকে মুখোমুখী করা হবে। তখন বুঝা যাবে কার দোষ।
কাভার্ডভ্যান চালককে গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে তেজগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনারকে (এসি) কল করলে তিনি বিজি আছেন বলেন সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেন। পরে জানতে চাইলে তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজ বেলা ১১টায় এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
এদিকে লাবণ্য হত্যায় কাভার্ডভ্যান চালককে আইনের আওতায় আনার দাবিতে গতকাল বেলা দেড়টার দিকে মহাখালী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে লাবণ্যের সহপাঠীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
‘ঘুম ভাঙেনি বিবেকের। ঘুমন্ত বিবেক নিয়ে সড়কে চলাচল করা বিপজ্জনক; এর বড় উদাহরণ লাবণ্যর অবেলায় চলে যাওয়া। অব্যবস্থাপনার সড়কে থামেনি মৃত্যুর মিছিল। জানি না বাইরে থেকে ঘরে নিরাপদে ফিরতে পারব কিনা। বাইরে থেকে বাড়ি ফিরতে না পারলে আমাকে ক্ষমা করিস মা।’ লাবণ্যের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে এভাবেই আবেগতাড়িত বক্তব্য দেন সহপাঠীরা।
মানববন্ধনে প্ল্যাকার্ডগুলোতে লেখা- হোয়ার ইজ মার্ডারার? ৩০০ টাকার হেলমেট জীবন বাঁচাবে তো? আজ নিরাপদে বাড়ি ফিরব তো? উবার-পাঠাও চালকদের দক্ষতা পরীক্ষণের মাধ্যমে আলাদা নীতিমালা চাই, দয়া করে সকালে ঘুম থেকে উঠি, কারণ বিবেকের ঘুম এখন না ভাঙলে হয়তোবা রাস্তায় আপনার শেষ ঘুম হতে পারে, সাবধান, সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামে নাই! সড়কে মৃত্যুর মিছিল আর কতো? লাবণ্যের মতো আর কারো মৃত্যু কাম্য নয়, চলে গেল আমার বোন লাবণ্য, বাড়ি ফিরতে না পারলে মা আমাকে ক্ষমা করিস, আর কতো মেধাবী রক্ত দিবে?
মানববন্ধনে অংশ নেয়া লাবিব সাদ ওয়াহিদ নামে বিবিএ শিক্ষার্থী বলেন, ৩০০ টাকার হেলমেট পরিয়ে উবার কিংবা পাঠাওয়ের মতো অ্যাপসভিত্তিক পরিবহন সেবা গ্রহণ কতোটা যৌক্তিক? আমরাও হরহামেশা উঠছি, চলাচল করছি। সময় এসেছে বদলে যাওয়ার। আমরা চাই ট্রাফিক বিভাগ মানহীন এসব হেলমেট বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগ নিক। আমরা লাবণ্যের মতো আর কোনো মৃত্যু চাই না।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, যে সময় কাভার্ডভ্যান লাবণ্যের উবারকে ধাক্কা দিয়েছে, সেই সময় তো রাজধানীতে ভারী যান বা কাভার্ডভ্যান চলার কথা নয়। কিন্তু পুলিশ কোথায় এই কাভার্ডভ্যানটি আটকায়নি। আটকিয়ে আইনী ব্যবস্থা নিলে হয়তো এমনটি হতো না।
গত বৃহস্পতিবার রাইড শেয়ারিং সার্ভিস ‘উবার মোটো’তে করে শ্যামলী থেকে খিলগাঁওয়ে যাওয়ার পথে রাজধানীর কলেজগেট এলাকায় একটি কাভার্ডভ্যানের চাপায় নিহত হয় লাবণ্য। ওইদিন রাতে উবার মোটরবাইক চালক সুমন হোসেনকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার একটি মামলা করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিহত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ