Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যেভাবে শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার তথ্য পায় ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:৪৭ পিএম

২১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার ইস্টার সানডেতে বোমা হামলার আগে শ্রীলঙ্কার সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে ভারত তিনটি নির্দিষ্ট সতর্ক বার্তা দিয়েছিল। বিস্ফোরণ শুরু হওয়ার মাত্র এক ঘণ্টা আগেও চূড়ান্ত সতর্কতা জানানো হয়েছিল। ভারতীয় গোয়েন্দাদের প্রাপ্ত তথ্যের অন্যতম উৎস ছিল সন্দেহভাজন এক হামলাকারীর সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত। ঐ হামলাকারীর তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বার বার লঙ্কান কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিল দিল্লি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব গোয়েন্দা সতর্কতা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় শ্রীলঙ্কা। এমনটাই উঠে এসেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের অনুসন্ধানে।
এপ্রিলের ৪ তারিখে প্রথম সতর্কবার্তা জানানো হয়েছিল। দ্বিতীয় সতর্কবার্তাটি হামলার একদিন আগে অর্থাৎ ২০ এপ্রিল পাঠানো হয়েছিল এবং চূড়ান্ত সতর্কবার্তা হামলার দিন সকালে পাঠানো হয়। জ্ঞাত ঐ ব্যক্তি জানান, সতর্কবাণীতে নির্দিষ্ট করে জানানো হয়েছিল যে, গির্জা এবং হোটেল হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। ইস্টার সানডের হামলার আগে শ্রীলঙ্কান কর্মকর্তারা সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী উভয়ই বলেছেন যে, তারা তথ্যটি পাননি।
ভারতের কারাগারে বন্দি সন্দেহভাজন এক হামলাকারীর কাছ থেকে এ সংক্রান্ত পরিকল্পনার ব্যাপারে জানতে পারে দিল্লি। জিজ্ঞাসাবাদে কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে তথ্য দেয় সে বলে সিএনএনকে জানিয়েছেন ভারতীয় এক কর্মকর্তা। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ওই সন্দেহভাজন জানায়, শ্রীলঙ্কায় সে এক ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। স্থানীয় চরমপন্থিদের সঙ্গে ওই ব্যক্তির ভালো সম্পর্কও রয়েছে।
ইতোমধ্যে শ্রীলঙ্কায় আত্মঘাতী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস। জঙ্গিদের কথিত মুখপত্র ‘আমাক নিউজ এজেন্সি’ থেকে প্রকাশিত এক ভিডিওতে সংগঠনের শীর্ষ নেতা আবু বকর আল বাগদাদির প্রতি আট ব্যক্তিকে আনুগত্য প্রকাশ করতেও দেখা গেছে। আইএসের দাবি, শ্রীলঙ্কার চার্চ ও হোটেলের আত্মঘাতী হামলায় তারাই জড়িত ছিলো। হামলার মাস্টার মাইন্ড হিসেবে জাহরান হাশিম নামে এক ব্যক্তির ছবিও প্রকাশ করা হয়।
আইএসের প্রকাশিত ভিডিওতে যে আট ব্যক্তি উপস্থিত ছিল তারা শ্রীলঙ্কায় ন্যাশনাল তাওহিদ জামাত নামের একটি ছোট সংগঠনের সদস্য বলেও জানা গেছে। এই সংগঠনটি শ্রীলঙ্কায় মূলত আইএসের মতাদর্শকে ধারণ করে এবং এর চর্চাও করে। হামলার তদন্তে শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষও এই সংগঠনটিকে বিবেচনায় রেখেছে।
শ্রীলঙ্কার ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) বুধবার জানায় যে, এক নারীসহ মোট ৯ জন আত্মঘাতী হামলাকারী বোমা হামলা ঘটায়। নয়জনের মধ্যে ৮ জনকে পুলিশ চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়, বাকি আরেকজন এক হামলাকারীর স্ত্রী।
ইস্টার সানডের হামলাগুলোতে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩২ জনকে সিআইডির আওতায় রাখা হয়েছে। আটককৃত সবাই শ্রীলঙ্কান নাগরিক বলেও জানায় কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান যে, ‘হামলাকারীরা অধিকাংশই আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবার থেকে আসা। তারা অনেকেই উচ্চশিক্ষিত, যার ভেতর একজন বিদেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রিও অর্জন করেছে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রীলঙ্কা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ