Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টাকার লোভ দেখিয়ে কবরস্থানের পাশে শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা

মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে গণধর্ষণ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

সারাদেশে চলা আন্দোলন প্রতিবাদের মধ্যেও কমছে না ধর্ষণ, যৌন হয়রানীর মত ঘটনা। কুলাউড়ায় এক যুবতীকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে গণধর্ষণ করেছে ৭ দুষ্কৃতিকারী । ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও রেকর্ড করে পুনরায় ডাকে না আসলে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয় দুষ্কৃতিকারীরা। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করেছে পুলিশ। অন্যদিকে সিলেটের ওসমানীনগরে দুঃসম্পর্কের দুলাভাই কর্তৃক কিশোরী শালিকা ধর্ষিত হয়ছে। পুলিশ ধর্ষককে আটক করে মামলা দায়ের করেছে। এছাড়া কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ৪র্থ শ্রেণির এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এ ঘটনায় হাতেনাতে আটক করা হয়েছে ধর্ষককে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন:
কুলাউড়া উপজেলা সংবাদাতা জানায়, উপজেলায় এক যুবতীকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে সোমবার রাতে গণধর্ষণ করেছে ৭ দুষ্কৃতিকারী। ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও রেকর্ড করে। এরপর আবার ফোনে ডাকলে সাড়া না দিলে ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে দুষ্কৃতিকারীরা।
কুলাউড়া হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে গণধর্ষণের শিকার যুবতীর দেয়া জবানবন্দী থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। নির্যাতিতা যুবতীকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের সহায়তায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের নির্যাতিতা যুবতী (১৭) এর দেয়া বক্তব্য থেকে জানা যায়, গত সোমবার সন্ধ্যায় আনুমানিক ৭টায় উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের গৌরী শঙ্কর গ্রামের আব্দুল্লাহর ছেলে শুকুর আলী মোবাইলে ফোনে কুলাউড়া পৌরসভার সামনে আসতে বলে। সরল বিশ্বাসে মেয়েটি পৌরসভার সামনে আসলে জোরপূর্বক সিএনজি অটোরিক্সায় তোলে। এসময় সিএনজিঅটোরিক্সাতে থাকা অপর লোকজন তাকে মুখে রুমাল দিয়ে বেধেঁ নির্জন পাহাড়ী এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে একে একে ৭জন মিলে মেয়েটিকে গণধর্ষণ করে। রাত আনুমানিক ১১ টায় মেয়েটিকে ফেরত নিয়ে এসে কুলাউড়া রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ফেলে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় নিজ বাসায় ফিরে যায়। মেয়েটির পরিবার রাত ১২টায় কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। সকালে কুলাউড়া হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নির্যাতিতা মেয়েটি ধর্ষণের বর্ণনা দেয়।
নির্যাতিতা মেয়েটি তার বক্তব্যে জানায়, ধর্ষণকালে দুষ্কৃতিকারীরা মোবাইল ফোনে দৃশ্য ধারণ করে রাখে এবং বিষয়টি কাউকে না বলার হুমকি দেয়। এরপর থেকে দুষ্কৃতিকারীদের ডাকে সাড়া না দিলে ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ারও হুমকি দেয়। নির্যাতিতা মেয়েটি কেবল শুকুর আলী চিনতে পেরেছে। শুকুর আলী ও সিএনজি অটোচালক ধর্ষণের সাথে জড়িত।
ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের প্রোগ্রাম অফিসার আমান উল্ল্যাহ জানান, ঘটনা জানার পর আমি বিষয়টি কুলাউড়া থানা পুলিশকে অবহিত করি এবং নির্যাতিতার বক্তব্য গ্রহণ করি। মেয়েটি দরিদ্র পরিবারের। যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি মেয়েটিকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান জানান, মঙ্গলবার দুপুর থেকে কুলাউড়া থানা পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের আটকে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সন্দেহজনক একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে দ্রæত ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে বলে জানান।
বালাগঞ্জ (সিলেট) উপজেলা সংবাদদাতা জানায়: দুঃসম্পর্কীয় জাকির মিয়া (২৮) নামে এক লম্পট দুলাভাই কর্তৃক কিশোরী শালিকা ধর্ষিত হয়েছে। গত সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার সাদিপুর ইউপির লামা গাভুরটিকি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার বিকেলেই ওসমানীনগর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষণ কারী লম্পট দুলাভাই জাকির মিয়াকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় পাশবিক নির্যাতনের স্বীকার কিশোরীর মা বাদি হয়ে সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জাকিরকে একমাত্র আসামী করে নারীও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ওসমানীনগর থানায় একটি দায়ের করেছেন। সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজহাস পাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ওসিসিতে প্রেরণ করে। জাকিরকে গতকাল মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ ও নির্যাতিতা কিশোকরীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, পিতৃহীন গরীর পরিবারের কিশোরী মা সোমবার সকালে গ্রামের অন্য লোকের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতে যান কিশোরীকে বাড়িতে একা রেখে। দুপুর দেড়টার দিকে একই গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে জাকির মিয়া(২৮) কিশোরীর দুঃসর্ম্পকের দুলা ভাই তাদের বাড়িতে আসে। ঘরে আর কেউ না থাকার সুযোগে এই কিশোরীকে জোরপূর্বক লম্পট জাকির মিয়া ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর পর কিশোরীর মা বাড়িতে আসলে ধর্ষণের বিষয়টি সে তার মাকে জানায়। পরে ধর্ষণে খবরটি ওসমানীনগর থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কিশোরীর ধর্ষণের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে পুলিশ ধর্ষক জাকিরকে গ্রেফতার করে।
কিশোরীর মা কন্না জড়িত কন্ঠে জানান, আমার মেয়ের এই সর্বনাশ করেছে লম্পট জাকির। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ওসমানীনগর থানার ওসি এসএম আল মামুন বলেন, ধর্ষণের সাথে জড়িত জাকিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নির্যাতিতাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
বুড়িচং (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা: ৪র্থ শ্রেণি পড়ুয়া শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে হাতেনাতে ধর্ষক আটক হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ধর্ষিত শিশুর (৯)’র পিতা বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।
পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা যায়- বুড়িচং উপজেলার ইন্দ্রবতী গ্রামের আ: রহিমের মেয়ে নানুয়ার বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণীতে পড়–য়া মেয়ে গত ১৫ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১২ টায় কদমতলী কালি বাড়ি বৈশাখী মেলা থেকে বাড়ি ফেরার জন্য ইন্দ্রবতি গ্রামস্থ জনৈক হাশেম মাস্টারের কবরস্থানের পৌঁছে। তখন পাশর্^বর্তী মহিষমারা গ্রামের মো. হামদু মিয়ার ছেলে লম্পট মো. শাহআলম (৪২) তার অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার লক্ষ্যে তার জামার পকেট থেকে ৫শ’ টাকার একটি নোট বের করে কথিত মেয়েটিকে কবরস্থানের পাশে গাছের বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে মেয়েটি চিৎকার দিলে স্থানীয় কতিপয় এজাহার নামীয় জনতা একতাবদ্ধ হয়ে তাকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। গতকাল তাকে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে, বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারুল হক জানান- আসামী ধরা পড়েছে। এ ধরণের নরপশুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ