পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকার সবচেয়ে ব্যস্ত সড়কগুলোর একটি বিমানবন্দর-গাজীপুর। যাতায়াত সহজ করতে এ সড়কে বাসের জন্য পৃথক লেন (বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি) তৈরি করছে সরকার। ছয় বছরের বেশি সময় ধরে ঝুলে আছে এ প্রকল্পের কাজ। পরামর্শক নিয়োগ, নকশা প্রণয়ন, দরপত্র আহ্বান থেকে ভৌত কাজ ধীরগতি সবখানেই। এতে পিছিয়ে যাচ্ছে বিআরটি। বেশ কিছুদিন ধরে বিআরটির কাজের জন্য গাজীপুরের টঙ্গী অংশে চলছে খোঁড়াখুড়ির কাজ। মহাসড়কের বড় অংশ বন্ধ করে এই খোঁড়াখুড়ির কারণে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজটের। গত কয়েকদিন ধরে এর সাথে যুক্ত হয়েছে বৃষ্টি। এতে করে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তি বেড়েছে কয়েক গুণ। গতকাল মঙ্গলবার সামান্য বৃষ্টিতেই বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত যানজটের ভোগান্তি অতীতের সীমাকে ছাড়িয়ে গেছে। দুপুরের পর সৃষ্ট যানজন মধ্যরাত পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।
জানতে চাইলে গাজীপুর জেলা ট্রাফিক পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, বিআরটি’র জন্য রাস্তায় গর্ত করা হয়েছে। সেই গর্তে পানি জমে রাস্তার সাথে একাকার হওয়ায় বোঝাই যাচ্ছিল না কোনটা রাস্তা আর কোথায় গর্ত। এ জন্য যানবাহন চলতে পারছিল না। তাতেই যানজটের সৃষ্টি হয়ে এক পর্যায়ে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২ হাজার ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দর-গাজীপুর সড়কে নির্মাণ করা হচ্ছে বাসের জন্য বিশেষায়িত লেন। এই লেন দিয়ে চলবে শতাধিক আর্টিকুলেটেড বাস। বলা হচ্ছে, গাজীপুর থেকে বিমানবন্দরে আসতে একটি বাসের সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট। বাসগুলো পরিচালিত হবে একটি সরকারি কোম্পানির অধীনে। এজন্য ঢাকা ব্যাস র্যাপিড ট্রানজিট নামের একটি কোম্পানিও গঠন করেছে সরকার। প্রণয়ন করা হয়েছে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) আইন ২০১৬। আইন অনুযায়ী, শুধু কোম্পানির বাসগুলোই বিশেষায়িত লেনটি দিয়ে চলতে পারবে। কোনো ব্যক্তিগত যানবাহন বিআরটি লেনে প্রবেশ করলে গুনতে হবে মোটা অংকের জরিমানা।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যাত্রী সেবার মান উন্নয়ন ও যানজট নিরসনের জন্যই এ প্রকল্প। কিন্তু প্রকল্পের কাজের ধীরগতি, মহাসড়কে খোঁড়াখুড়ি, পাশেই মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ চলমান থাকা, অবৈধভাবে মহাসড়ক দখল ও বেহাল দশায় সড়কটিতে বাড়ছে যানজট। জনভোগান্তি এখানে চরমে। আধ ঘণ্টার রাস্তা অতিক্রম করতে সময় লাগছে তিন-চার ঘণ্টা। বৃষ্টি সেই ভোগান্তি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিআরটি প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয় চার বছর। এই প্রকল্পের আওতায় ২০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে উত্তরা থেকে টঙ্গীর চেরাগআলী পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার এলিভেটেড বিআরটি লেন। পাঁচ মিনিট পরপর স্টেশন থেকে বাস ছাড়বে। স্টেশনের সংখ্যা হবে ২৫টি।
বিআরটি প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন হয় ২০১২ সালের ২০ নভেম্বর। এরপর বিমানবন্দর-গাজীপুর সড়কে বাসের জন্য বিশেষায়িত লেনের নকশা ও দরপত্র আহ্বানেই পেরিয়ে যায় পাঁচ বছর। ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বিআরটি লেন নির্মাণ ও উন্নয়নকাজ। শুরু থেকেই ধীরগতি, তার ওপর দফায় দফায় নানা কারণে কাজ বন্ধ থাকায় পিছিয়ে পড়েছে প্রকল্পটি। গত ছয় বছরে প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ২০ শতাংশ। শুরুতে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। তবে ধীরগতির কারণে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নেয়া হয়। এখন প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২০ সালের মাঝামাঝিতে কাজ শেষ হবে।
বিআরটি গাজীপুর-বিমানবন্দর প্রকল্পে অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রতি ছয় মাস পর ‘সোস্যাল মনিটরিং রিপোর্ট’ প্রকাশ করে আসছে। সর্বশেষ গত বছরের নভেম্বরে প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এতে দেখা গেছে, জুন ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ছিল মাত্র ২ দশমিক ৪ শতাংশ। তখন পর্যন্ত সড়কের পিচ প্রশস্তকরণ ও উন্নয়নের কাজ শুরুই হয়নি। তবে বর্ষাকে সামনে রেখে সড়ক উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। তাতে দিন দিন ভোগান্তি বাড়ছেই।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত ড্রেন ও কালভার্ট উন্নয়নের কাজ হয়েছিল ১ দশমিক ৪ শতাংশ। বর্তমানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নের কাজ গতি পেলেও এখনো সিংহভাগ কাজ বাকি। প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি এলিভেটেড ওয়ে ও একটি ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণ করা হবে। এর কোনোটিরই কাজ শতাংশের হিসাবে দুই অংকে পোঁছতে পারেনি।
প্রকল্পটির জন্য নির্ধারিত সময় চার বছরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয়নি। দুই বছর সময় বাড়িয়ে আগামী ডিসেম্বরে শেষ করার কথা থাকলেও ছয় বছরে অগ্রগতি হয়েছে প্রকল্পটির যৎ সামান্য। এতে নির্মাণ ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত। সড়ক প্রশস্তকরণ, সার্ভিস সড়ক ও গাজীপুরে তিন কিলোমিটার ড্রেনেজ নির্মাণসহ এর মধ্যে এ প্রকল্পটির মাত্র ২৩ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
প্রকল্পের কাজে ধীরগতি ও মহাসড়কের পাশে যন্ত্রপাতি রাখাসহ বেহাল মহাসড়কের কারণে চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া বাইপাস, বোর্ডবাজার, টঙ্গী, গাজীপুরাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট বেড়েছে। গতকাল সেই যানজট টঙ্গী-উত্তরা পেরিয়ে বিমানবন্দর হয়ে খিলক্ষেত গিয়ে ঠেকেছিল। এতে হাজার হাজার যাত্রীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।