Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বেল্ট অ্যান্ড রোড

বৃহস্পতিবার চীনের বেইজিংয়ে সম্মেলন শুরু অংশ নিচ্ছে ১৫০টি দেশ : যোগ দিচ্ছেন ৪০ দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আগামীকাল থেকে চীনের বেইজিংয়ে শুরু হচ্ছে বেল্ট অ্যান্ড রোড সম্মেলন। চলেবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। দ্বিতীয়বারের মতো বেল্ট অ্যান্ড রোড সম্মেলনে বিশ্বের ১৫০টি দেশ অংশগ্রহণ করছে। এই সম্মেলনে ৪০টি দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান যোগ দিচ্ছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, আসিয়ান দেশগুলোর সরকারপ্রধান, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, অস্ট্রিয়া, এশিয়া ও আফ্রিকার নেতারা এ সামিটে যোগ দেবেন। বহুল আলোচিত বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে ১২৬টি দেশ ও ২৯টি আন্তর্জাতিক সংস্থা। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বেল্ট অ্যান্ড রোড সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। প্রতিনিধিদলে থাকছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক অ্যাডভাইজরি প্যানেলের বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল। সম্মেলনে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বক্তব্য রাখবেন। সূত্র জানায়, প্রতিনিধি দলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন।
এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ভবিষ্যত উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য অর্থ চায় বাংলাদেশ। তবে চীনের কাছে কখনো আর ঋণ বা লোন চাইবে না। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠেয় বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামের সম্মেলনের আগে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেসব দেশ উচ্চ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে না, তাদের জন্য যেকোন অংকের ঋণ বিপজ্জনক হতে পারে। বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সঙ্গে সম্পর্কিত ঋণ শোধ করার মতো অর্থনৈতিক শক্তি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, তা সত্তে¡ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমৃদ্ধ করতে ঢাকা এখন অন্য অর্থনৈতিক মডেলের দিকে নজর দিয়েছে।
আসন্ন বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামে ঢাকা কি আরো ঋণ চাওয়ার পরিকল্পনা করছে? এমন প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, তার সরকারের কখনো এমন ইচ্ছা ছিল না। কখনো আর অধিক ঋণ চাইবে না। তিনি বলেন, আমরা বহু কোম্পানি ও দেশের সঙ্গে অনেক প্রকল্প স্বাক্ষর করেছি। এটা হলো একটি প্রতিযোগিতামূলক ‘বিডিং’ পদ্ধতি। আমরা ওইসব কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করছি যারা বাংলাদেশে নিজেদেরকে কমকান্ড চালাতে পারে এবং নিজেরাই নিজেদের জন্য ঋণ আনতে পারে। এটাই আমাদের কাছে উত্তম।
তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মতো অন্যান্য আর্থিক মডেলও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আমরা নতুন নতুন অর্থনৈতিক মেকানিজম বা কৌশল প্রণয়ন করছি। এভাবেই আমাদের ভবিষ্যতকে অর্থায়ন করতে চাই।
বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ ঘিরে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ সমালোচনা করে আসছে। এসব দেশের অভিযোগ চীন এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভূ-রাজনৈতিক বলয় তৈরি করতে চায়। তবে বেল্ট অ্যান্ড সামিট সামনে রেখে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং আই এই অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েছেন।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সহযোগিতা করুন, না হয় সমালোচনা বন্ধ করুন। এই উদ্যোগের মধ্যে চীনের কোনো ভূ-রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। এই উদ্যোগে অংশ নেওয়ার জন্য সব দেশকে স্বাগত জানায় চীন।
এর আগে ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো বেল্ট অ্যান্ড রোড সামিটের আয়োজন করেছিলো চীন। সে সময় এতে ১৫০টি দেশ থেকে ৫ হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি যোগ দেন।
২০১৬ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশ বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেয়। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট লিখেছে, চীনা প্রেসিডেন্টের ওই সফরকালে দু’দেশের সরকার বিনিয়োগ ও ঋণ সংক্রান্ত ২৭টি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর অর্থমূল্য ২৪০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা সব সময় চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আসছে। শিনজিয়াং প্রদেশ থেকেই চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ মধ্য এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ