পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল বৃহত্তর কুমিল্লা ও ফেনীর লোকদের সরকারি চিকিৎসাসেবার বাতিঘর। কিন্তু এই বাতিঘরই দিতে পারছে না আলোকিত চিকিৎসাসেবা। সঙ্কট-সমস্যা ঘিরে শুধু নেই আর নেই। অনিয়মের বেড়াজালে পদোন্নতি-বদলী বাণিজ্য জেঁকে বসেছে কুমেক হাসপাতালে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়োগবিধির নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। হাসপাতাল পরিচালক নিজ ক্ষমতাবলে দিচ্ছেন পদোন্নতি!
কুমিল্লা মহানগরীর কুচাইতলীতে ৫০০ শয্যার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের ৩০টি ওয়ার্ডে গড়ে এক হাজার রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। হাসপাতালের বর্হিবিভাগেও খোলারদিন দশ টাকা টিকেটের বিনিময়ে হাজারো রোগী চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ও পরামর্শ নেন। অথচ সরকারি এ সেবা প্রতিষ্ঠানটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। জনবল থেকে শুরু করে চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং ভর্তি হওয়া রোগী ও চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণের সমস্যা লেগেই রয়েছে।
কুমেক হাসপাতালের পুরান ও নতুন ভবনের চারটি লিফটের দুইটি বন্ধ। চালু দুইটিও কখনো কখনো থমকে যায়। অ্যাম্বুলেন্স চারটির মধ্যে জোড়াতালি দিয়ে চলছে দুইটি। লোকমুখে এটি আধুনিক হাসপাতাল বলা হলেও নেই আইসিইউ এবং সিসিইউ। তার সাথে পরীক্ষা-নিরীক্ষার বেশির ভাগ সরঞ্জাম অকেজো। বিশাল এ হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন এক সপ্তাহ ধরে বিকল। একই অবস্থা সিটিস্ক্যান মেশিনেরও। আবার সরঞ্জাম সঙ্কটে ঝুঁঁকিতে রয়েছে নবজাতকরা। নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের সবকটি ইনকিউবেটর নষ্ট।
এছাড়াও হাসপাতালের বর্জ্য বিনষ্ট ও শোধন করার জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ইনসাইনেরেটর (চুল্লি) কোন কাজে আসছে না। লাশ সংরক্ষণের জন্য মচিওয়ারিটি দীর্ঘদিনেও চালু হয়নি। হাসপাতালের শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী। নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। কোনটিতে নষ্ট পানির কল। কল আছে পানি নেই প্রায়ই এমন অবস্থা হয়। টয়লেটের কোনটির দরজা ভেতর থেকে আটকানোর ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালের হেল্পড্রেক্স থাকলেও এটি রোগী বা দর্শনার্থীর ক্ষেত্রে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। রোগীর ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের টানাহেঁচড়া ছাড়াও প্রতিনিয়ত রোগীর স্বজনরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর ওষুধ কেনা নিয়ে দালালদের কবলে পড়ছেন। হাসপাতালের খাবারের মান নিয়েও রয়েছে রোগী ও অভিবাবকদের বিস্তর অভিযোগ।
যথাযথ চিকিৎসাসেবা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল থেকে শুরু করে চিকিৎসা সরঞ্জামসহ অনেক কিছুই নেই কুমেক হাসপাতালে। আর এ নেইয়ের ভেতরেও চলছে পদোন্নতি বাণিজ্য। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়োগ বিধি উপেক্ষা করেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি ও পদোন্নতি বাণিজ্য চলছে প্রায় তিন বছর ধরে।
অভিযোগ রয়েছে ২০১৫ সালে হাসপাতালের তৎকালীন পরিচালক ডা. হাবিব আবদুল্লাহ সোহেল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি উপেক্ষা করে হাসপাতালের ক্যাশিয়ার দেলোয়ার হোসেনকে প্রধান সহকারি পদে পদোন্নতি দেন। ক্যাশিয়ার দেলোয়ারের পদটি সম্পূর্ণ বøকপোষ্ট। নিয়োগবিধি অনুযায়ি ক্যাশিয়ার থেকে প্রধান সহকারি পদে পদোন্নতির কোন সুযোগ নেই। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি দেলোয়ার ক্যাশিয়ার থাকাকালীন সময় থেকেই হাসপাতালের ডক্টরস কোয়ার্টার ব্যবহার ও বসবাস করে আসছেন। নিয়োগবিধি ভঙ্গ করে একই কৌশলে ২০১৭ সালের শেষ দিকে অফিস সহকারি কাম মুদ্রাক্ষরিক পদের মোতালেবকে হিসাব রক্ষকের চলতি দায়িত্ব দেন হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ডা. স্বপন কুমার অধিকারী। হাসপাতালের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পদোন্নতি, বদলি, কোয়ার্টারে বসবাস ঘিরে বড় ধরণের বাণিজ্য হয়ে থাকে।
এসব বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. স্বপন কুমার অধিকারী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ‘যন্ত্রপাতি ও জনবলের বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। পদোন্নতি বা এক পদ থেকে আরেক পদে কাউকে নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা পরিচালকের রয়েছে। সেই ক্ষমতা বলেই মোতালেবকে উপরের পদে দায়িত্ব দিয়েছি। আর দেলোয়ারও ওইসময়ে একইভাবে দায়িত্ব পেয়েছে’।
পরিচালকের ক্ষমতার বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়োগবিধির কোন নির্দেশনায় উল্লেখ রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. স্বপন কুমার অধিকারী বলেন, ‘এসব বিষয়ে ফোনে নয়, সরাসরি কথা বললো, অফিসে আসেন’।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।