পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুন্দরবনে শুরু হয়েছে মধু আহরণ মৌসুম। সুন্দরবনের মধু আহরণের সময় এপ্রিল থেকে তিন মাস। মধু আহরণ মৌসুমের শুরুতেই বনে ছুঁটতে শুরু করেছেন মৌয়ালরা। বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌয়ালরা সুন্দরবন বনবিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে বনে প্রবেশ করেছে। মৌয়ালদের মধু সংগ্রহে সুন্দরবন মুখরিত হয়ে উঠেছে। গত পনের দিনে প্রায় ৩০০ কুইন্টাল অর্থাৎ ৩০ হাজার কেজি (৩০ টন) মধু সংগ্রহ হয়েছে বলে জানায় বন বিভাগ। তবে আগের তুলনায় বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে মধুর পরিমাণ কমে গেছে বলে মৌয়ালরা জানিয়েছেন।
বিভিন্ন মৌসুমের মধ্যে সুন্দরবনের গুরুত্বপূর্ণ মৌসুম মধু আহরণ মৌসুম। সুন্দরবনে আনুষ্ঠানিকভাবে মধু আহরণ শুরু হয়েছে। সুন্দরবনের মধু ও মোম দেশের একটি অন্যতম অর্থকরী সম্পদ। বিভিন্ন প্রকার ওষুধ তৈরি ও ঔষধি খাবার হিসেবে মধুর জুড়ি মেলা ভার।
বিশ্ববিখ্যাত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে প্রাকৃতিভাবে সৃষ্টিকর্তা যে মধুর চাক দিয়েছেন তার গুনাগুন অনস্বীকার্য। তবে অনেক ক্ষেত্রে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহকারী মৌয়লরা সরকারি নিয়ম-নীতির কোনো তোয়াক্কা করছে না। মৌয়লরা মধু সংগ্রহের নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করার কারণে মধু উৎপাদন হ্রাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির মৌমাছির বংশ ধ্বংস হচ্ছে।
সুন্দরবনে প্রতি বছর ১ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত মৌয়ালদের মধু ও মোম সংগ্রহের অনুমতি দেয়া হয়। মৌসুমের শুরুতেই মৌয়ালরা অনুমতি নিয়ে শত শত নৌকাযোগে দলবেঁধে মধু সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সুন্দরবনে অবস্থান করছে। মৌয়ালরা যাতে নিয়মনীতি মেনে মধু ও মোম সংগ্রহ করে সে লক্ষ্যে সম্প্রতি সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের উদ্যোগে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়।
সুন্দরবন বিভাগ জানায়, এ বছর মধু আহরণ খাত থেকে গত বছরের চেয়ে প্রায় দেড় গুণ রাজস্ব আয় হবে বলে আশা করছেন। সুন্দরবন বিভাগ প্রতি কুইন্টাল আহরিত মধু থেকে ৭৫০ টাকা এবং প্রতি কুইন্টাল মোম থেকে এক হাজার টাকা রাজস্ব নির্ধারণ করেছে। ১৫ দিনের মধ্যে জনপ্রতি ৫০ কেজির মধু আহরণ করা যায় বলে জানান মৌয়ালরা। ইতোমধ্যে ৫ শতাধিক মৌয়াল সুন্দরবন বিভাগ থেকে অনুমতিপত্র (পাস) নিয়ে বনে ঢুকেছে বলে জানায় বন বিভাগ।
মধু আহরণকারীরা জানান, বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বনে এখন আর আগের মতো মধু পাওয়া যায়না। এখন সুন্দরবনে গরান ও খলসী ফুলের মৌসুম। মধু আহরণ মৌসুমের শেষের দিকে আসবে কেওড়া গাছে ফুল। সুন্দরবনে গরান ও খলসী এই দুই জাতের গাছের সংখ্যা ধীরে-ধীরে কমে যাচ্ছে। যার ফলে মধুর উৎপাদনও কম হচ্ছে। তাদের মধু আহরণর করতে বনের গহীনে ঝোঁপ-ঝাড়ে প্রবেশ করতে হয়। এতে জীবনের ঝুঁকি থাকে অনেক। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, কিং কোবারাসহ বিভিন্ন প্রজাতির বিষধর সাপ, কুমির ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণির কাছে নিজের জীবন বাজি রেখে তাদের মধু আহরণ করতে হয়।
ডিএফও বশিরুল আল মামুন জানান, চলতি বছর সাতক্ষীরা রেঞ্জে ১ হাজার ৫০ কুইন্টাল মধু এবং ২৬৫ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কুইন্টাল মধুর জন্য ৭৫০ টাকা এবং প্রতি কুইন্টাল মোমের জন্য ১ হাজার ৫০০ টাকা রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩শ’ কুইন্টাল মধু সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সুন্দরবনে বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য ঘোষিত কম্পাটমেন্ট ৪৯, ৫১(এ), ৫১(বি), ৫২, ৫৩, ৫৪ ও ৫৫নং এলাকায় মৌয়ালরা মধু আহরণ করতে পারবেন না। একবার পাশ (অনুমতিপত্র) নিয়ে মৌয়ালরা সুন্দরবনে ১৪ দিন অবস্থান করে মাথাপিছু ৫০ কেজি মধু এবং ১৫ কেজি অপরিশোধিত মোম আহরণ করতে পারবেন।
তাছাড়া সুন্দরবনে অবস্থান করা কালীন মৌয়ালরা কোন অগ্নিকুন্ড বা অনুরূপ কোনো দাহ্য পদার্থ বা রাসায়নিক দ্রবাদি ব্যবহার করতে পারবেন না, যার দ্বারা সুন্দরবনে আগুন লাগাসহ মৌমাছিদের আহত বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বন্য প্রাণীর হাত হতে রক্ষার জন্য মৌয়ালদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আগামী ১৫ই জুন পর্যন্ত আড়াই মাসব্যাপী সুন্দরবনে মধু আহরণ মৌসুম নির্বিঘেœ সম্পন্ন করতে মৌয়ালদের যাবতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। অনুকুল আবহাওয়ায় এ বছর মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
অপরদিকে, পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে কাঁকড়া ধরার অনুমতি (পাস) নিয়ে অবৈধভাবে মধু সংগ্রহের সময় নয় জন জেলেকে আটক করেছেন বুড়িগোয়ালিনী বন স্টেশন অফিসের সদস্যরা। গহীন সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া জলঘাটা অভয়ারণ্য খাল এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় জেলেদের কাছ থেকে ২৪ হাজার টাকা মূল্যের ৪০ কেজি মধু, ৫ হাজার টাকা মূল্যের ১০ কেজি মোমসহ চারটি নৌকা জব্দ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।