গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
শ্রীলংকা জুড়ে গির্জা এবং হোটেলে ছয়টি বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এ নারকীয় এই হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। হামলার নেপথ্য কারণ নিয়ে নানা মন্তব্য ও বিশ্লেষণ তুলে ধরছেন তারা।
রোববার শ্রীলঙকার পাঁচ তারকা হোটেল সাংরি লা, কিংসবেরি এবং সিনামন গ্রান্ড হোটেলে বিস্ফোরণ হয়। এ হোটেলগুলো কলম্বো শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত। আর গির্জাগুলোতে যখন বিস্ফোরণ হয় তখন ইস্টার সানডে পালনের জন্য অনেকে প্রার্থনায় ছিলেন।
গির্জায় হামলার নিন্দা ও শোক জানিয়ে ফেসবুকে বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘পৃথিবীর সব ধর্মই শান্তির কথা বলে। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো তাদের বহুমুখী সম্প্রসারণবাদী নীতি বাস্তবায়নে সেই শান্তির মধ্যে হিংসার বীজ বোপন করে। ফলে ধর্মীয় স্থাপনা, ধর্মীয় বিষয়, ধর্মীয় স্থানগুলো রক্তাত্ত হয়। এ মুহূর্তে আমি বাংলাদেশের খ্রিস্টান ধর্মীয় স্থান এবং ইস্টার সানডে পালিত হচ্ছে এমনস্থানগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যান্য ধর্মীয় স্থানগুলো ও দেশের মধ্যে চরমাভাবাপন্ন শক্তিগুলোর প্রতি নজরদাবী বৃদ্ধির দাবী জানাচ্ছি।’’
ফিরুজ আহাম্মাদ লিখেছেন, ‘‘নিন্দার ভাসা খুঁজে পাচ্ছি না এমন নারকীয় হামলার জন্য আজ বিশ্ববাসী হতবাক। যার তার ধর্ম সে সে স্বাধীনভাবে পালন করবে, এটাই স্বাভাবিক। যারাই হামলা করেছে তারা কখনোই কোন ধর্মের অনুসারী হতে পারে না, তারা সন্ত্রাসী।’’
‘‘আমরা কোথাও নিরাপদ না মানুষ নামের (জঙ্গী) জানোয়ার গুলো থেকে। এমন কি আমাদের ধর্মভিত্তিক পবিত্র স্থানগুলোতে যেমন মসজিদ, গির্জা, মন্দির। কি দোষ ছিলো এই নিরপরাধ মানুষ গুলোর’’ আক্ষেপের সাথে কথাগুলো লিখেছেন হাসিবুল আলম সজিব।
ফেসবুক ব্যবহারকারী িইসতিয়াম আহমেদ সুমন মন্তব্য করেছেন, ‘‘কেন পৃথিবীর কোথাও কোন হামলা হলে আগে আসে কোন মুসলমানদের নাম? কোন কিছু না দেখে না শুনে কে করেছে মুসলমান। মানে কি এই কথার। অন্য কোন ধর্ম কেউও তো করতে পারে। আগে তদন্ত করে দেখেন। তারপর আঙ্গুল তুলে দেখাবেন। তার আগে কোন কথা বলার...।’’
এদিকে, ইস্টার সানডেতে শ্রীলংকায় তিন গির্জা ও চার হোটেলে বোমা হামলা ও কয়েক শত হতাহতের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। ভারত, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হতাহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি গভীর দু:খ ও শোক প্রকাশ করেন।
ফেসবুকে মেহেদী হাসান আশঙ্কা প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘‘আমার কেনো যেন মনে হয় মুসলিম আর খ্রিস্টানদের মধ্যে যুদ্ধ লাগানোর জন্য তৃতীয় কোন ধর্ম বা আদর্শের বিশ্বাসী গোষ্ঠী সারা বিশ্বে সন্ত্রাসী হামলা করতেছে। কারন প্রতিটি বোমা হামলার স্বীকার হয় শুধু মুসলীম আর খ্রীস্টান সম্প্রদায় গোষ্ঠীর সাধারন মানুষ। জাতিসংঘের মাধ্যমে সঠিক তদন্তের সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের শ্বাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।’’
‘‘হিন্দু, মুসলিম,বৌদ্ধ,খৃষ্টান বুজি না। হামলাকারি যেই হোক তার কঠিন বিচার করা হোক। কোন ধর্মেই এই রকম বর্বর হত্যাকান্ডকে অনুমতি দেয় নাই’’ এমনটাই দাবি জানিয়েছেন মিনহাজ উদ্দিন।
ফাতিন ফাইয়াজ ইসতি লিখেছেন, ‘‘সবারই ধর্ম পালনের স্বাধীনতা আছে। আর কত রেষারেষি? আসুন আমরা নিজেদের ধর্মকে ভালভাবে আঁকড়ে ধরি ও অন্যের ধর্ম পালনে বাধা না দিয়ে জান্নাত হাসিলের জন্য নিজের ঈমানকে শক্ত করি।’’
মির্জা আরাফাতের মন্তব্য, ‘‘পৃথিবীর যে প্রান্তেই সন্ত্রাসী কিংবা জঙ্গি হামলা হয় না কেনো,তার পিছনে কাজ করে মোসাদ ও সিআইএ,আর কালিমা লেপন করা হয় স্বাধীনতাকামী বা মুসলিমদের উপর। অথচো জঙ্গি কিংবা সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই,নেই কোনো দেশ।’’
ফেসবুক ব্যবহারকারী জহিরুল হক মঞ্জু লিখেছেন, ‘‘এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই আমরা গভীর ভাবে শোকার্ত সন্ত্রাসী কোন দল কোন জাতি বিবেচনা না করে যে হোক তাদের কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’’
মো. আবছার কামাল লিখেছেন, ‘‘পৃথিবী জুড়ে এতো হানাহানি,হিংসাত্মক, মারামারি কেন হয়,কিছুই বুঝতে পারতেছি না!নাকি পৃথিবীর মানুষের মানবতা,ভালবাসা,সুশাসন উঠে গেছে?’’
‘‘মানুষ মানুষের জন্য না হয়ে মানুষ নামের অমানুষ গুলো দিন দিন পৃথিবীতে বিভাজন সৃষ্টি করে যাচ্ছে এইসব বর্বরোচিত হামলা করে।মানুষ কেন মানুষ হলো না!’’ লিখেছেন আলমগীর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।