পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাদরাসাছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় দেশজুড়ে যখন ধর্ষণ আর নিপীড়ন বিরোধী নানা কর্মসূচি চলছে ঠিক তখনই চট্টগ্রামে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হলো দুই কিশোরী। অন্যদিকে নিজের ইজ্জত বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিলেন এক গৃহবধূ। চাঞ্চল্যকর এ তিনটি ঘটনার দুটিতে মামলা হয়েছে আসামিরাও গ্রেফতার হয়েছে। তবে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার পটিয়ার এক কিশোরী এখনও হাসপাতালে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত এ ঘটনায় কোন মামলা হয়নি গ্রেফতার হয়নি ধর্ষকদের কেউ। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ কিশোরীর স্বজনেরা।
এদিকে নগরীর আগ্রাবাদে কিশোরীকে সাত দিন আটকে রেখে ধর্ষণের পর তার ওপর পাশবিক নির্যাতনের দায় স্বীকার করেছে ধর্ষক। আশ্রয়হীন ওই কিশোরীর ঘর বাঁধার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দেয়ার বর্ণনা দিয়ে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন প্রধান আসামি অটোরিকশা চালক মো. নিজাম উদ্দিন। একই আদালতে তার নানী শাশুড়ি ফিরোজা বেগমও জবানবন্দী দিয়ে কিশোরীর গালে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়াসহ পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা বর্ণনা দেন। অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মহিউদ্দিন মুরাদ এ দুই আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী রেকর্ড করেন। অপর চার আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদরঘাট থানার এসআই সুলভ বিশ্বাস।
আদালতে দেয়া জবানবন্দীর বরাত দিয়ে থানার ওসি নেজাম উদ্দিন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আসামি ওই কিশোরীকে টানা এক সপ্তাহ আটকে রেখে ধর্ষণ করার ঘটনা স্বীকার করেছে। তার সাথে প্রতারণা করার কথাও স্বীকার করে সে। পরে তার স্ত্রী তানিয়া বেগম ও স্বজনরা কিশোরীর ওপর নির্যাতনও করে। তাকে মারধর করে চুল কেটে দেওয়া হয়। মুখে দেওয়া হয় সিগারেটের ছ্যাঁকা। ওসি জানান, বাকি চার আসামিকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তারা হলেন- প্রধান আসামির স্ত্রী তানিয়া বেগম, তানিয়ার খালা পপি বেগম, তানিয়ার বোন সোনিয়া বেগম ও তার স্বামী মো. লিটন। এদের মধ্যে পপি বেগম নগরীর পলোগ্রাউন্ডে র্যাবের বন্দুকযুদ্ধে নিহত ইসহাকের পুত্রবধূ বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধর্ষিত কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল তাকে তার পিতার জিম্মায় দেয়া হয়েছে বলে জানান ওসি নেজাম উদ্দিন। ওই কিশোরী নগরীর আগ্রাবাদের একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করে। ফুফুর বাসায় থেকে চাকরি করার একপর্যায়ে নিজামের সাথে তার দেখা থেকে পরিচয় হয়। নিজাম নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ছোটবেলায় মাকে হারায় সে। এরপর পিতা বিয়ে করে অন্যত্র চলে যায়। অনাথ এ বালিকা বড় হন ফুফুর আশ্রয়ে। এ অবস্থায় নিজামের বিয়ের প্রস্তাব পেয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেন এ কিশোরী। তার প্রস্তাবে রাজি হলে সে কিশোরীকে তুলে নিয়ে নগরীর আগ্রাবাদ-চৌমুহনি এলাকার একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে নিজামের স্ত্রী ও তার স্বজনেরা ঘটনা জানতে পেরে কিশোরীকে তুলে নিয়ে তার উপর নির্যাতন চালায়। আর এতে করে কিশোরীর সাথে নিজামের প্রতারণার কাহিনীও প্রকাশ পায়।
পহেলা বৈশাখে গণধর্ষণ, মামলা হয়নি এখনও
বর্ষবরণের অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার পটিয়ার অপর কিশোরী এখনও চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওইদিন বিকেলে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে পটিয়া হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। নির্যাতিত কিশোরীর বড় ভাই দিদারুল আলম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বোনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় আমরা এতটাই ভেঙ্গে পড়ি যে মামলা করার সময় পাইনি। তবে ঘটনা জানাজানি হয়েছে, থানা-পুলিশকেও জানানো হয়েছে। এরপরও পুলিশ তিন আসামির কাউকে গ্রেফতার করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি। কিশোরীর আইনজীবী ফোরকান আহমেদ জানান, গতকাল তিনি একটি এজাহার প্রস্তুত করে দিয়েছেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ওই কিশোরী পটিয়ায় পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে গেলে তার পূর্ব পরিচিত রিপনের সাথে দেখা হয়। এরপর রিপন তাকে ভ্যানিটি ব্যাগ ও আরও কিছু জিনিসপত্র কিনে দেওয়া আর ডিসি হিলে বৈশাখী মেলা দেখানোর প্রলোভন দিয়ে শহরে নিয়ে আসে। মেলায় না নিয়ে কিশোরীকে নগরীর বাকলিয়া থানার রাজাখালী এলাকায় তার বন্ধু মান্নানের বাসায় নিয়ে তোলে। সেখানে রিপন, মান্নান এবং তাদের অপর বন্ধু নুর হোসেনসহ তিনজন মিলে ওই কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে কিশোরী রক্তাক্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
এ অবস্থায় তারা তাকে একটি অটোরিকশায় তুলে পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে তাকে সেখানে রেখে তারা পালিয়ে যায়। আইনজীবী ফোরকান আহমেদ বলেন, যেহেতু ধর্ষণের ঘটনা বাকলিয়া এলাকায়, সেহেতু বাকলিয়া থানায় ধর্ষণ মামলাটি দায়ের করা হবে। এ ব্যাপারে বাকলিয়া থানার ওসি প্রণব চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ধরনের কোন অভিযোগ তিনি তখনও পাননি। অভিযোগ পাওয়ার পর আসামিদের গ্রেফতারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।
ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে খুন ২ আসামি রিমান্ডে
ফটিকছড়িতে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ‘ধর্ষণ চেষ্টায়’ ব্যর্থ হয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার দুই আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ড দেয়া হয়েছে। গতকাল শুনানি শেষে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয় বলে জানান ভ‚জপুর থানার ওসি শেখ মো. আবদুল্লাহ। তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, দুই আসামি সানি ও জয়কে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। ওই দুই আসামির কাছ থেকে রক্তমাখা ছোরাসহ বেশকিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, রিমান্ডে এনে তাদের আরও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ওই গৃহবধূর গলা কেটে হত্যা করে ওই দুই আসামি। তাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল কিনা অথবা এ দুজনের সাথে আরও কেউ ছিল কিনা তাও জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত করা হবে। এরপর মামলার অভিযোগপত্র দেয়া যাবে বলে জানান তিনি। শনিবার রাতে উপজেলার হারুয়ালছড়ির মহানগর গ্রামে এ খুনের ঘটনা ঘটে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।